ব্যক্তিত্ব

ব্যক্তিত্বের পূর্ব কথা:-
আমরা জানি মানুষ বলতে মানবতা নয়; কিন্তু মানবতা বলতেই মানুষ। মনবীয় গুণে গুণান্বিত ব্যক্তিই মানবতার ধারক ও বাহক। ব্যক্তি বলতে ব্যক্তিত্ব নয়; কিন্তু ব্যক্তিত্ব বলতেই ব্যক্তি। আর তাই ব্যক্তি বলতে কোনো সাধারণ একজন মানুষকে বুঝায়।
এানুষ যেখানে ব্যক্তিত্ব ও মানবতা সেখানে। কিন্তু মানুষ যেখানে নেই; ব্যক্তিত্ব ও মানবতা সেখানে নেই। মানব জীবনের সবকটি গুণাবলীর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হল ব্যক্তিত্ব ও মানবতা। আর ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘাটানোর জন্য ব্যক্তি স্বধীনতা প্রয়োজন। কারণ সুপ্ত মেধা, সুপ্ত ক্ষমতা, সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটানোর নামই ব্যক্তিত্ব বিকাশ।
জীবন ধারণের পক্ষে যেমন খদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান ইত্যাদি অপরিহার্য তেমনি জীবন যাপনের জন্যও ব্যক্তিত্ব অপরিহার্য। ব্যক্তিত্ব বলতে আমরা সাধারণত বুঝি আমাদের নিজস্ব সত্তার যে সমস্ত গুণ আছে সেগুলোকে সুষ্ঠ বিকাশের সঠিক পথে চালানো। অর্থাৎ এক কথায় নিজস্ব গুণাবলীর প্রকৃত প্রতিফলন ঘটানো। মানব জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপেই এর প্রয়োজন রয়েছে। আবার ব্যক্তিত্ব বলতে কিন্তু উচু কণ্ঠস্বর, ভাবভঙ্গি, দৃষ্টি, চেহারা ও অস্বাভাবিক উচ্চতাকে/শরীরকে বুঝায়না।

ব্যক্তিত্ব যা

ব্যক্তিত্ব হল এমনই কোনো সীলমোহর যার ছাপ আমরা মানুষের উপর রেখে যাই। ব্যক্তিত্ব হল কার্যকরী সম্পদ।-হারর্বার্ড ক্যাশন
ব্যক্তি জীবনের ব্যক্তিত্বের সীমারেখা নির্ধারিত হয় কথাবার্তায়, আচার-আচরণে, চালচলনে, ধ্যান-ধারণায় ও মন-মানসিকতায়।
সাফল্যের চাবীকাঠি
চৌম্বক শক্তি
অগ্রণী শক্তি বা এগিয়ে নেয়ার শক্তি
মানুষের চালনা শক্তি
একটি আদর্শ, একটি দর্শন
চারিত্রিক গুণাবলী

ব্যক্তিত্ব হীনতা যা ঘটায়

ব্যক্তিত্বহীনদের আত্ম-নিয়ন্ত্রণ থাকেনা
আত্ম-নির্ভরশীল হতে পারেনা/পরনির্ভরশীল হয়ে পরে
আত্ম-জ্ঞান, আত্ম-শিক্ষা, আত্ম-উপলব্দি থাকেনা
আত্ম-বিশ্লেষণ, আত্ম-সমালোচনা, আত্ম-জিজ্ঞাসা ও আত্ম-শুদ্ধি করতে পারেনা
আত্ম-ত্যাগের মন-মানসিকতা হারিয়ে ফেলে
আত্ম-সম্মান করেনা
মানবতা লোপ পায়
ইচ্ছা, স্বপ্ন, লক্ষ্য হারায়
ভয় পায়
হীনমন্যতায় ভোগে
কর্মদক্ষতা হারায়
গর্বোপরি ব্যর্থ হয়

ব্যক্তিত্ব অর্জনের ফলে যা হয়

সমস্ত বাধা, ভয়, হীনমন্যতা, দুশ্চিন্তা, সন্দেহ, ঘৃণা, ঈর্ষা, হতাশা, ক্ষতি, ব্যর্থতা, কদর্যতা, তিক্ততা, কষ্ট, অশান্তি ইত্যাদি দূর/জয় করা যায়
প্রয়োজনের সময় কর্তৃত্বের অবস্থা দান করবে। ব্যক্তিত্বের শক্তি আপনার ধারণার বাইরে আপনাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
গ্রহণযোগ্যতা লাভ করা যায়
প্রতিষ্ঠিত হওয়া যায়
প্রভাব বিস্তার করা যায়
নেতৃত্ব দেয়া যায়
জনপ্রিয় হওয়া যায়/ খ্যতি লাভ হয়
সাফল্য পাওয়া যায়
শ্রদ্ধা পাওয়া যায়
ক্ষমতা দখল করা যায়
বন্ধু লাভে সহায়ক হয়
বেচে থাকার আনন্দ পাওয়া যায়
নিজেকে জানা/ আবিষ্কার করা যায়
অন্ধভাবে ভুল করার হাত থেকে রক্ষা করবে

ব্যক্তিত্ব

আভিধানিক অর্থ-ব্যক্তি বিশেষের বৈশিষ্ট, স্বপ্রধান্য, আত্মকেন্দ্রিকতা, ব্যক্তিগত অবস্থা, বিশেষভাবে খ্যাতিমান, কোনো ব্যক্তির শারীরিক বৈশিষ্ট, স্পষ্টতা, পার্থক্য ইত্যাদি। personality, individualism, distinctness
ব্যক্তিত্ব গঠন
প্রখর বাস্তব বুদ্ধি, চতুরতা ও সহিষ্ণুতা থাকলে পুঁথিগত শিক্ষা না থাকা সত্তেও ব্যক্তিত্ব পূরণে বাধা হবে না। কারণ ব্যক্তিত্ব ধীরে ধীরে গড়ে উঠে। তার জন্য অনেক পরিশ্রম করতে হয়।
আমাদেও সহজাত ক্ষমতাকে নমনীয় করে তুলতে হবে। নমনীয় করতে হবে তার ইচ্ছা, বাসনা, আবেগ আর কল্পনাকেও। আর এই পথধরেই ব্যক্তিত্বকে গঠন করতে হয়।

এছাড়া যা করতে হবেঃ-
তর্ক করা যাবে না (যুক্তিপূর্ণ তর্ক হতে হবে)
কথার সাথে কাজের মিল রাখা
করুনার পাত্র হওয়া যাবেনা
শুদ্ধ ভাষায় কথা বলতে হবে
নিরপেক্ষভাবে কথা বলা
একান্ত গোপন বিষয় কাউকেই বলা যাবেনা
নিজের ব্যক্তিগত বিষয়ে কাউকে নাক গলাতে দেয়া যাবেনা
অনধিকারচর্চা করা যাবে না
অন্যের মতকে শ্রদ্ধা করতে হবে
জীবনের ভারসাম্য রক্ষা করা
স্মার্ট হতে হবে-(স্মার্ট বলতে আমরা যা বুঝি)
-পরিচ্ছন্ন
-দক্ষ
-চটপটে
-বুদ্ধিমান
-উপস্থিত বুদ্ধিও অধিকারী
দায়িত্ব ও কর্তব্য ঠিক মত পালন করা
-মাতাপিতার প্রতি
-দেশের প্রতি

ব্যক্তিত্বের অনুভুতি/ যাদু :-

কার সাথে কথা বলছেন তিনি ভাবতে চাননা, তার কথা শুনে যান
তার চমৎকার ধৈর্য্য আছে
মানুষের সাথে মেলমেশা করতে তার কোনোরকম অসুবিধা হয়না
যেখানেই যান সেখানেই তিনি বেশ মানিয়ে চলতে পারেন
তিনি কখনই স্বার্থপর মানুষ নন
যে লোকই তার সংস্পর্শে আসে তাকেই বলতে শোনা যায় “কেমন চমৎকার মানুষ, আহা ওর মতো যদি হতে পারতাম”। এর ভিতরে অনেক কিছু আছে, জিনিয়াস ইত্যাদি ইত্যাদি।
মনোরঞ্জন করার ওই যাদু যদি আমার থাকত।

ডেল কার্নেগীর ব্যক্তিত্বের পরীক্ষা:-

একজন মানুষের সঠিক ব্যক্তিত্ব প্রকাশের চাবিকাঠি চারটি। এই চারটি বিষয় নির্ভর করেই গড়ে ওঠে যেকোনো মানুষের ব্যক্তিত্ব। যথাঃ-
১.আমরা কি করি?
২.আমাদের বাহ্যিক আকৃতি কী?
৩.আমরা কীভাবে কী কথা বলি?
৪.আমাদের সেই বলার পদ্ধতি কী রকম?

ব্যক্তিত্বের বিকাশ:-

মানুষের জ্ঞান, বিশ্বাস, আচার-আচরণ, রুচী, অভ্যাস ইত্যাদি মিলিয়ে তার ব্যক্তিত্ব। যাদেও মধ্যে মানবিক গুণের চেয়ে পাশবিক গুণ বেশি অর্থাৎ যারা চরিত্রহীন তাদেরকে ব্যক্তিত্বহীন বলা যায়। এ্যাড লারের মতে- ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব পরিবেশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। ব্যক্তির প্রধান উপাদান হচ্ছে তার চরিত্র। কুপরিশেকে জয় করে যদি চরিত্রকে অক্ষত রাখা যায়, সেখানে ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব সুন্দর হয়ে ফুটে উঠে।
চরিত্র বলতে বুঝায় মানবীয় ও নৈতিক গুণাবলী সমৃদ্ধ আচার ব্যবহার চাল-চলন। ব্যক্তির মূল উৎস হচ্ছে মানসিকতা। বুদ্ধি ও আবেক দ্বারাই মানসিকতা গড়ে উঠে। মানসিকতা আবার নিয়ন্ত্রিত হয় জ্ঞান দ্বারা। জ্ঞান হচ্ছে ব্যক্তিত্বের ১ম/ মূল উপাদান। যার মধ্যে জ্ঞান আছে তার মধ্যে ব্যক্তিত্ব অবশ্যই থাকবে। একারণে ব্যক্তিত্বকে সুন্দর করতে হলে জ্ঞানের সাধনা করা প্রয়োজন। ব্যক্তিত্বের ২য় অনুভূতি। যাদের অনুভূতি কম তারা সাধারণত ব্যক্তিত্বহীন হতে পারে। জ্ঞানীরা অনুভূতি সম্পন্ন বলেই মান সম্মানবোধ তাদের প্রখর। ব্যক্তিত্বকে ছোট করতে পারে এমন কাজ থেকে তারা সদা-সর্বদা বিরত থাকে।

আমরা এখন ব্যক্তিত্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সম্পর্কে জানব। যেমন:- জ্ঞান, পেশাদারিত্ব,

জ্ঞান:-

১.জ্ঞান হচ্ছে অনুধাবনের ফল বা তথ্য ( তথ্যঃ- উপাত্ত (ডাটা) প্রক্রিয়াকরণের পর নির্দিষ্ট চাহিদার প্রেক্ষিতে যে সুশৃঙ্খল ফলাফল পাওয়া যায় তাকে তথ্য বলে)
২.জ্ঞান হচ্ছে নিয়মতান্ত্রিক ও বস্তুভিত্তিক বিশ্লেষণপদ্ধতি
৩.জ্ঞান হচ্ছে যুক্তিভিত্তিকভাবে আহরিত তথ্য ও তার ভিত্তিতে যুক্তিভিত্তিক সিদ্ধান্তগ্রহণের পদ্ধতি।

জ্ঞান অর্জন করার পদ্ধতিঃ

দোয়া ও প্রার্থনা করে
অনুভব ও অনুমানের মাধ্যমে জ্ঞানার্জন করা যায়
চিন্তাশক্তি প্রয়োগ করে
অভিজ্ঞতা থেকে
অতিত থেকে
জ্ঞানীদের সাথে মিশে
মূর্ত জগতকে দেখে
মূর্ত এবং বিমূর্ত জগত সম্পর্কে চিন্তা গবেষণা করে
শুনে ও ভ্রমণ করে
বই পড়ে
জীবনী (হাসান আল-বান্না, ইমাম শামায়েল, আনোয়ার পাশা, ওসামা বিন লাদেন, হিটলার)
ধর্মীয় (কুরআনা, হাদীস, বাইবেল, মহাভারত)
বিখ্যাত লেখকদের লেখা (ডঃ ইউসূফ আল কার্যাভি, সাইয়েদ কুতুব, ডাঃ জাকির নায়েক)
সাধারণ জ্ঞান সম্পর্কিত বই
বিজ্ঞান ও শিক্ষামূলক সিরিজ (সাইমুম, ক্রুসেড, রিসালায়ে নূর)
টিভি দেখে (ডিসকভারি, পিস টিভি, দিগন্ত টিভি)
রেডিও শুনে (টুডে, ফুর্তি)
পত্রিকা পড়ে
-দৈনিক (আমার দেশ, নয়াদিগন্ত, ইত্তেফাক)
-সাপ্তাহিক (
-মাসিক (কিশোর কণ্ঠ, আলোর দ্বীপ, পৃথিবী, মদীনা)
নেট সার্স করে
1.http://en.wikipedia.org/wiki/Yusuf_al-Qaradawi
2.http://en.wikipedia.org/wiki/Hassan_al_Banna
3.www.irf.net
4.www.quotationspage.com
5.www.mindstools.com
6.www.telesalesprompt.co.uk
7.www.achievement.org
প্রশিক্ষণ নিয়ে
সমস্ত পেশার লোকদের সাথে মিশে

আমরা নাইটিঙ্গলের নাম জানি তিনি নার্স পেশায় বিখ্যাত হয়েছিলেন। ওসামা বিন লাদেন জঙ্গি পেশায় বিখ্যাত হয়েছিলেন। তেমনি আমি কিছু পদ্ধতি পেয়েছি সেটিই আপনাদের কাছে শেয়ার করলাম। আশাকরি আপনাদের কাজে লাগবে।

পেশাদারিত্বঃ-

নিজের স্বপ্ন লেখা ও লক্ষ নির্ধারণ করা
যে সেক্টরে কাজ করেন সেখানের দায়িত্বশীল/ লিডারদের সাথে সময় দেয়া নিজের পেশাকে বুঝার জন্য
ডিসিপ্লিন/ সিস্টেম মানা
ট্রেনিং করা বা তথ্য সংগ্রহ করা
পেশার যে কোনো মিটিংয়ে উপস্থিত থাকা
নিয়মিত অফিসে আসা
উদ্যেগী হওয়া
পেশাটাকে ভালবাসা
অফিসিয়াল টুলস সাথে রাখা (পেড, কলম, ব্যাগ, লিগ্যাল পেপার, ব্রুশিয়ার, কেটালগ ইত্যাদি)
প্রপার ড্রেসকোড
ধৈর্য ধরা ও লেগে থাকা
প্রো-একটিভ, ক্রিয়েটিভ ও লিডার হওয়া
প্ল্যান করে কাজে নেমে পড়া
অভিজ্ঞতা অর্জন করা (কিভাবে অভিজ্ঞতা অর্জন করা যায়)
-দীর্ঘদিন লেগে থেকে
-পরিবেশ থেকে
-প্রশিক্ষণ নিয়ে
-অপরের ভুল বা বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে
-নিজের ভুল থেকে
-সব ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে
-স্ট্যামিনা/ কঠোর পরিশ্রম করে

মানসিকতাঃ-

ইমাজিনেশন করতে হবে
মেডিটেশন করতে হবে (না জানলে যে বইগুলির সহায়তা নিবেন)
১.The power of positive thinking and attitude-Remez Sasson
২.সাফল্যের চাবিকাঠি কোয়ান্টাম মেথড- মহাজাতক সহিদ আল বোখারি
৩.আত্ম উন্নয়ন-বিদ্যুৎ মিত্র
৪.নিজেকে জানো- বিদ্যুৎ মিত্র
৫.সুখ-সমৃদ্ধি- বিদ্যুৎ মিত্র
৬.আত্মসম্মোহন- বিদ্যুৎ মিত্র
৭.নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারবেননা-ডাঃ ড্যানিয়েল জি আমেন
৮.চেতনা অতিচেতনা নিরাময় ও প্রশান্তি-মহাজাতক সহিদ আল বোখারি
মটিভেশনাল বই পড়তে হবে
১.বিগব্যাঙ থেকে মানুষ-রুশো তাহের
২.ব্যক্তিত্ব বিকাশ ও সাফল্যের সহজ উপায়-ডেল কার্নেগী
৩.আপনি প্রতিষ্ঠিত যদি হতে চান-ডেল কার্নেগী
৪.ধনী হতে কদিন লাগে-হারবার্ট ক্যাশন
৫.মানুষকে বাগ মানানোর কলাকৌশল-লেসলি টি গিবলিন
৬.মোরা বড় জতে চাই-আহসান হাবিব ইমরোজ
৭.সবার আগে নিজেকে গড়ো-আব্দুস্ শহীদ নাসিম
৮.ডা: লুৎফর রহমান শ্রেষ্ঠ রচনাসমগ্র
৯.বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ১০০ মনিষি-মাইকেল এইচ হার্ট
১০.দৃষ্টিভঙ্গি বদলান জীবন বদলে যাবে-গোলাম হাফিজ
১১.সফলতার রহস্য-মো: আয়াজ করিম
12.Freedom is not free-Shiv Khera
13.Living with honour-Shiv Khera
14.The 7 habits of highly effective people-Stephen R Covey
15.The magic of thinking big-David J.Schwartz Phd
16.Business school-Robert T Kiyosaki
17.Rich dad poor dad-Robert T Kiyosaki
18.Questions are the answer-Allan Pease
19.The greatest opportunity in the history of the world-John Kalench
20.Success and creativity within seven days-Garath Luis
অভিজ্ঞ, জ্ঞানী এবং উচু ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষের সাথে মিশতে হবে
যারা বড় বড় স্বপ্ন দেখে তাদের সাথে মিশতে হবে
যারা গোছালো, লক্ষ্য-উদ্দেশ্য আছে, পজিটিভ, ক্রিয়েটিভ, ও প্রো-একটিভ তাদের সাথে মিশতে হবে
বড় ও প্রশস্ত রাস্তায় যেতে হবে
সমুদ্রে যেতে হবে
বড় সমাবেশ, মিছিল, মেরাথন ট্রেনিং ও বড় হাট-বাজারে যেতে হবে
মটিভেশনাল সিডি, ভিসিডি, ডিভিডি দেখতে হবে
সেলিব্রেশন প্রোগ্রামে যেতে হবে
ইনটারনেট সার্স করতে হবে
পাহার পর্বতে যেতে হবে

চলবে-

সাংবাদিকতা

লেখালেখি-১
সাংবাদিকতা এমন একটি পেশা যার তুলনা আর হয় না। যেমন ধরুন এই পেশায় এলে সেলিব্রেটি হওয়ার রাস্তাটা অনেকটা সোজা হয়ে যায়। চুল দাড়ি পাকলেই আবার আপনি বুদ্ধিজিবি বনে যেতে পারবেন অনায়াসেই। আর নিরাপত্তার কথা বলছেন? কার সাহস আছে সাংবাদিকের উপর মাস্তানি করবে? একবার করেই দেখুক না!! ঐ ব্যটাকে দুদিনেই দেশের সেরা ঘৃণ্যতম ব্যক্তিতে পরিণত করার রাস্তাটা তো এই সাংবাদিকতার পেশাই। তাই সাংবাদিকতার পেশাকে হেলা ফেলায় দেখবেন না। আসুন নিজের ক্যারিয়ারের জন্য সাংবাদিকতার পেশাটা বেছেনিতে দেরি না করি।
প্রথমেই বলে রাখছি সাংবাদিকতা পেশায় সফল হতে আপনাকে কোনোভাবেই জার্নালিজমে ভর্তি হয়ে চার চারটি বছর নষ্ট করা চলবে না। কারণ আপনি জার্নালিজমের যত ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্টই হন না কেনো আপনাকে কিছু কিছু বিষেশ বিষয়ের উপর পারদর্শী হতেই হবে। আর সেরকম যোগ্যতা থাকলে কিসের ডিগ্রি কিসের কি? আপনার সফলতা অবস্যম্ভাবী। আসুন আর দেরি না করে শুরু করি।
প্রথমত:-
সাধারণ সাংবাদিকতা শিক্ষায় আপনাকে শিখানো হবে যে কোন ঘটনাকে পাঁচটি প্রশ্নের উত্তরে সাজাতে হবে। এই প্রচলনের উপর যথেষ্ট সম্মান রেখেই আপনাকে একই জিনিস মনে করিয়ে দিতে চাই। যে কোনো ঘটনার উপর প্রতিবেদন করার আগে আপনাকে কি? কোথায়? কিভাবে? কখন? এবং কেনো? এই পাচটি প্রশ্নের আলোকে সাজাতে হবে। আশা করি সেটা আপনার জন্য তেমন কঠিন কোনো বিষয় নয়।
২য়ত
এবারে আপনাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শব্দ মালার সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি যেগুলো আপনার সফল সাংবাদিকতার অন্যতম চাবিকাঠি হিসেবে কাজ করবে। যেমন, প্রত্যক্ষদর্শি, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, নির্ভর যোগ্য সুত্র, এলাকা বাসী, গোপন সুত্র, সরেজমিনে দেখা যায়, অনেকেই মনে করেন, এলাকা বাসীর সাথে আলাপ কালে জানাযায়।
উপরোক্ত শব্দমালা গুলো আপনার চলার পথে যখন তখনই প্রয়োজন হবে তাই এগুলোর যথাযথ ব্যবহার রপ্ত করুন।
উদাহরন_ধরুন সাভারে দুই রাজনোইতিক দল সি এন জি এবং জি এম টি দলের সাথে সংঘর্ষ হয়েছে। এখন আপনাকে যদি বলা হয় সি এন জি দলকে ডূবাইতে হবে তাহলে এভাবে খবর লিখুন, গতকাল রাজধানীর সাভারে সি এন জি দলের কর্মিদের সাথে জি এম টি দলের সমর্থকদের ব্যাপক ধাওয়া পালটা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। (এবার এটা ওটা যা লেখার লিখুন এবং ক জন আহত হল এবং কজন নিহত হল তা লিখুন, এখানে খেয়াল রাখতে হবে নিহতের সংখ্যা সঠিক রাখতে হবে কিন্তু আহতের সংখ্যা আপনাকে যেন জি এম টি দলের অনুকুলে যায় সে অনুপাতে লিখতে হবে) এবার ঘটনার বর্ণনায় আপনাকে এই শব্দমালার সাহায্য নিতে হবে।
উদাহরণ – প্রত্যক্ষদর্শিদের সাথে কথা বলে যানা যায় যে জি এম টী দলের কর্মীরা তাদের নিজস্ব টেন্টে বসে আড্ডাদেয়ার সময় হঠাৎ করেই সি এন জি দলের এক কর্মি রাসেল ঐ পথ দিয়ে হেটে যাবার সময় জি এম টি দলের সদস্যদের উদ্দেশ্য করে কটূক্তি করে। এতে জি এম টি দলের সদস্যরা ঐ কর্মিকে আদর করে বুঝাতে গেলে অদুরেই দাঁড়িয়ে থাকা সি এন জি দলের ক্যডার রা জি এম টি দলের কর্মিদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে।
এবার মনে করেন আপনাকে বলা হল সি এন জি দলের প্রধান জমির আলীকে ডুবাইয়া এক খান রিপোর্ট করতে হবে তাইলে আপনেকে উপরের শব্দমালার দারস্থ হইতেই হইবে।
উদাহরন-২
শিরোনমটা অবশ্যই আকর্ষনীয় হতে হবে যেমন কিছুটা এই রকম “সিলেটের টেন মার্ডারের পেছনে কলকাঠী নেড়েছেন সি এন জি দলের প্রধান”
কৌশল
কেন সি এন জি দলের প্রধানের নাম না লিখে শুধু পদবীর কথা লেখবেন?
কারণ হল একঢিলে একাধিক পাখি মারা হবে, এখানে সি এন জি দলের মান ইজ্জত ও ঐ দলের প্রধানের মান ইজ্জত নিয়া টানাটানি পড়ে যাবে। শিরোনামেই উদ্দেশ্য আহিলের এই কৌশল ছাড় দিলেই আপনার ক্ষতি।
এবার দেখুন কিভাবে ঐ শব্দগুলো দিয়ে পর্নাঙ্গ একটা রিপোর্ট তৈরি করা যায়।
ডেস্ক রিপোর্টঃ সিলেটের আলোচিত টেন মার্ডারের নেপথ্যের নায়কদের নাম বারিয়ে আসছে। গতমাসে গ্রেফতার হওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসী পাতলা জলিল কে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় সিলেটের টেন মার্ডারের পেছনে জড়িত আছেন সি এন জি দলের কতিপয় শীর্ষ নেতা। দু সপ্তাহ আগে পাতলা জলিলকে জিজ্ঞাসাবাদে এরকম তথ্য পাওয়া গ্যেছে বলে জানিয়েছেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা। পাতলা জলিলের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশের একটি গোয়েন্দা দল তৎক্ষনণাৎ সিলেটে ছুটে যান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ডিবি কর্মকর্তার তরফ থেকে জানা যায় যে তদন্তকারীদল পাতলা জলিলের দেয়া তথ্যের পক্ষে কিছু আলামত পেয়েছেন। গত সপ্তাহের প্রথম দিকের সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের আই জি শিমুল কান্তি বলেছিলেন পাতলা জলিলের কাছ থেকে সিলেটের টেন মার্ডারের ব্যপারে কিছু গুরুত্ব পূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। ঐ সংবাদ সম্মেলনের পর গত কাল ডিবি পুলিশের ঐ কর্মকর্তা আমাদের প্রতিবেদক কে এমন তথ্য দিলেন। ঐ খবরের ভিত্তিতে আমাদের দৈনিক জমকালো পত্রিকার একদল সাংবাদিক সিলেটে যান এবং এলাকা বাসীর সাথে কথা বলে জানতে পারেন যে সি এন জি দলের প্রধান জমীর আলীর সেক্রেটারীর সাথে নিহত দশনেতার সাথে টেন্ডার সংক্রান্ত মতবিরোধ চলছিল। এদিকে কয়েকটি নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানা গেছে যে পাতলা জলিলের এমন তথ্য প্রদানের এবং ডিবি পুলিশের এমন অগ্রগতির খবর সি এন জি দলের প্রধান জমির আলি সমমনা পুলিশের কর্মকর্তা ও আইনজীবিদের দারস্থ হচ্ছেন………………………… এভাবে লিখে ফেলুন কয়েক পৃষ্ঠা।
৩য় অধ্যায়
এবার উক্তি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কিছু মেধার পরিচয় দিতে হবে। ধরুন কোন রাজনৈতিক নেতার শাক্ষাৎকার নিচ্ছেন, শাক্ষাৎকারের এক পর্যায়ে তিনি বললেন, “রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারনে বাংলাদেশ আজ বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তাই এই দেশ কে নতুন করে গড়ে তুলতে হলে আমাদেরকে সৎ ও যোগ্য নেতৃত্বের তৈরীতে মনযোগী হতে হবে”
এখন আপনাকে যদি বলা হয় এই রাজনৈতিক নেতাকে যেভাবেই হোক জনগনের কাছে ঘৃণীত করে তুলতে হবে তাহলে আপনার প্রতিবেদনের শিরোনাম হবে এরকম “বাংলাদেশকে বসবাসের অযোগ্য বললেন অমুক নেতা” এই খবরকে আরও মুখরোচক করতে আরও একটি রিপোর্ট লিখে ফেলতে পারেন এই শিরোনামে “দেশকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করলেন অমুক নেতা” আবার অন্যভাবেও লিখতে পারেন যেমন “দেশ দ্রোহী মন্তব্য করলেন অমুক নেতা”
এর পর দেখুন কি হয়, বাঙ্গালী বলে কথা, হুজুগে পড়ে ঘৃণাতো আছেই ফাসীর কাষ্ঠে ঝুলানোর দাবীও উঠবে এই নেতার বিরুদ্ধে। আর আপনার পদবী? দেখুন না লাফিয়ে কোথায় উঠে!!
আবার যদি আপনাকে বলা হয় যে এই নেতাকে জনপ্রিয় করে তুলুন তাহলে শিরোনামটি এভাবে লিখতে পারেন, “নতুন করে দেশ গড়ার আহবান জানালেন অমুক নেতা” আবার এভাবেও শিরোনামটি লিখতে পারেন “সৎ ও যোগ্য নেতৃত্বের তৈরীর শপথ ঝরে পড়লো নেতার কন্ঠে”
লিখেছেন ইকু।

প্রযুক্তির আলোচিত দশ ‘ভুল ভবিষ্যদ্বাণী’

প্রযুক্তির আলোচিত দশ ‘ভুল ভবিষ্যদ্বাণী’!
আসন্ন ভবিষ্যতে কী ঘটতে যাচ্ছে তার সাথে আমাদেরকে আগেভাগে পরিচয় করিয়ে দেয় ‘ভবিষ্যদ্বাণী’। প্রযুক্তি ক্ষেত্রে যে পূর্বাভাসটি দেয়া হয় যদি তার উল্টোটি ঘটে তবে কেমন লাগবে আপনার! প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ আর হর্তাকর্তাদের এরকম পূর্বাভাস এখন পাঠকদের কাছে কেবল কৌতুক মাত্র। বিভিন্ন সময়ে প্রযুক্তি জগতের আলোচিত দশটি বাজে ভবিষ্যদ্বাণী নিয়ে ইন্ডিয়াটাইমস অবলম্বনে প্রতিবেদনটি লিখেছেন শোভন আহম্মেদ।

আই পডের মৃত্যু
২০০৫ এর ফেব্রুয়ারিতে টেলিগ্রাফ পত্রিকায় দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আমস্টার্ড এর প্রতিষ্ঠাতা স্যার অ্যালেন মাইকেল সুগার ভবিষ্যদ্বাণী করেন যে, আসছে ক্রিসমাসেই আইপডের মৃত্যু ঘটবে। এটি ব্যবহারহীন, অকেজো হয়ে যাবে। ঘটনাক্রমে আমস্টার্ড আর অ্যাপলের মধ্যে সে সময় চলছে হাড্ডহাড্ডি প্রতিযোগিতা। ভবিষ্যদ্বাণীর ঠিক উল্টো ঘটনাটি ঘটেছে। অক্টোবরের মধ্যেই আইপড রেকর্ড পরিমাণ বিক্রি হয়। এগারো মিলিয়নেরও বেশি আইপড বিক্রি করে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। যা আগের বছরের চেয়ে শতকরা আট ভাগ বেশি।

গৃহে ব্যবহারের জন্য কম্পিউটারের প্রয়োজন নেই
১৯৭৭ সালে ডিজিটাল ইকুয়িপমেন্ট কর্পোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা ওসলেন গৃহে কম্পিউটারের ব্যবহার নিয়ে এমন মন-ব্য করেন। তবে এধরণের মন্তব্য তিনিই প্রথম করেননি। তারও আগে ১৯৪৩ সালে আই বি এম চেয়ারম্যান টমাস ওয়াটসন ভবিষ্যদ্বাণী করেন যে, সারা বিশ্বে মাত্র পাঁচটি কম্পিউটারের বাজার সম্ভাবনা রয়েছে। নব্বইর দশকের শেষদিকে ওরাকল এর সি ই ও লেরি এলিসন পিসি’কে অপ্রয়োজনীয় ডিভাইস হিসেবে অভিহিত করেন।

৬৪০ কিলোবাইটের বেশি জায়গার প্রয়োজন নেই
১৯৮১ সালে বিল গেটস দাবি করেন পার্সোনাল কম্পিউটারে ৬৪০ কিলোবাইটের বেশি মেমরির কোন প্রয়োজন নেই।
অবশ্য ১৯৯৬ সালে ব্লুমবার্গ বিজনেস নিউজের সাথে এক সাক্ষাৎকারে তার এই মন্তব্য অস্বীকার করেন। মন্তব্যটি সম্বন্ধে গেটস বলেন, “আমি বোকামো কিংবা ভুল বলেছিলাম তা নয়। কম্পিউটার সম্বন্ধে ধারণা নেই এমন কারো পক্ষেই এই ধরনের মন্তব্য করা সম্ভব।” এ সম্বন্ধে বিল গেটসের সক্ষাৎকারের কিছু অংশ তুলে ধরা হল।

“কম্পিউটারকে আরো কার্যকরী করতে এবং তার উন্নত সফটওয়্যারের জন্য বাড়তি মেমরির প্রয়োজন হয়। মূলত প্রতি দু বছর অন-রই মূল ধারার সফটওয়্যারগুলো পূর্বের তুলনায় মেমরির দ্বিগুন স্থান দখল করে নিচ্ছে।”

“১৯৮১ সালে যখন আই বি এম কোম্পানির পিসি বাজারে আসে তখন অনেকে মাইক্রোসফটের সমালোচনা করে। সে সময় বলা হয় ৬৪ কিলোবাইট মেমরি আর আট বিটের কম্পিউটারই জগতে চিরকাল বিরাজ করবে। এসময় অপচয়ের অভিযোগ এনে অনেকে আমাদের সমালোচনা করেছিল।”

“তবে মাইক্রোসফট এর সাথে ভিন্নমত পোষণ করেছিল। আমরা এখন জানি ৬৪০ কিলোবাইট মেমরির ১৬ বিট কম্পিউটার টিকতে পেরেছিল মাত্র চার থেকে পাঁচ বছর। ৬৪০ কিলোবাইট মেমরিই যথেষ্ট -এমন একটি ভিত্তিহীন উক্তি আমার বলে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে। যার কোন প্রমাণ নেই। এটি একটি গুজব যা বার বার ব্যবহার করা হচ্ছে।”

টিভি টিকে থাকবে না
আজকের টিভি ভক্তদের জন্য এটি একটি মজার কৌতুক বলা যেতে পারে। ১৯৪৬ সালে ডেরিল জানুক বলেন, টেলিভিশন বেশিদিন টিকবে না, কারণ একটি প্লাইউডের বাক্সের দিকে প্রতি রাতে তাকিয়ে থাকা দর্শকের কাছে একঘেয়েমির কারণ হয়ে দাড়াবে। হলিউডের প্রভাবশালী এই ব্যক্তিত্ব ছিলেন অস্কার বিজয়ী প্রযোজক,পরিচালক, অভিনেতা, চিত্র নাট্যকার ও স্টুডিও নির্বাহী।

১৮০ টি বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের পেটেন্টধারী আমেরিকান বিজ্ঞানী লী ডি ফরেস্ট ১৯২৬ সালে টেলিভিশন নিয়ে যে মন্তব্য করেন তাও বেশ চমকপ্রদ। তিনি বলেন, “ধারণাগতভাবে টেলিভিশন হয়তোবা গ্রহণযোগ্য হতে পারে। কিন্তু আর্থিক ও বাণিজ্যিক সম্ভাব্যতার বিচারে টেলিভিশন অসম্ভব একটি ধারণা যা নিয়ে স্বপ্ন দেখে আমাদের খুব কম সময় অপচয় করা উচিৎ।”

এর চেয়ে বড় কোন বিমান আর তৈরি হবে না
১৯৩৩ সালে মাত্র দশ জন যাত্রী বহনযোগ্য বোয়িং ২৪৭ নামে বিমানটি তৈরির পর এর প্রকৌশলী গর্ব করে বলেছিলেন, “ এর চেয়ে বড় আর কোন বিমান তৈরি হবে না।”
একইভাবে মারেকাল ফার্দিনান্দ ফক নামের অধ্যাপক ১৯০৪ সালে বলেন “ উড়োজাহাজ একটি মজার খেলনা হতে পারে, তবে সামরিক বিবেচনায় এর কোন মূল্য নেই।”

স্পাম সমস্যার সমাধান
ই-মেইল ব্যবহারকারীদের জন্য স্পাম একটি বিরক্তিকর সমস্যার নাম। ২০০৪ সালের জানুয়ারিতে বিল গেটস ঘোষণা দিয়েছিলেন স্পাম ই-মেইল মেসেজ সমস্যা দুই বছরের মধ্যেই সমাধান করা হবে।
মাইক্রোসফট চেয়ারম্যান বলেন তারা তিনটি উপায়ে এই সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করছেন। তবে এখন পর্যন্ত এ সমস্যার সমাধান সম্ভব হয়নি।

ই-বে
২০০৫ এর ফেব্রুয়ারিতে ই-বে কোম্পানির সিইও মেগ হুইটম্যান ঘোষণা দেয়েছিলেন, “ই-বে নিঃসন্দেহে চীনে বিজয়ীর আসনে বসতে যাচ্ছে।” কিন্তু ২০০৬ এর ডিসেম্বরের মধ্যেই কোম্পানিটি তার বাজার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়। টম অনলাইন নামে এক চীনা ইন্টারনেট কোম্পানির ছোট ব্যবসায়িক পার্টনার হতে বাধ্য হয় ই-বে।

সেই সাথে চীনে বিনিয়োগ করে শেষ পর্যন্ত স্থানীয় কোম্পানির কাছে নত হওয়া আরেকটি আমেরিকান কোম্পানির দলে যোগ দেয় ই-বে। চীনের ইয়াহু পার্টনার আলিবাবা’কে হারাতে কোম্পানিটির সি ই ও হুইটম্যান ২০০৫ সালে একশো মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার ঘোষণা দেন।

টেলিফোন মূল্যহীন
ব্রিটিশ পদার্থ বিজ্ঞানী ও ‘ইনভেন্টিং দ্যা ফিউচার’ গ্রনে’র লেখক ডেনিস গেবর ১৯৬২ সালে লেখেন “প্রণালীগত ভাবে টেলিফোনের তার দিয়ে তথ্য আদান প্রদান সম্ভব হলেও প্রয়োজনীয় যান্ত্রিক উপাদানের খরচ বিবেচনায় এটি বাস-বসম্মত নয়।”
একইভাবে ১৮৭৯ সালে ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন কোম্পানি তাদের আভ্যন্তরীন প্রতিবেদনে টেলিফোনকে অলাভজনক ডিভাইস হিসেবে উল্লেখ করেন।

ফটোকপি
১৯৫৯ সালে আই বি এম ফটোকপি মেশিন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান জেরক্স এর প্রতিষ্ঠাতাদের সম্ভাব্য মার্কেট সম্বন্ধে বলেছিল “বিশ্বে সর্বোচ্চ ৫০০০ ফটোকপি মেশিনের বাজার রয়েছে।”

অথচ উইকিপিডিয়ার তথ্যানুযায়ী ১৯৬১ সালের মধ্যে জেরক্স প্রায় ষাট মিলিয়ন ডলার আয় করে। ১৯৬৫ সালের মধ্যে যা ৫০০ মিলিয়ন ডলার স্পর্শ করে।

১৯৫৭ সালে বাণিজ্য বিষয়ক পত্রিকা প্রেন্টিস হল এর সম্পাদক ভষ্যিদ্বাণী করেছিলেন, “ডাটা প্রসেসিং হুজুগে একটি ফ্যাশন যা এই বছর পর্যন্তও টিকবে না।”

বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকম/শোভন/এমকে/এমআইআর/ডিসেম্বর ৩০

মোবাইলে টানা ৫০ মিনিটের বেশি কথা নয়

মোবাইলে টানা ৫০ মিনিটের বেশি কথা নয়
মোবাইলে একটানা ৫০ মিনিটের বেশি কথা বললে মস্তিষ্কই ওলট-পালট হয়ে যেতে পারে। সম্প্রতি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অফ হেলথ-এর গবেষকরা মোবাইলে একটানা কথা বলার বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন। খবর টাইমস অফ ইন্ডিয়া-এর।

গবেষকরা জানিয়েছেন, কানের কাছে মোবাইল ফোনের অ্যান্টেনা ৫০ মিনিটের বেশি ধরে রাখার ফলে মস্তিষ্কের কোষগুলোর কাজ পরিবর্তন হতে শুরু করে। তবে, এতে কী ক্ষতি হয় বা মস্তিষ্কে ক্যান্সার হয় কিনা সে বিষয়ে গবেষকরা কিছু জানান নি।

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ-এর গবেষক ড. নোরা ভলকো জানিয়েছেন, মোবাইলে বেশি কথা বলার ফলে মস্তিষ্কের গ্লুকোজ মেটাবলিজম বেড়ে যায়। গবেষণার বিষয় ছিলো, মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে সৃষ্ট ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড মস্তিষ্কে কী ধরনের প্রভাব ফেলে সেটি খুঁজে বের করা।

গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন সাময়িকীতে।

উল্লেখ্য, ১৯৮০ সাল থেকে সারাবিশ্বে মোবাইল ফোন ব্যবহার বেড়েছে। এখন সারবিশ্বে ৫০০ কোটিরও বেশি মোবাইল ফোন ব্যবহৃত হচ্ছে।

বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকম/মিন্টু/এইচবি/ফেব্রুয়ারি ২৩/১১
মোবাইল ফোনের ব্যবহার মস্তিষ্কের ক্যান্সার বাড়ায়নি
মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে মস্তিষ্কে ক্যান্সার হতে পারে এতদিন এই ধারণা ছিলো সবার। কিন্তু ডেনমার্কের বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছেন মোবাইল ফোন ব্যবহারে মস্তিষ্কে ক্যান্সারের ঝুঁকি নয়। খবর বিবিসি অনলাইনের।

ডেনমার্কের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ১৯৯০ এর মাঝামাঝি থেকে মোবাইল ফোনের ব্যাপক ব্যবহার শুরু হলেও বয়স্কদের মস্তিষ্কের ক্যান্সারজনিত টিউমারের উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। ড্যানিশ ক্যান্সার সোসাইটি ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে, এবং সুইডেনের ২০ থেকে ৭৯ বছর বয়সীদের মস্তিষ্কে ক্যান্সারজনিত টিউমারের হার নিয়ে গবেষণা করেন। তারা দেখেন, ১০ বছর ধরে মোবাইল ব্যবহারের ফলেও এই হারের কোন পরিবর্তন হয়নি। তারা অবশ্য আরো গবেষণার প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেছেন।

এই গবেষণা ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউট এর একটি সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়, মোবাইল হ্যান্ডসেট থেকে বের হওয়া রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ও বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় ক্ষেত্র বা ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড মস্তিষ্কের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। কিন্তু বায়োলজিক্যাল মেকানিজমের উপর প্রভাব ফেলার মতো কোনকিছু এখনো চিহ্নিত করা যায়নি।

এক কোটি ৬০ লাখ প্রাপ্ত বয়স্ক লোকের মধ্যে ৫৯,৬৮৪ জনের মস্তিষ্কের টিউমার আক্রান্ত ব্যক্তিকে নিয়ে ১৯৭৪ থেকে ২০০৩ পর্যন্ত ৩০ বছর ধরে এই গবেষণা চলেছে। এই সময়ে গ্লিমাস নামের ক্যান্সারে আক্রান্তের হার বেড়েছে পুরুষের ক্ষেত্রে শতকরা শূন্য দশমিক পাঁচ ভাগ আর মহিলাদের ক্ষেত্রে শতকরা শূন্য দশমিক দুই ভাগ। মোননজিওমা নামক আক্রান্তদের হার পুরুষদের শতকরা শূন্য দশমিক আট এবং ১৯৯০ এর পরে মেয়েদের ক্ষেত্রে শতকরা তিন দশমিক আট ভাগ।

গবেষকদের মতে, মেয়েদের এই ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে বয়স ৬০-৭৯ বছরের পরে।

এই গবেষণা দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইসাবেলা ডেটুর। তিনি জানান, ১০ বছর মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলেও মস্তিষ্কের ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার হার খুবই নগণ্য। তার মতের সঙ্গে একমত বৃটিশ ক্যান্সার গবেষক ডক্টর অ্যালিসন রস। তিনি জানান, বৈজ্ঞানিকভাবেই এখন প্রমাণিত যে, ১০ বছরের নিচে মোবাইল ফোনের ব্যবহার ক্যান্সারের কোন ঝুঁকি বহন করে না। মস্তিষ্কের টিউমার থেকে ক্যান্সারে যেতে অনেক সময় লাগে তাই মোবাইল ফোনের ব্যবহার দীর্ঘ মেয়াদি কোন ঝুঁকির কারণ হতে পারে কিনা সেটা পরখ করতে হবে।
বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকম/বাদশা/এইচবি/এইচআর/ডিসেম্বর ১৫/০৯

পাল্টে যাচ্ছে মানুষের স্মৃতির ভবিষ্যৎ

পাল্টে যাচ্ছে মানুষের স্মৃতির ভবিষ্যৎ
সফটওয়ার জায়ান্ট মাইক্রোসফট এবার ঘোষণা দিলো যে, তারা এমন এক ডিভাইস তৈরি করছে যার মাধ্যমে মানুষের স্মৃতি ডিজিটাল পদ্ধতিতে ধরে রাখা সম্ভব হবে। মাইক্রোসফটের গবেষক গর্ডন বেল গত এক দশক ধরে তার যাবতীয় অভিজ্ঞতা কম্পিউটারে নিয়মিত জমা করে রাখছেন। তিনি মনে করেন, তথ্য ধরে রাখার জন্য এটিই হচ্ছে সবচে নিরাপদ উপায়। খবর সিএনএন অনলাইন এর।

বার্তা সংস্থটির বরাতে জানা গেছে, মাইক্রোসফট ‘সেন্সক্যাম’ নামের স্মৃতিধারণযোগ্য একটি ক্যামেরা তৈরির বিষয়ে কাজ করছে। এই ক্যামেরাটি একজন মানুষের ঘাড়ে সার্বক্ষণিক ভাবে ঝুলে থাকবে এবং জীবনের প্রতিটা বিষয় ছবির মাধ্যমে ধরে রাখবে।

প্রত্যেকেই বিভিন্ন পারিবারিক অনুষ্ঠান অথবা নানান কাজে প্রতিদিন প্রচুর ডিজিটাল ছবি তোলেন এবং যথারীতি তা সেভও করে রাখেন। কিন্তু ৭৫ বছর বয়স্ক বেল তার বিভিন্ন আলাপচারিতা, মন্তব্য, ভ্রমণ এবং নানা রকম অভিজ্ঞতা সার্বক্ষণিক তার সাথে থাকা ভিডিও ইক্যুইপমেন্ট, ক্যামেরা এবং অডিও রেকর্ডারের মাধ্যমে ধারণ করে রাখেন।

বেল-এর বরাতে বার্তা সংস্থাটি জানিয়েছে, তিনি তার জীবনের অতি ব্যাপারগুলোও যেমনঃ রেস্টুরেন্টের খরচ, ইলেকট্রিক সহ যাবতীয় অন্যান্য বিল এবং মেডিকেল রেকর্ডগুলো পর্যন্ত ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করেন। এমনকি তিনি যে সব ওয়েব পেজগুলো ভিজিট করেন তারও পিডিএফ ফাইল করে জমা রাখেন।

তিনি আরো জানিয়েছেন, অডিও ভিডিও সব মিলে পাহাড়সম তথ্যগুলো তিনি জমা করেছেন মোট ৩৫০ গিগাবাইট জায়গাজুড়ে। তিনি এটিকে বলছেন ‘রেপ্লিকা অফ বেল’স বায়োলজিক্যাল মেমোরি’ নামে। তিনি বলেন, ‘এই পদ্ধতিতে স্মৃতি ধরে রাখা খুবই নিরাপদ, কারণ মাথায় থাকা স্মৃতি অনেক সময় নানা কারণে ভুলে বসতে পারেন। কিন’ এই ‘ই-মেমোরি’র মতো স্মৃতিধারণযোগ্য চিপ বিশ্বস্ত সঙ্গীর মতোই সব তথ্য ধারণ করে রাখে এবং কখনও ভুলে যায় না।

তিনি বলেন, এটা আপনার জীবনের মাল্টিমিডিয়া ট্রান্সস্ক্রিপ্টের মতো হয়ে থাকবে।’ তিনি আরো যোগ করেন, ‘২০২০ সালের মধ্যে আমাদের সারা জীবনের ঘটনাগুলো অনলাইনে থাকবে এবং তা হবে সার্চেবল। শুধু তাই নয়, স্মার্ট ফোন এবং স্বল্প মূল্যের ডিজিটাল মেমোরি কার্ডের কল্যাণে একজন মানুষের সারা জীবনের তথ্যই ইন্টারনেটে থাকবে।’

সিএনএন জানিয়েছে, তার মতে, আর কোনও মানুষকে তথ্য ধারণ করার জন্য মস্তিস্কে চাপ প্রয়োগ করতে হবে না। এর ফলে মাথা থাকবে সম্পূর্ণ ঝামেলামুক্ত। আর এই উল্লেখযোগ্য বিবর্তনের ফলে মানুষের জীবন হবে সম্পূর্ণ অন্যরকম।

উল্লেখ্য জিম গেমিলে’র ফেলো রিসার্চার বেল ‘টোটাল রিকল’ নামে একটি বই লিখেছেন যেখানে তিনি ডিজিটাল স্মৃতিধারণ বিষয়ে বিশদ আলোচনা করেছেন।

হাতের নাগালে এলো স্মৃতি তৈরির জ্ঞান!

মস্তিষ্ক থেকে যেভাবে স্মৃতি তৈরি হয় তার অন্তত একটি প্রক্রিয়া তারা জানতে পেরেছেন বলেই সম্প্রতি মার্কিন বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন। খবর বিবিসি অনলাইনের।

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, আগে মনে করা হতো, যেখানে মস্তিষ্কের কোষগুলো একটির সাথে আরেকটি যুক্ত সেখানে তথ্য আনা নেয়া আর সংরক্ষণের কাজ করে সিনাপস। কিন্তু জানা গেছে, গবেষকরা এখন বলছেন, অণুগুলো কিভাবে সিনাপসে ঢুকে স্মৃতির সাথে জোট বাঁধে সেটা তারা ধরতে পেরেছেন। এই গবেষণার ফল আলঝেইমার রোগীদের জন্য ওষুধ তৈরিতে সাহায্য করবে বলে অনুমান করছেন গবেষকরা।

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, স্মৃতি গঠনে শক্তিশালী সিনাপসের প্রয়োজন হয়। আর এই প্রক্রিয়ায় নতুন প্রোটিন তৈরির বিষয়টি জড়িত। কিন্তু কীভাবে শরীর এই প্রক্রিয়াটি নিয়ন্ত্রণ করে সেটি এখনও জানতে পারেনি বলেই জানিয়েছেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা।

ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া সান্তা বারবারার গবেষকরা ইঁদুর নিয়ে তাদের গবেষণায় দেখিয়েছেন, স্মৃতি তৈরিতে যে প্রোটিন উৎপাদন প্রয়োজন তা শুধু আরএনএ (বা রাইবো নিউকিয়িক অ্যাসিড)-এর মাধ্যমে ঘটে। যখন একত্রিত সব অণুগুলো জেনেটিক বার্তা নিয়ে অন্যান্য কোষে পৌঁছে দেয় তখন প্রোটিন উৎপাদন শুরু হয়।

জানা গেছে, যতক্ষণ এই বিষয়টি না ঘটে প্রোটিনযুক্ত আরএনএ কেবলমাত্র নীরব অণুর ভূমিকাই পালন করে এবং অকার্যকর থাকে। কোনো মজাদার ঘটনা বা অভিজ্ঞতার কোনো সংকেত যখন বাইরে থেকে যায় তখন এই নীরব অণু সচল হয়ে আরএনএ-কে মুক্ত করে।

সংবাদমাধ্যমটির বরাতে জানা গেছে, মার্কিন বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, এখন ধাঁধাঁর সমাধান হয়েছে। দেখানো গেছে কিভাবে প্রোটিন পতন আর সংশ্লেষ সঙ্গে সঙ্গে ঘটে। প্রোটিন চিহ্নিত করতে মস্তিস্কের প্রয়োজন পড়ে স্মৃতি জোড়া লাগানোর। এই বিষয়টিই রোগীদেরকে সাহায্য করতে পারবে বলে মনে করছেন তারা।
 লোভ সামলাতে পারে তরুণ মস্তিষ্ক
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা জানিয়েছেন, তরুণ-তরুণীরা সহজেই লোভ সংবরণ করতে পারে। তাদের মস্তিষ্কের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে তারা বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ সহজেই নিয়ন্ত্রণ করতে শেখে। খবর টেলিগ্রাফ অনলাইন-এর।

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, তরুণ-তরুণীদের মস্তিষ্কে এমআরআই স্ক্যান করে এই ফল পেয়েছেন ইউনিভার্সিটি অফ অরিগন এর গবেষকরা।

গবেষকরা জানিয়েছেন, দেখা গেছে, মস্তিষ্কের কর্টেক্স অঞ্চলের সামনের দিক থেকেই নির্ধারিত হয় ঝুঁকি গ্রহণ করার বিষয়টি। আর এই তরুণ বয়সেই মস্তিষ্কের কারণেই কোনো বিষয়ের চাপটি তাদের বোধগম্য হয়ে যায়। তাদের মধ্যে তৈরি হওয়া সন্দেহপ্রবণতা তাদের লোভ সংবরণে উদ্বুদ্ধ করে।

গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে নিউরন সাময়িকীতে।

গবেষকরা জানিয়েছেন, এই গবেষণার ফল তরুণ-তরুণীর অভিভাবকদের মধ্যে দুশ্চিন্তা দূর করতে পারবে।
মস্তিষ্কের সঙ্গে আধ্যাত্মিকতার যোগ

আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় আচরণের সঙ্গে মস্তিষ্কের কোনো নির্দিষ্ট অংশের সম্পর্ক আছে বলেই মনে করছেন গবেষকরা। ইতালির গবেষকরা দেখেছেন, মস্তিষ্কের কোনো অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে মানুষের আধ্যাত্মিকতা বেড়ে যায়। গবেষণার এ বিষয়টি সম্প্রতি জানিয়েছে ‘নিউরন’ সাময়িকী।
সংবাদমাধ্যমটির বরাতে জানা গেছে, মস্তিষ্কের ক্ষতি হয়েছে এমন লোক নিজেকে সেরা মানুষ ভাবতে শুরু করে। আর এটিই তার কাছে আসে অস্পষ্ট আধ্যাত্মিক অনূভূতির আকারে। এমনকি তার আচরণ ও চিন্তার মধ্যেও এই ধরনের অনুভূতি কাজ করে।

গবেষকদের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, নিজেকে সর্বশ্রেষ্ঠ মনে করা ব্যক্তি নিজের অনূভূতির ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে, আর এর ফলে নিজেকে এই পৃথিবীর একজন বলেও তার আর মনে হয় না।

ইউনিভার্সিটি অব ইউডিন এর গবেষক ড. কসিমো আরগেসি জানিয়েছেন, মস্তিষ্কের সার্জারি করে টিউমার অপসারণের পর অনেক রোগীরই এই রোগের উপসর্গ দেখা গেছে।
নিয়মিত পরীক্ষায় স্মৃতিশক্তি বাড়ে

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা জানিয়েছেন, নিয়মিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বেড়ে যায়। নিয়মিত পরীক্ষা দেবার ফলে শেখার ক্ষমতা বাড়ার পাশাপাশি বেড়ে যায় স্মৃতিশক্তিও। খবর টেলিগ্রাফ অনলাইনের।

সংবাদমাধ্যমটির বরাতে জানা গেছে, পরীক্ষার উপযোগিতা বিষয়ে গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ মস্তিষ্কের জন্য সুফল বয়ে আনে এবং মস্তিষ্কের দক্ষতা বাড়ায়।

গবেষকরা জানিয়েছেন, পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিলে স্মৃতিশক্তি বেড়ে গিয়ে মস্তিষ্কের দক্ষতা বেড়ে যায় যা পুরোনো স্মৃতি স্মরণ করতে এবং নতুনভাবে সংরক্ষণ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।

গবেষকরা আরো জানিয়েছেন, নিয়মিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ফলে মানসিক শক্তি বা ‘মেডিয়েটরস’ বেড়ে যায় । এই মেডিয়েটরস বা মানসিক শক্তি কেবল পড়াশোনার মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব নয়। আর তাই নিয়মিত পরীক্ষা দিলে স্মৃতিশক্তি দীর্ঘ সময়ের জন্য মস্তিষ্কে গাঁথা হয়ে যায়।

কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির মনোবিদ ড. ক্যাথরিন রওসন জানিয়েছেন, পরীক্ষার অনুশীলনের ফলে স্মৃতি হাতড়ে কোনো কিছু খুঁজে বের করার মানসিকতা তৈরি হয় যা পরবর্তীতে আবারো মনে করা সম্ভব হয়।

গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে ‘সায়েন্স’ সাময়িকীতে

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, গবেষণার এই ফল মস্তিষ্কের রোগ চিকিৎসায় কাজে লাগতে পারে।
স্মৃতি বুঝতে মস্তিষ্কে স্ক্যান

গবেষকরা জানিয়েছেন, স্মৃতি রোমন্থনরত অবস্থায় মস্তিষ্ক স্ক্যান করে বলে দেয়া যাবে কি ছিল সেই স্মৃতি। আর এই গবেষণা কাজে লাগবে স্মৃতিভ্রম রোগীদের চিকিৎসায়। খবর বিবিসি অনলাইনের।

সংবাদমাধ্যমটির বরাতে জানা গেছে, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের গবেষকরা স্মৃতি রোমন্থনকারীর মস্তিষ্ক স্ক্যান করে বের করতে পেরেছেন তার ভাবনার বিষয়টি কি ছিলো।

গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে ‘কারেন্ট বায়োলজি’ সাময়িকীতে।

গবেষকদের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, স্মৃতি রোমন্থন প্রক্রিয়াটি অনেক জটিল। এই গবেষকদলটির আগের করা গবেষণার বিষয় ছিলো মস্তিষ্কের স্ক্যান করে সাধারণ চিন্তা প্রক্রিয়া, রঙ, বস্তু বা স্থানের পার্থক্য বের করা সম্ভব। আর বর্তমান গবেষণাটি আগের গবেষণার ফলাফলকে ভিত্তি করেই শুরু হয়েছে।

গবেষকদের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, মস্তিষ্কের স্ক্যানের ফলে একজন ব্যক্তি কোন ভার্চুয়াল বাস্তবতার জগতে অবস্থান করছে তাও বলা সম্ভব।

হরেক রকম স্বপ্নে স্মৃতিশক্তি বাড়ে
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা জানিয়েছেন, নানান রকমের স্বপ্ন আমাদের স্মরণশক্তি বাড়ায় এবং সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। স্বপ্নমাখা একটি ঘুমই জেগে ওঠার পর হারানো তথ্য মনে করিয়ে দেয় এবং স্মৃতিশক্তি বাড়ায়। খবর টেলিগ্রাফ অনলাইনের।

অল্প ঘুমে বিভিন্ন রকম স্বপ্ন দেখার অবকাশ থাকে না বলেই এই রকম ঘুমে স্মৃতিশক্তিও বাড়ে না। মানুষ যখন গভীর ঘুমে থাকে তখনই মানুষ স্বপ্ন দেখে আর এ পর্যায়ে গুমের মধ্যেই চোখের পাতা নড়ে ওঠে। একে বলা হয় র্যাপিড আই মুভমেন্ট বা আরইএম।

গবেষকরা জানিয়েছেন, এক রাতে গড়ে ৪ থেকে ৫ বার আরইএম-এর ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু শেষ রাতের দিকে এটি বেশ দীর্ঘ হতে পারে। এর ফলে যারা রাতে সাত-আট ঘন্টার কম ঘুমান তাদের আরইএম কম ঘটে। ফলে তাদের স্মৃতি ধরে রাখার মতো মানসিক শক্তিও কমে যায় বলেই গবেষকদের ধারণা।

গবেষকরা জানিয়েছেন, আরইএম দীর্ঘ ঘুমের সঙ্গে সম্পর্কহীন। কেবল মস্তিষ্ক যখন গভীর ঘুমের স্তরটি পার করতে পারে তখনই আরইএম স্লিপের পর্যায়টি ঘটে।

ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষক ড. সারা মেডনিক জানিয়েছেন, মস্তিষ্কে অসংলগ্ন হয়ে জমে থাকা স্মৃতি আরইএম-এর মাধ্যমে একত্রিত হয়। আর এ থেকে বিভিন্ন সমস্যা উত্তরণের পথও মেলে। কারণ আরইএম পর্যায়ে বিভিন্ন নিউরোলজিক্যাল পরিবর্তন ঘটে।

তিনি আরো জানিয়েছেন, প্রতিদিন যে তথ্যগুলো অসলগ্নভাবে আমাদের মস্তিষ্কে জমা হয় সেগুলো একত্রিত করে স্মৃতি গঠন করতে আরইএম স্লিপের প্রয়োজন পড়ে। আর এ পর্যায়ে গঠিত স্মৃতিই পরবর্তী সময়ে আমরা ব্যবহার করি।

অতিরিক্ত জেট ল্যাগে মস্তিষ্ক বিকৃতি!
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা জানিয়েছেন, যারা নিয়মিত প্লেনে ভ্রমণ করেন বা প্লেনে বিভিন্ন শিফটে কাজ করেন তারা জেট ল্যাগ সমস্যার কারণে মস্তিষ্কের সমস্যায় পড়তে পারেন। খবর গিজম্যাগের।
ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকরা জানিয়েছেন, শরীরের ২৪ ঘন্টার জৈব রাসায়নিক চক্র সারকেডিয়ান রিদমসে ব্যাঘাত ঘটলে স্মৃতিশক্তিতে এবং কোনো কিছুর শেখার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। জেট ল্যাগের ক্ষেত্রেও এই সমস্যা তৈরি হয়। জেট ল্যাগের কারণে মস্তিষ্কে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়ে যা স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দেয়।

গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে ‘প্লস ওয়ান’ সাময়িকীতে।

গবেষকরা আরো জানিয়েছেন, জেট ল্যাগের কারণে স্মৃতিশক্তি তৈরিতে মস্তিষ্কের সমস্যা হয়। এমনকি নতুন বিষয় শেখার ক্ষেত্রেও মস্তিষ্কের কগনিটিভ অংশে অসঙ্গতি দেখা দেয় যা দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা তৈরি করতে পারে।

গবেষকরা জানিয়েছেন, আমাদের ২৪ ঘন্টার সারকেডিয়ান রিদম নামের দেহঘড়ি প্রতিদিন অল্প পরিমাণে নতুন করে শুরু হয়। যখন কম সময়েই বিভিন্ন টাইম জোন এর মধ্যে ভ্রমণ করা হয় তখন দেহঘড়ি ঠিকমতো মানিয়ে নিতে পারে না। ফলে জেট ল্যাগের সৃষ্টি হতে পারে। জেট ল্যাগের ফলে মস্তিষ্কের অসামঞ্জস্যের পাশাপাশি গ্যাস্ট্রোইনটেনশনাল সমস্যা, ডায়াবেটিক সমস্যা বৃদ্ধি, হার্টের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, ক্যান্সার এমনকি সন্তান জন্মদান ক্ষমতাও কমে যেতে পারে।
গবেষকরা জেট ল্যাগ সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য ১ দিনের সম্পূর্ণ বিশ্রাম নেবার পরামর্শ দিয়েছেন। আর যারা রাতের শিফটে কাজ করেন এবং স্বাভাবিক দিনরাতের সিডিউল মেনে চলতে পারেন না তারা আলো বা শব্দ প্রবেশ করতে না পারে এমন ঘরে ঘুমিয়ে জেট ল্যাগ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

বিশ্বের ডেটা স্টোরেজ ২৯৫ এক্সাবাইট

বিশ্বের ডেটা স্টোরেজ ২৯৫ এক্সাবাইট
সম্প্রতি গবেষকরা ১৯৮৬ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত ডিজিটাল আকারে জমা রাখা মোট ডেটার পরিমাণ হিসেব করেছেন। গবেষকদের হিসেব অনুযায়ী সংগৃহীত মোট ডেটার পরিমাণ ২৯৫ এক্সাবাইটস। খবর বিবিসি অনলাইন-এর।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, গবেষকরা এই ডেটা হিসেব করতে কম্পিউটার, ডিভিডি, বইসহ ৬০টি প্রযুক্তির ডেটা হিসেব করেছেন।
কম্পিউটারে তথ্য জমা রাখার হিসেব করা হয় কিলোবাইট, মেগাবাইট, গিগাবাইট ক্রমে। এরপর টেরাবাইট, পেটাবাইট এবং এক্সাবাইট। ১ এক্সাবাইট সমান ১ বিলিয়ন গিগাবাইট।
গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে সায়েন্স সাময়িকীতে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, যে পরিমাণ ডেটা জমা আছে তা যদি বই আকারে রাখা হয় তবে তা যুক্তরাষ্ট্র বা চীনের মতো দেশকে তিনটি স্তরে ঢেকে ফেলবে। এ ছাড়াও, সিডিতে এই পরিমাণ ডেটা জমা রাখা হলে এবং সেই ডিস্ক পরপর সাজানো হলে সেটি চাঁদের দূরত্বের সমান হবে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, ২০০৭ সাল পর্যন্ত শতকরা ৯৪ ভাগ ডেটা ডিজিটাল করে রাখা হয়েছে।

আসছে স্বপ্ন ধরার যন্ত্র

আসছে স্বপ্ন ধরার যন্ত্র
স্বপ্নে আমরা যা দেখি তা প্রায়ই ভুলে যাই। সম্প্রতি মার্কিন এক গবেষক দাবী করেছেন স্বপ্ন রেকর্ড করে রাখতে পারবে এবং তার ব্যখ্যাও দিতে পারবে এমন ডিভাইস তৈরি করা সম্ভব। আর সে লক্ষেই এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি । খবর বিবিসি অনলাইনের।

সংবাদমাধ্যমটির বরাতে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের গবেষক ড. মোরান সার্ফ মস্তিষ্কের বিভিন্ন স্তরের কাজকর্ম রেকর্ড করতে পারে এমন একটি ডিভাইস তৈরির প্রকল্পে কাজ করছেন।

ড. মোরান সার্ফ তার গবেষণার বিষয়টি জানিয়েছেন নেচার সাময়িকীতে।

গবেষক ড. মোরান সার্ফ জানিয়েছেন, স্বপ্ন রেকর্ড এবং ব্যাখা করার এই ডিভাইসটি তৈরির উদ্দেশ্য হলো মানুষ কেনো এবং কিভাবে স্বপ্ন দেখে সেটিই তুলে ধরা। স্বপ্নে মানুষ কি দেখে বা সেই স্বপ্নের অর্থই বা কি তা যুগ যুগ ধরেই মানুষ জানার চেষ্টা করেছে। প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতায় স্বপ্নকে ঈশ্বরের কোনো বার্তা বলেও মনে করা হতো।

গবেষক আরো জানিয়েছেন, বর্তমান সময়ে স্বপ্ন দেখার বিষয়টিকে মনোবিদরা অবচেতন মনের খেয়াল হিসেবে বর্ণনা করেন। এইজন্য তারা কি স্বপ্ন দেখে তা কেবল জেগে ওঠার পর তাদের নিকট থেকে শুনতে হয়। এই ডিভাইসটির বদৌলতে স্বপ্ন নিজে থেকেই রেকর্ড হয়ে যাবে।
বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকম/মিন্টু/এইচবি/অক্টোবর ২৮/১০

ত্রিমুখী যুদ্ধে মুখোমুখি অ্যাপল, মাইক্রোসফট, গুগল

ত্রিমুখী যুদ্ধে মুখোমুখি অ্যাপল, মাইক্রোসফট, গুগল


সাধারণত যুদ্ধে দুই পক্ষ থাকলেও আসন্ন এই প্রযুক্তি যুদ্ধে, পক্ষ তিনটি। এরা যার যার ক্ষেত্রে শীর্ষ পর্যায়ের প্রতিষ্ঠান। সবাই পূর্ণ সচেতন নিজেদের ক্ষমতা আর দুর্বলতা সম্পর্কেও। প্রযুক্তি বিষয়ক সাইট টেক নিউজ ওয়ার্ল্ড জানিয়েছে, এই প্রযুক্তি যুদ্ধের তিন পক্ষ সম্পর্কে। এরা হচ্ছে গুগল, অ্যাপল এবং মাইক্রোসফট। তাদের ভাষায় এটি হতে যাচ্ছে প্রযুক্তির তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ!

সে যুদ্ধ শুরু হবার আগেই আসুন জেনে নেয়া যাক এতে তিন পক্ষের প্রধান অস্ত্র, বড় দুর্বলতা আর সম্ভবানা সম্পর্কে লিখেছেন হাসান বিপুল।

অ্যাপলের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হলো এর যাবতীয় প্রডাক্ট ডিজাইন যেন এর ব্যবহারকারীর প্রয়োজন বোঝে। ছোট্ট একটি উদাহরণ দিলেই বিষয়টি পরিষ্কার হবে। অন্য ব্র্যান্ড বা ক্লোন পিসির বেলায় ইউএসবি পোর্ট থাকে সিপিইউ এর সামনে বা পেছনে। অ্যাপল সেখানে ইউএসবি পোর্ট বসিয়ে দিয়েছে কি-বোর্ডের সঙ্গে। ফলে ইউএসবি ড্রাইভ বা পেন ড্রাইভ লাগানোর জন্য আপনাকে আর সিপিইউ-এর সঙ্গে যুদ্ধ করতে হবে না। হাতের কাছেই পেয়ে যাচ্ছেন সংযোগ। ঠিক এমন সব সুবিধা নিয়ে অ্যাপল আসে যে, প্রথম দর্শনেই আপনি তাতে মুগ্ধ হয়ে যাবেন। এর ফলটি হয়, প্রথম দর্শনেই প্রেমটি পাকাপোক্ত হয়ে যায় ব্যবহারকারীর সঙ্গে।

অপরদিকে অ্যাপলের সবচেয়ে বড় দূর্বলতা সম্ভবত সত্যিকার দুর্বলতাগুলোকে চিহ্নিত করতে না পারা। আবার চিহ্নিত দুর্বলতাকে আমলে না দেওয়াও তাদের একটি বৈশিষ্ট্য। একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। অ্যাপলের নিজেদের মার্কেটিংয়ের কারণেই এর গ্রাহকরা মনে করেন যে, অ্যাপলের সিকিউরিটি অসম্ভব শক্তিশালী, বলা যেতে পারে রেড হ্যাটের সমকক্ষ।

বাস্তবতা হলো, অ্যাপলের ব্যবহারকারীরা এর প্ল্যাটফর্মের দুর্বলতাগুলো সম্পর্কে আদৌ সচেতন নন। এমনকি, অ্যাপল সিকিউরিটি বিষয়ে কিছু কিছু আপডেট এবং সফটওয়্যার রিলিজ করে বটে, এর অনেকগুলো ফ্রিও পাওয়া যায়। তবে গ্রাহকরা সেগুলোর ব্যাপারে যথেষ্টই উদাসীন। মোট কথা, নিরাপত্তার ফানুস আর এ বিষয়ে আত্মসন্তুষ্টিই হলো অ্যাপলের দুর্বলতা।

অ্যাপলের সামনে এখন যে সম্ভাবনা রয়েছে তা হলো স্মার্টফোন এবং স্মার্টবুক। যতো দিন যাচ্ছে, পিসির সুবিধাগুলো একে একে এসে ঢুকছে স্মার্টফোনগুলোতে। এখন এসব ফোন দিয়ে ই-মেইল করা যায়, অফিস অ্যাপ্লিকেশন যেমন ওয়ার্ড ফাইল, পিডিএফ ফাইল ওপেন করা যায়, এমনকি সিনেমাও দেখা যায়। কাজেই অ্যাপল যদি এখন তাদের আইফোন এবং আইপড-এর প্ল্যাটফর্মের ওপর ভিত্তি করে ছোট স্মার্টবুক বের করে, তবে সেটা অনায়াসে বাজার তৈরি এবং তা দখলে রাখতে পারবে।

তবে অ্যাপলের এখন সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হলো স্টিভ জবসের স্বাস্থ্য। সাম্প্রতিক সময়ে আসলেই তার স্বাস্থ্য ভালো যাচ্ছে না। সমস্যা হচ্ছে, আজ অ্যাপল কম্পিউটারের যে ইমেজ, তার পুরোটাই নির্ভর করে আছে স্টিভ জবসের ওপর।

সোজাসাপ্টা সত্যি কথাটি হলো কেবল অ্যাপলের ভেতরে নয়, বাইরেও স্টিভ জবসের কোনো বিকল্প নেই। স্টিভ জবসের ক্যান্সার দেখা গিয়েছিলো, সেটি সারানো হয়েছে। এরপর দেখা দিয়েছে লিভারের সমস্যা। অ্যাপল সম্পর্কে যারা খোঁজ খবর রাখেন, তারা মোটামুটি ধরেই রেখেছেন, স্টিভ জবস সম্ভবত অবসর নিতে যাচ্ছেন।
স্টিভ জবস অবসরে গেলে তার শুন্যতা কি করে পূরণ হবে তার কোনো দিক নির্দেশনাও টের পাওয়া যাচ্ছে না। জবস ছাড়াও যে অ্যাপল আগের মতোই চমৎকার চলবে এবং এ প্রতিষ্ঠানের উদ্ভাবনী ক্ষমতা আগের মতোই থাকবে, ক্রেতাদের তেমন বিশ্বাস করানোর প্রস’তিও অ্যাপলের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে না। এমনকি, জবস যুক্ত অ্যাপল থেকে জবসমুক্ত অ্যাপলে রূপান্তরেরও কোনো উদ্যোগ নেই বললেই চলে।

এবার আসা যাক গুগলের বিষয়ে। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির দুই ফ্রেশ গ্র্যাজুয়েটের বানানো ওয়েব সার্চ ইঞ্জিন গুগল যখন জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে, তখনো অনেকের কাছেই গুগল ছিল তরুণ মেধার চমৎকার একটি উদাহরণ। এরপর গুগল যখন ছোট ছোট প্যাকেজ বাজারে আনতে শুরু করে, তখন সেটা ছিল সৃজনশীলতা।
শুরুর দশ বছর পর গুগল এখন মোট ১৫৩ টি প্রোডাক্ট বা সার্ভিস প্রোভাইডার। এরই মধ্যে তারা কিনে নিয়েছে প্রযুক্তি বিষয়ক ছোট-বড় মোট ৫৪ টি কোম্পানি। এখন গুগল সম্পর্কে সম্ভবত একটি বিশেষণই খাটে, সেটি হলো মহীরুহ। সেই গুগল যখন ঘোষণা দেয় যে, তারা পার্সোনাল কমপিউটারের জন্য অপারেটিং সিস্টেম বাজারে ছাড়বে, তখন সম্ভ্যাব্য ভবিষ্যত বিষয়ে চিন্তা বাদ দিয়েই বলা যায়, তারা এক নম্বর পজিশনে যাবার জন্যই আসছে। ইতোমধ্যেই মাইক্রোসফটকে হাটিয়ে দিয়ে গুগল দখল করে নিয়েছে বিশ্বের এক নম্বর ব্র্যান্ডের পজিশন।

গুগলের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো, অনলাইন বিজ্ঞাপনের একচেটিয়া কারবার। ওয়েব নির্ভর বিজ্ঞাপনের প্রধান অংশ এখন গুগলের দখলে। সেখান থেকে তারা যে কাড়ি কাড়ি ডলার পায় সেটার একটা অংশ তারা খরচ করছে সফটওয়্যার ডেভেলপ করার কাজে। সেই সফটওয়্যার তারা ফ্রি বিলি করে।
কেউ যদি তার প্রডাক্ট মুফতে দিয়ে দেয়, তবে তার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করা অসম্ভব কঠিন। গুগল নতুন যে অপারেটিং সিস্টেম বানাবে, সেটিও তারা ফ্রি দেবে। গুগলের এই প্রোডাক্টের প্রথম এবং সবচেয়ে বড় টার্গেট মাইক্রোসফট। যদি গুগলের অপারেটিং সিস্টেম ইউজার ফ্রেন্ডলি হয় বা জনপ্রিয়তা পায়, সেটি সম্ভবত ধস নামাতে যাচ্ছে মাইক্রোসফটের সাম্রাজ্যে।

গুগলের দুর্বল দিক কোনটি? যেটি গুগলের সবল দিক, সেইটি এর দুর্বল দিকও। সেটি হচ্ছে ফ্রি সফটওয়্যার। সারা বিশ্বেই একটি সাধারণ বিশ্বাস আছে যে, ফ্রি জিনিস মানেই নিম্নমানের পণ্য বা জাঙ্ক। এখন সমস্যা হচ্ছে গুগলের ১৫৩ টি প্রোডাক্টের মধ্যে ভালো-মন্দ সবই আছে। ফলে নতুন যে প্রোডাক্ট আসবে তার সম্পর্কে গ্রাহক অতি উচ্চ ধারণা নিয়ে অপেক্ষা করবেন, এমনটি নাও হতে পারে।

তবে, বিশাল ঘটনাটি যদি ঘটেই যায়, অর্থাৎ গুগল যদি মাইক্রোসফটের সাম্রাজ্য দখল করতে সক্ষম হয়, তবে সেটি হবে গুগল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অর্জন। এটি এখন পর্যন্ত গুগলের সবচেয়ে বড় সুযোগও বটে।

মাইক্রোসফটের অবস্থান দখল করার চেষ্টা অ্যাপলেরও আছে, তবে অ্যাপল যথেষ্টই দামী। সেই দিক থেকে গুগলের ক্রোম অপারেটিং সিস্টেম থাকছে সাধ্যের মধ্যে এবং তারচেয়েও বড় কথা এটি নানা ধরনের হার্ডওয়্যার এবং প্ল্যাটফর্ম সাপোর্ট করবে। ফলে গুগলের পক্ষে সম্ভব হবে অ্যাপলকে সাইডবেঞ্চে বসিয়ে রেখেই মাইক্রোসফট হন্তারকের দাবীদার হওয়া।

তবে গুগলের সমস্যা হলো তাদের নির্দিষ্ট ফোকাস এখনো টের পাওয়া যাচ্ছে না। তার চেয়েও বড় কথা, গুগল যে ইমেজ তৈরি করেছে তাতে মনে হয় তারা এক সঙ্গে অনেক কাজ করে ফেলতে চাইছে। সেই অনেকগুলো কাজ বেশ কিছু আবার অসম্পূর্ণ অবস্থায় পৌছাচ্ছে গ্রাহকের ডেস্কটপে।

লোকজন কেবল দাম হিসেব করেই পণ্য কেনে না। তারা মিলিয়ে দেখবে গুগলের ফ্রি পণ্যের তুলনায় টাকা দিয়ে কেনা মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ যদি বেশি আউটপুট দেয়, তবে পরিস্থিতি মাইক্রোসফটের প্রতিকুলে যাবার সম্ভবনাই কম।

মাইক্রোসফটের সবচেয়ে বড় ক্ষমতা হলো এর যে বিশাল পসরা সাজানো আছে তা একটি অন্যটির সঙ্গে সম্পর্কিত। ফলে কোনো না কোনো ভাবে আপনাকে একাধিক মাইক্রোসফট পণ্যের গ্রাহক হতেই হবে। খেয়াল করলে দেখা যায়, মাইক্রোসফটের একাধিক পণ্য মিলে একটি স্বাধীন প্রডাক্টলাইন তৈরি করে। মাইক্রোসফটের মতো এতো ইন্টিগ্রেটেড পণ্যে এতো বড় রেঞ্জের সাপোর্ট সম্ভবত পৃথিবীর আর কোনো কোম্পনি দেয় না। এ বিষয়টি কেবল যে এ প্রতিষ্ঠানের টিকে থাকার নিশ্চয়তা বাড়ায় তা না, এটি অপর দুটি প্রতিষ্ঠানের তুলনায় মাইক্রোসফটকে দৌড়ে অনেকটা এগিয়েও দেয়।

মাইক্রোসফটের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হলো, যারা এ প্রতিষ্ঠানটির পণ্যের ওপর নির্ভর করে, তাদের কথা এর কান পর্যন্ত পৌছে না। মাইক্রোসফট যা বানিয়ে দেয়, গ্রাহকদের তাই নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়। অথচ এ কোম্পানিটির অসংখ্য সম্ভাবনা আছে গ্রাহকদের সন্তুষ্টি অর্জন করার এবং এর সমালোচকদের আপসেট করার। মোদ্দা কথা, গ্রাহক অসন্তুষ্টি হলো মাইক্রোসফটের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি। যে ঝুঁকি এড়াতে পারলে তাদের বিক্রী অনেক বাড়ানো যেতো।

এই আলোচ্য ঝুঁকি ঠিকমতো সামাল দেয়া সম্ভবত মাইক্রোসফটের সবচেয়ে বড় সম্ভাবনা। কয়েক দশকের অর্জিত সাফল্যে এই প্রতিষ্ঠানের যে শক্ত ভিত্তি তৈরি হয়েছে, সেটি আরো সফলভাবে ব্যবহার করতে পারলে তা একদিকে যেমন অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য মার্কেটে ঢোকা অসম্ভব কঠিন করে দেবে, তেমনি আরো কয়েক দশক নিশ্চয়তা দেবে এ প্রতিষ্ঠানটিকে রাজত্ব করার।

আলোচিত প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রত্যেকেরই অনেক ভালো দিক রয়েছে, পণ্য রয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে সমস্যাও। যুদ্ধ এখনো শুরু হয়নি। কাজেই ফলাফল নিয়ে ভবিষ্যৎবাণীও এখনই করা যাচ্ছে না। তবে এটুকু নিশ্চিত, পজিটিভ বিষয়গুলো বজায় রেখে নিজেদের দুর্বলতা যে প্রতিষ্ঠানটি যতো দ্রুত, যতো সফলভাবে কাটিয়ে উঠতে পারবে, তারাই আগামী দশক পৃথিবী শাসন করবে।
বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকম/এইচবি/এইচআর/২৬ আগস্ট/০৯

মানুষের ১০ আচরণ

মানুষের ১০ আচরণের কার্যকারণ আবিষ্কার
মানুষের মধ্যে বুদ্ধির তাড়না বা বিবেকের দংশন যেমন আছে তেমনি নিজের বা অপরের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে এমন প্রবৃত্তিও লুকিয়ে আছে। মানুষের মধ্যেই লুকিয়ে থাকা এসব নেতিবাচক এবং ধ্বংসাত্বক প্রবৃত্তির জন্য কে দায়ী আর মানুষই মধ্যে ভালো এবং খারাপের এই সহাবস্থান কেনো সেই অজানা তথ্যই বের করতে পেরেছেন গবেষকরা। গবেষকদের দেয়া তথ্য নিয়ে সম্প্রতি মানুষের ধ্বংসাত্মক কাজের পেছনে লুকানো গোপন সেই শত্রুর পরিচয় প্রকাশ করেছে লাইভ সায়েন্স অনলাইন । মানুষের ধ্বংসাত্মক সেই ১০ টি আচরণ নিয়েই এবারের ফিচার।
গল্পবাজি
গবেষকেরা দাবি করেছেন, বিবর্তন প্রক্রিয়ার ফলেই মানুষ অন্যের সঙ্গে গালগল্প করতে এবং একে অন্যের খুঁত বের করে অভ্যস্ত। মানুষের মধ্যে একে অন্যের দোষ খুঁজে বেড়ানোর এই প্রক্রিয়াটা বিবর্তন প্রক্রিয়ায় আসার ফলে এই ঘটনায় মানুষের মধ্যে কোন দুঃখবোধ জাগে না।

গবেষক রবিন ডানবার জানিয়েছেন, ‘বেবুনদের একে অপরের লোম বেছে দেবার মতো আচরণগুলোকে সামাজিক বন্ধন শক্ত করার উপায় বলে চিহ্নিত করা হয়। কিন্তু মানুষের ক্ষেত্রে এই আচরণের আরও বেশি বিবর্তন ঘটেছে, তাই আমরা একে অপরের সমালোচনায় ঘন্টার পর ঘণ্টা আঠার মত লেগে থাকতে পারি। এই আচরণ গুলো সবাই জন্মের পর কোন না কোন ভাবে অন্যের কাছ থেকে শেখে।’

গবেষণায় আরও জানা গেছে, মানুষ গল্পবাজ হবার কারণেই মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি হয়। তখন বিভক্ত মানুষ ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করতেই কাজ করে।

গবেষকরা জানিয়েছেন, সমালোচনার ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময় সঠিকভাবে সত্যকে তুলে আনার উদ্দেশ্য থকে না। এতে কেবল সমালোচনা বা দোষ ধরার জন্যই সমালোচনা করা হয়। সমালোচনায় নানা বিষয় বানিয়ে যেমন বলা হয়, অনেক সময় তৃতীয় কারো দ্বারা প্রভাবিত হয়েও কেউ কেউ এমন গর্হিত কাজটি করে মানুষ।
জুয়া, বাজি ধরা
গবেষকরা জানিয়েছেন, জুয়া বা বাজি ধরার বিষয়টিও আমাদের জিনগত। আমাদের নিউরনের মধ্যেই খেলে বেড়ায় জুয়া বা বাজি ধরার মতো নেতিবাচক কাজের উপলক্ষ্য। গবেষকরা আরো জানিয়েছেন, বানরেরাও বাজি ধরতে পারে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, সামান্য জুস পাবার আশায় তারা তাদের হাতের কাছে থাকা ভালো খাবার ছেড়ে দিতে প্রস্তুত থাকে। নিউরন সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাথার ভেতরকার জিতে নেওয়া সম্পর্কিত সার্কিট কোন কিছু জিতে নেবার প্রেরণা হিসেবে কাজ করে বা জিতে নেবার ইচ্ছা বাড়াতে সহায়তা করে। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির গবেষক লুক ক্লার্ক জানিয়েছেন, ‘কোন বিশেষ কারণে জুয়া বা বাজিতে হেরে যাওয়া আরও বেশি করে বাজি ধরতে উষ্কানি দেয়।’

দুশ্চিন্তা
গবেষকরা জানিয়েছেন, দুশ্চিন্তা হার্টের সমস্যা বাড়ায় এমনকি এর ফলে ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। এমনকি চূড়ান্ত হতাশার কারণে মানুষ আত্মহত্যা পর্যন্ত করে বসে। আধুনিক জীবনধারণ পদ্ধতিই এর কারণ হতে পারে বলে গবেষকরা আশংকা করছেন। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার মতে, বিশ্বজুড়ে ছয় লাখেরও বেশি জনকে সপ্তাহে ৪৮ ঘন্টার বেশি সময় কর্মক্ষেত্রে কাটাতে হয়। স্মার্ট ফোন, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের মতো আধুনিক অনেক প্রযুক্তির কারণে মানুষ কাজ ও বিশ্রামের সময়টুকু আলাদা করে উপভোগ করতে ভুলে যাচ্ছে।

গবেষকরা আরো জানিয়েছেন, মানুষের কাজের ধরন ছাড়াও বর্তমানের প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে দিচ্ছে তাদের দুশ্চিন্তা।

শরীরে ছিদ্র, ট্যাটু ও নক্সা আঁকা
২০১৫ সালের মধ্যে আমেরিকার শতকরা ১৭ ভাগ মানুষ বিভিন্ন কসমেকিট প্রক্রিয়ায় দেহের বিভিন্ন অংশকে সাজাবে, দেশটির কসমেটিক শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে সম্প্রতি এমন ভবিষ্যতবাণীই প্রচার করা হয়েছে। অন্যদিকে গবেষকরা জানিয়েছেন, কসমেটিক সার্জারির ফলে মানুষের স্বভাবিক চেহারা দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। শরীরের নক্সা আঁকা, ট্যাটু করার চর্চা কিবদন্তীর হলেও এত বৈচিত্র্য ছিলো না। আগেকার দিনে গোত্র পরিচয়, ধর্মীয় কারণ, পদ মর্যাদা, ক্ষমতার চিহ্ন হিসেবে লোকে গায়ে ট্যাটু বা বিভিন্ন নক্সা আঁকত। কিন্তু এখন কেবল দেহের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্যই এটা করা হচ্ছে বলে গবেষকদের মত।

ভয় দেখানো
এক জরিপে দেখা গেছে, স্কুল পড়–য়া শিশুদের অর্ধেকেরই ভয় পাবার অভিজ্ঞতা রয়েছে। ২০০৯-এ ইউরোপের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসার পর কোনো না কোনোভাবে ভয়ের শিকার হয় এমনকি তাদের কম বেশি সবাই আবার নিজের বাড়ি থেকেও ভয় পায়। গবেষকরা জানিয়েছেন, ভয়ের এই উৎপত্তি আসলে পরিবার থেকেই।

এক গবেষণায় দেখা গেছে, আমেরিকার ৩০ ভাগ অফিসে বস বা সহকর্মীদের দ্বারা আতঙ্কের শিকার হয়েছেন শ্রমিকেরা। গুজব, চাকরি হারাবার ভয় ছড়িয়ে এই ভয়ের সৃষ্টি করা হয়েছে তাদের মনে।

অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সারাহ ট্রেসি জানিয়েছেন, ‘উচ্ছৃক্সখলতা থেকেই এই ধরনের ভয় দেখাবার মতো আচরণের জন্ম।’

মিথ্যা বলা
মানুষের মিথ্যা বলার কারণও বের করেছেন গবেষকরা। গবেষকরা জানিয়েছেন, মিথ্যা বলার সঙ্গে মনের সম্পর্ক রয়েছে। ম্যাসাচুসেটস ইউনিভার্সিটির গবেষক রবার্ট ফেল্ডম্যান জানিয়েছেন, শতকরা ৬০ ভাগ মানুষই কথা বলার সময় প্রতি ১০ মিনিটে অন্তত একটি মিথ্যা কথা বলেন।’ তবে, গবেষকরা আরো জানিয়েছেন, ‘মিথ্যা বলা কিন্তু ততোটা সহজ কাজ নয়। সত্যি বলার চেয়ে এতে ৩০ ভাগ বেশি সময় লাগে। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, এখন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিংসহ ই-মেইলে মিথ্যা বলা হয় সবচেয়ে বেশি।

ধোঁকা দেওয়া
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠান পো জানিয়েছে, মানুষের বেখাপ্পা আচরণগুলোর মধ্যে ধোঁকা দেওয়ার বিষয়টি সবচেয়ে আকর্ষণীয়।’ জরিপে দেখা গেছে, প্রতি পাঁচজন আমেরিকানের এক জন মনে করে ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়া নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য, অথবা তাদের মতে এটা আসলে কোনো নৈতিক বিষয়ই নয়। আর জরিপ মতে, দেশটির দশভাগ লোক কোনো না কোনো ভাবে নিজের বউকেই ধোঁকা দিয়ে বেড়ায় । গবেষণায় দেখা গেছে, উঁচু দরের নৈতিকতা পোষণ করেন এমন লোকেরা আবার জঘন্য এই ধোঁকাবাজির শিকার হয়ে আত্মহত্যাও করেন। তবে এমন শক্ত প্রকৃতির লোকেরাও আবার ঘুরিয়ে হলেও বিশ্বাস করেন, প্রয়োজনীয় মুহুর্তে ধোঁকাবাজি নৈতিকভাবে মেনে নেবার মতো একটি আচরণ।

চুরি করা
কথায় বলে, চুরি বিদ্যা বড়ো বিদ্যা যদি না পড়ো ধরা। কিন্তু গবেষকরা জানিয়েছেন, এই চুরি বিদ্যাটা আসলে বংশগত হবার আশংকাই বেশি। গবেষকরা জানিয়েছেন, নিজের দরকারের কারণেই কিন্তু চোরেরা চুরি করে। কিন্তু ক্লিপ্টোম্যানিয়াকরা চুরি করে মজা লোটার জন্যে। ৪৩ হাজার মানুষের মধ্যে চালানো এক জরিপের ফল বলছে, তাদের এগারোভাগ কোনো না কোনোভাবে একবারের জন্য হলেও দোকানে গিয়ে চুরি করেছে।

সন্ত্রাস
মানুষের জানা ইতিহাসের মধ্যে সন্ত্রাস আর নৈরাজ্যের খোঁজ পাওয়া যায় হরহামেশাই। গবেষকদের দাবি, জিনগত বৈশিষ্ট্য এবং প্রাপ্তির অনুভূতি মাথার ভেতর জট পাকিয়ে সন্ত্রাস চালাতে বাধ্য করে। ২০০৮ সালের এক গবেষণার ফল বলছে, মানুষ যৌনতা, খাবার ও ড্রাগস নেবার মতোই সন্ত্রাস করার জন্য ব্যগ্র থাকে। সাইকো ফার্মাকোলজি জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানা গেছে, মস্তিষ্কের কিছু কোষ সন্ত্রাস ঘটাবার জন্য ব্যগ্র থাকলেও এর পেছনে আসলে থাকে অন্য কোনো প্রাপ্তির আশা।

টেনেসির ভেন্ডারবিল্ট ইউনিভার্সিটির গবেষক ক্রেগ কেনেডি জানিয়েছেন, ‘সকল মেরুদণ্ডীদের মধ্যেই আক্রমণাত্বক আচরণ লক্ষ্য করা যায়। সঙ্গী, বাসস্থান এবং খাবারের মতো গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ আয়ত্তে আনা ও ধরে রাখার জন্য এর সন্ত্রাস চালায় তারা। এজন্য দায়ী ডোপামিন নামের হরমোন।
বদ অভ্যাস
মানুষ অভ্যাসের দাস। গবেষকরা জানিয়েছেন, ক্রমাগত বদ অভ্যাসের লালন করাটাই বদ অভ্যাস তৈরিতে প্রধান ভূমিকা রাখে। অনেক পরিচিত বদ অভ্যাসের সম্ভাব্য ঝুঁকি সম্পর্কে জানার পরও লোকজনের পক্ষে তা পুরোপুরি ত্যাগ করা কষ্টকর হয়ে দাড়ায়।

মানুষের বদ অভ্যাসের পেছনে লেগে থাকার কারণ হিসেবে গবেষকরা জানিয়েছেন, মানুষের মধ্যেই লুকিয়ে থাকা অবাধ্যতা, সত্যিকারের ঝুঁকি বুঝতে না পারা, এ বিষয়ে ব্যক্তিগত অনুভূতি এবং আসক্তির ফলেই বদভ্যাসের জন্ম। এর জন্য মানুষের কিছু খারাপ জিনই দায়ী।
বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকম/সুমন/মিন্টু/এইচবি/এইচআর/জানুয়ারি ০৪/১১

রোবেরতো বোলানিও

শেষ সাক্ষাৎকারে রোবেরতো বোলানিও
– লেখক না হলে গোয়েন্দা হতাম
লাতিন আমেরিকার অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক রোবেরতো বোলানিওকে বলা হয় বোর্হেসের যোগ্য উত্তরসূরি। রোবেরতো বোলানিওর জন্ম ১৯৫৩ সালের ২৮ এপ্রিল চিলির সান্তিয়াগোতে। বাবা ছিলেন ট্রাকচালক আর মা স্কুলশিক্ষিকা। ১৯৬৮ সালে তাঁদের পরিবার মেক্সিকো সিটিতে চলে যায় জীবিকার অন্বেষণে। বোলানিওর পড়াশোনায় ছেদ পড়ে। তিনি সাংবাদিকতা শুরু করেন, যুক্ত হন বাম রাজনীতির সঙ্গে। চিলির প্রেসিডেন্ট সালবাদর আয়েন্দের নেতৃত্বাধীন সরকারের বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে সহযোগিতার জন্য বোলানিও ১৯৭৩ সালে চিলিতে ফিরে আসেন আর সে বছরই মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীদের সমর্থনপুষ্ট জেনারেল পিনেশে পরিচালিত রক্তক্ষয়ী সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত হন আয়েন্দে। ব্যাপক ধরপাকড়ে বোলানিও গ্রেপ্তার হন। পরে ছাড়া পেয়ে আবার মেক্সিকোতে ফিরে যান। ওখানে কয়েকজন কবিকে সঙ্গে নিয়ে ‘মোবিমিয়েন্তো ইনফ্রার রিয়ালিস্তা’ নামক কাব্য-আন্দোলন গড়ে তোলেন। তাঁদের আরাধ্য ছিল বিট জেনারেশন। খ্যাতনামা মেক্সিকান কবি ওক্তাবিও পাসের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন তাঁরা। বোলানিও ছিলেন কবি, গল্পকার ও ঔপন্যাসিক। তাঁর গ্রন্থগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে: রোমান্টিক ডগ (কবিতা), স্যাভেজ ডিটেকটিভ, আমুলেট, বাই নাইট ইন চিলি, লাস্ট ইভনিংস অন আর্থ, দ্য ইনসাফারেবল গাউশো, দ্য সিক্রেট ইভিল, বিটুইন প্যারানথিসিস ও ২৬৬৬। ২০০৩ সালের ২৮ জুলাই বার্সেলোনায় বোলানিও মারা যান। তখন তাঁর বয়স মাত্র ৫০। তাঁর শেষ সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয় প্লেবয় মেক্সিকো পত্রিকায় সাক্ষাৎকারটি নিয়েছিলেন মনিকা ম্যারিস্টেন। পরে সেটি রোবেরতো বোলানিও: দ্য লাস্ট ইন্টারভিউ অ্যান্ড আদার কনভারসেশন বইয়ে স্থান পায়। ওই সাক্ষাৎকারের একটি অংশ এখানে পত্রস্থ করা হলো। ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন দিলওয়ার হাসান প্রশ্ন: আপনি লেখক না হলে কী হতেন? বোলানিও: লেখক হওয়ার চেয়ে আমি খুনখারাবি তদন্তের গোয়েন্দা হতে বেশি আগ্রহ পোষণ করতাম। এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। কোথাও হত্যাকাণ্ড-টাণ্ড ঘটলে সিধে পৌঁছে যেতাম অকুস্থলে, হোক সে রাত কিংবা দিন ভূতটুতের ভয় না করেই। হয়তো সে সময় সত্যিকার একটা উন্মাদনা কাজ করত। প্রশ্ন: শত্রুদের মুখ থেকে বিস্তর সমালোচনা শোনার পর কি আপনার কি অনুভূতি হতো? বোলানিও: কান্না পেত ভীষণরকম, খিদে মরে যেত, কম সিগারেট খেতাম, খেলাধুলায় মগ্ন হতাম, হাঁটতে যেতাম সমুদ্রের পাড়ে; ওই জায়গাটা ছিল আমার বাড়ি থেকে ৩০ মিটারেরও কম দূরে আর গাঙচিলদের প্রশ্ন করতাম, যাদের পূর্বপুরুষেরা মাছ খেত আর তারা খেত ইউলিসিস: আমি কেন সমালোচনার বাণে বিদ্ধ হব, কেন? আমি তো তোমাদের কোনো ক্ষতি করিনি! প্রশ্ন:কোন পাঁচটি বই আপনার জীবনে গেঁথে আছে? বোলানিও: সত্যি কথা বলতে কী ওই পাঁচ বই পাঁচ হাজার বইয়ের চেয়েও বেশি কিছু। বর্শার ডগার মতো নামগুলো কেবল বলে যাই: দোন কিহোতে—সের্বান্তেস; মবি ডিক—মেলভিল। বোর্হেসের রচনা সমগ্র, হপসকচ—কোর্তাসার, আ কনফিডেরাসি অব ডান্সেস—টুলি। আরও কয়েকখানা বইয়ের নাম করতে চাই: নাজদা—ব্রেতোঁ, দ্য লেটার্স অব জাক ভাস, এনিথিং উবু—জারি, লাইফ: আ উয়ুজার্স ম্যানুয়াল—পার্সি, দ্য ক্যাসেল ও দ্য ট্রায়াল—কাফকা, আফোরিজমস—লিশটেনবার্গ, দ্য ট্রাকটাটাস—উইটজেনস্টেন, দ্য ইনভেনশন অব মোরেল—বিঅয় ক্যাসারেস, দ্য স্যাটাইরিকন—পেট্রোনিয়াস, দ্য হিস্ট্রি অব রোম—টিটো লিভিও ও পেনসিস—পাস্কাল। প্রশ্ন: কে বেশি প্রিয়জন লেনন, লেডি ডি না এলভিস প্রিসলি? বোলানিও: দ্য পোগুয়েস কিংবা আত্মহত্যা। কিংবা বব ডিলান। বেশ ভালোকথা, ভানটান না করেই বলে ফেলি নামটা—চিরকালের এলভিস প্রিসলি। এলভিস আর তার স্বর্ণ-কণ্ঠ, কাঁধে শেরিফের ব্যাজ, একটা মুসটাং গাড়ি চালাচ্ছেন আর গলাধঃকরণ করেছেন বেশ কিছু পিল… প্রশ্ন: দুনিয়ার সবচেয়ে সুন্দরীকে দেখেছেন কখনো? বোলানিও: হ্যাঁ, দেখেছি। সেটা ১৯৮৪ সাল। একটা দোকানে কাজ করতাম। সেদিন ভিড় ছিল না দোকানে, এক রকম ফাঁকাই ছিল বলা যায়—সে সময় এক হিন্দু মহিলা দোকানে ঢুকলেন। তিনি দেখতে ছিলেন রাজকুমারীর মতো, কিংবা তার চেয়েও সুন্দরী। তিনি কিছু পোশাক আর অলংকার কিনলেন। একটা পর্যায়ে এসে আমার মনে হলো, মূর্ছা যাব। তাঁর গায়ের রং ছিল তামাটে, দীর্ঘ কেশ আর তাঁর অন্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গও চমৎকার। যাকে বলে চিরন্তন সুন্দরী। দাম নেওয়ার সময় ভীষণ বিব্রত হলাম। মনে হলো তিনি যেন আমার মনের কথা বুঝতে পেরেছেন, আর আমাকে ভাবতে মানা করছেন। আমার দিকে তাকিয়ে হাসলেন। তারপর চলে গেলেন তিনি। জীবনে আর কোনো দিন দেখা হয়নি তাঁর সঙ্গে। কখনো কখনো আমার মনে হয়েছে, তিনি ছিলেন দেবী কালী। ওই হিন্দু মহিলা দুনিয়ার সবচেয়ে সুন্দরী নারীই শুধু ছিলেন না—তিনি ছিলেন—খুবই নম্র আর বিনয়ী প্রশ্ন: মৃত্যুর আগে কী কী করে যেতে চান? বোলানিও: বিশেষ কিছু নয়। প্রথম কথা হচ্ছে—আমি মরতে চাই না। কিন্তু আজ হোক কাল হোক মৃত্যু এসে হাজির হবে। প্রশ্ন: মরণোত্তর কাজ আপনার ভেতর কেমন অনুভূতির জন্ম দেয়? বোলানিও: মরণোত্তর কথাটা শুনলেই রোমান গ্ল্যাডিয়েটরদের (মল্লযোদ্ধা—যারা হিংস্র পশুদের সঙ্গে লড়ত) কথা মনে করিয়ে দেয়; একজন গ্ল্যাডিয়েটর যাকে কখনো পরাস্ত করা যায়নি। অন্তত একজন দরিদ্র মরণোত্তর তাই বিশ্বাস করতে চায়। এটা তাকে সাহস জোগায়…।