ঢেউ ও তার সমালোচন

বিক্রমপুর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদের মুখপত্র ‘ঢেউ’ নিয়েই আমার যত পর্যালোচনা ও গঠনমূলক সমালোচনা। কারো তল্পীবাহক হয়ে নয়, নিছক বাতবরণ-বাগাড়ম্বর করাও নয়, কোনো পুরস্কারের লোভেও নয়, তিরস্কারে লাঞ্ছিত হয়েও নয়, কারো সম্মানহানির উৎসবে মেতে উঠতেও নয়, সংগঠনের ১০ বছরের প্রয়াসকে নিন্দা জানাতেও নয়, নিরেট বিবেকের তাড়নায় অর্থাৎ মানবিক গুণে ত্রৈমাসিক ম্যাগাজিনের সম্পাদকের ভুল ভ্রান্তি শোধরানো ও সংবিৎ ফিরানোর অভিপ্রায়ে। কবির ভাষায় সময় তো দাড়িয়ে থাকে না- সে গড়িয়ে চলে মাড়িয়ে যায় এবং কালের আবর্তে হারিয়ে যায়। এই হারানোর ইতিহাস লেখার জন্য কেউ কাউকে নির্দেশ দেয়নি। সে আপনা থেকেই কলম তুলে নিয়ে লিখতে থাকে চলার কথা, বলার কথা, সুখ-দুঃখ, কান্না-হাসির কথা। তবে আমি আজ আমার প্রিয় বিক্রমপুরের সাংবাদিক, সাহিত্যিক, কলামিস্ট, লেখক, সমাজ ও পরিবেশ কর্মী ভাই ও বোনদের কাছে সম্প্রতি হাতে পাওয়া ঢেউ তা নিয়েই আমার যত কথা, যত আলোচনা।
যে কোন কাজে উৎকর্ষ লাভের জন্য চাই তীক্ষ্ণ মনযোগ, কাজের গুরুত্ব অনুধাবন, আন্তরিকতা, নিষ্ঠা, দায়িত্বশীলতা, দূরদর্শিতা, নিয়মানুবর্তিতা, সময়ানুবর্তিতা ও ধারাবাহিকতা। সাহিত্য ম্যাগাজিনকে অপূর্ব, অতূলনীয় ও মানসম্মত করার জন্য প্রাজ্ঞ ও বিদগ্ধদের সহযোগিতা, উৎসাহ, প্রেরণা ও উদ্বুদ্ধ করণ একান্ত কাম্য। তাছাড়া যে যে বিষয়ে কাজ করতে আগ্রহী সে কাজ সম্পর্কে তার বিশেষ বুৎপত্তি ও যথেষ্ট অভিজ্ঞতার প্রয়োজন। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে সৃজনশীনাতার ক্ষেত্রে তার কোনমতেই নিজে নিজেই অভিজ্ঞ বনে যাওয়ার অবকাশ নেই। অন্যথায় সে বিষয়ে দক্ষ, যোগ্য ও অভিজ্ঞদের অনুসরণ, অনুকরণ করে, পরার্শ নিয়ে ও তাদের সাথে মিশে সেই শূণ্যতা পূরণ করার অবারিত সুযোগ রয়েছে বলে মনে করি। নিয়মিত পাঠভ্যাস যে কোন সম্পাদক, সাহিত্যিক, কলামিস্ট, লেখক ও ভাবুকের অজ্ঞতা, ভুল-ভ্রান্তি ও ধারণার অস্পষ্টতাকে দূর করে। কোন কিছুকে আরও সুখপাঠ্য ও চমৎকার করার জন্য অবশ্যই একগুঁয়েমী, আলস্য, অধৈর্য, তারাহুরাভাব, লোভ, হীনমন্যতা, দাম্ভিকতা, ভয় ও গ্রন্থবিমুখতা ত্যাগ করতে হবে।
চির সত্য কথা হল কুরআন ছাড়া পৃথিবীতে নির্ভুল ও নিখুত বলে কিছু নেই। তবে কিছু কাজে দৃষ্টিগোচর হওয়ার মত কিছু ভুল না শোধরালেই নয়। বিষয়টির ব্যাখ্যা শুরু করতে চাই। শুরুটি ঠিক বুকের ভেতর দুরু দুরু শব্দে সঙ্গীতের ধ্বনির মতো বেজে উঠে।
ঢেউ এর আগস্ট সংখ্যাটি হাতে পেয়ে সযত্নে সোকেসে রেখে দেই। আত্মার দংশনে, বিবেকের তাড়নায় ও লেখালেখি চালিয়ে যাওয়ার অভিলাষে ইচ্ছা-অনিচ্ছায় বিরতি নিয়ে কয়েকবারে পুরো সংখ্যাটিই ধৈর্যসহকারে পড়ে শেষ করি। ম্যাগাজিনটির সাথে গত দুই বছর ধরে পরিচিত; তাও সদরে গিয়ে নিজ উদ্যোগে খুঁজতে থাকি বিক্রমপুর থেকে কি কি পত্রিকা, সাহিত্য সাময়িকী ও ম্যাগাজিন বের হয় সেই সুবাদে। আমার ব্যক্তিগত সমীক্ষা, গবেষণা ও অনুসন্ধানে প্রায় ২০টি পত্রিকার নাম বেরিয়ে আসে, যার মধ্যে অনেকগুলিরই রেজিস্ট্রেশন নেই। তার মধ্যে রেজিস্ট্রিকৃত মাসিক বিক্রমপুর নিয়মিত বের হচ্ছে প্রতিষ্ঠাকালীন ১৯৮১ সাল থেকে আজ অবধি। তিনমাস ধরে এই পত্রিকাটি ৬টি উপজেলার সরকারী সব বিভাগ, কিছু চিহ্নিত রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক, লেখক, সাহিত্যিক, সমাজ কর্মী, পরিবেশ কর্মী, ব্যবসায়ী, মাসিক বিক্রমপুরের গ্রাহক ও এজেন্টদের হাতে পৌঁছানো হয়। মুন্সিগঞ্জের কাগজও নিয়মিত বের হয়ে শুধু ৬ উপজেলার টিএনও ও থানার গন্ডি পর্যন্ত সিমাবদ্ধ। এছাড়া বিভিন্ন অকেশনে ব্যপকহারে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী ও বিজ্ঞাপনদাতাদের হাতে দৈনিকটির সংখ্যা চলে যায়। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, এদুটি ছাড়া মুন্সিগঞ্জ থেকে নিয়মিত কোন পত্রিকা, সাহিত্য সাময়িকী বা ম্যাগাজিন বের হয়ে সব উপজেলার দোরগোড়ায় পৌঁছে এমন তথ্য আমার কাছে অনুপস্থিত।
সংখ্যাটি পড়ে প্রথমেই আমার কাছে কয়েকটি ভুল চিহ্নিত হয়। মাসিক বিক্রমপুরের লেখক ও পাঠকদের সাথে তা ব্যক্ত ও শেয়ার না করার লোভ একদম সামলাতে পারছিনা। আর তা হল- ১.ভাল মানের স্থানীয় লেখক (সৈয়দ টিপু সুলতান, নূহ-এ-আলম লেনিন, এমদাদুল হক মিলন প্রমুখ), সাহিত্যিক ও সাংবাদিকের লেখা অনুপস্থিত, ২.ভালভাবে যাচাই-বাছাই ও সম্পাদনা না করেই সংখ্যাটি বের করা হয়েছে, ৩.অন্য জায়গায় প্রকাশিত লেখা এখানে হেডিং পরিবর্তন করে ছাপানোর নজির রয়েছে ও ৪.বানানের ক্ষেত্রে কিছু প্রিন্টিং ও এডিটিং ভুল পরিলক্ষিত হয়েছে। চলতি সংখ্যাটির মান কমানোর পিছনে সবগুলি কারণেরই কমবেশি অবদান রয়েছে।

একজন সম্পাদকের জন্য খুবই লজ্জার বিষয় হচ্ছে অন্য পত্রিকার লেখা নিজেরটিতে প্রকাশ করা। একজন স্থানীয় সম্পাদক ও প্রকাশক হিসেবে নিজ উদ্যোগে স্থানীয় সব পত্রিকার খোজ-খবর নিজ স্বার্থে রাখা উচিত বলে আমি মনে করি। পাঠকের দৃষ্টিতে এখানে তার অনভিজ্ঞতা, অদক্ষ্যতা, অযোগ্যতা, অপরিণামদর্শিতা ও অজ্ঞতাই স্পষ্ট প্রতিয়মান হয়ে উঠেছে। প্রতিনিয়তই যদি এমন হতে থাকে তাহলে তার উদ্দেশ্য পুরোপুরি উবে যাবে। অভিজ্ঞতা অর্জনের অন্যতম উপায় হচ্ছে ভুল (নিজের ভুল অথবা অন্যের ভুল) থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা। আমরা জানি ছোট ছোট ভুল থেকে একটি সময় বড় কোন ভুল বা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। আর ব্যর্থতা হল সফলতার যাত্রাপথে একটু বিরতি মাত্র। অনেকে বলেন ব্যর্থতাই সফলতার ভিত্তি। তবে স্বপ্নচারীদের থেমে গেলে চলবেনা। ধৈর্যসহকারে এই সমস্ত প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করে সফল হওয়াই একজন দক্ষ সম্পাদকের কাজ।
সাহিত্য সাময়িকী ঢেউ এর বর্তমান আগস্ট-১৩ সংখ্যায় লেখকের দৃষ্টিতে মাত্র তিনটি লেখা চমৎকার হয়েছে যা অস্বিকার করার জোঁ নেই। যথা- ১.সালাম আজাদের ভাঙ্গামঠ ও গুরু-শিষ্য সংবাদ, ২.শ্রীনগরের লালা বংশ ও ৩.একটি নষ্ট রাতের কষ্ট । ৬২ পৃষ্ঠার ম্যাগাজিনের ভিতর ৪৮ জন নবীন ও প্রবীণ লেখকের ৫৫ টি লেখা স্থান পেয়েছে। এ সংখ্যায় ২ জন লেখককে ১৮ পৃষ্ঠা না দিয়ে, ৯ জন লেখককে ২ পৃষ্ঠা করে ৯ টি বাছাইকৃত লেখা দেয়া হলে ম্যাগাজিনটির মান আরও সহজবোধ্য, প্রাঞ্জল, রুচিশীল, মার্জিত ও উন্নত হত। ম্যাগাজিনটির স্বকীয়তা বজায় রেখে সম্পাদকের সদিচ্ছায় ভাল লেখে এমন আরো লেখকের লেখা সন্নিবেশিত করা যেত। লেখার সাথে যুৎসই চিত্র বিদ্যমান থাকলে পাঠক সেটি না পড়ে এরিয়ে যাওয়ার দু:সাহাস করত না। সমালোচকের ধারণা মতে সম্পাদকের হীনমণ্যতা না থাকলে পত্রিকাটির গ্রহণযোগ্যতা আরো বৃদ্ধি করা যেত। যেহেতু বিক্রমপুর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদের পক্ষ থেকে বের হচ্ছে তাই ম্যাগাজিনটি কলেবর বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে এই পাঠকের পক্ষ থেকে পরামর্শ হল এখানে স্থান পাওয়া প্রবন্ধ, কবিতা, আলোচনা, ছোট গল্প, ইতিহাস ও উপন্যাসের সাথে যুগের চাহিদার প্রেক্ষিতে নাটক, সায়েন্স ফিকশন, রম্য রচনা, কৌতুক, ধাঁধাঁ, ছোটদের আঁকিঝুকি, প্রতিবেদন, তথ্যচিত্র, নিবন্ধ, কলাম, বিক্রমপুরের বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব ও ঐতিহ্য (যেমন- খোদাই সিন্নি, পিনিস, পালকি, ঢেকি, গস্তি নৌকা, পোড়াগঙ্গা, রজত রেখা, কাজল রেখা ইত্যাদি) সংরক্ষণের জন্য নিয়মিত ঢেউ এ তুলে ধরা উচিত।
ঢেউ এর সম্পাদক ও মাসিক বিক্রমপুরের পাঠকবৃন্দ আমাকে ভুল বুঝে থাকলে ক্ষমা করবেন। আমি চাই মুন্সিগঞ্জ থেকে প্রকাশিত প্রত্যেকটি সাহিত্য সাময়িকী, ম্যাগাজিন ও পত্রিকা নির্ভুল, নিখুত, মার্জিত, মানসম্পন্ন ও সর্বজন গ্রহণীয় হয়ে উঠুক।
২০০৩ সাল থেকে আমি বন্ধুদের খ্যাপানোর জন্য ব্যঙ্গাত্মক কিছু সাহিত্যিক কর্ম খেলাচ্ছলে শুরু করি। সেই থেকে আমার বন্ধুদের মধ্যে অনেকে আজও কবি/সাহিত্যিক বলে সম্বোধন করে। তৎকালে আমার লেখা দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, সাপ্তাহিক সোনার বাংলা, মাসিক আলোর দ্বীপ, মাসিক আদর্শ নারী, মাসিক কিশোর কন্ঠ ইত্যাদিতে প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমানে আমি দৈনিক সংবাদে একজন প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছি। এছাড়া একটি অনলাইন পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টারের দায়িত্ব পালন করছি মাত্র। বিক্রপুরের ঐতিহ্যবাহী মাসিক বিক্রমপুরে কাজ করে অনেক কিছু নতুন করে শিখতে হয়েছে, যেটা আমার অভিজ্ঞতার ঝুলিকে অনেক সমৃদ্ধ করেছে।
বেগার পর্যালোচনা, বিশ্লেষণ ও পরামর্শ দেখে অনেকেই দাঁত কেলিয়ে হি হি করে হাসবে তবুও সেসবে পাত্তা দেয়ার মত মানসিকতা মাসিক বিক্রমপুরের ব্যবস্থাপনা সম্পাদকের একদম নেই। তবে এই লেখা যদি ঢেউ নতুন পথে এগিয়ে নতুন নতুন সংখ্যা এখন থেকে বের হয়ে নিয়মিত সর্বস্তরের পাঠকের হাতে পৌঁছে তাহলে এর মাঝেই আমার স্বার্থকতা খুঁজে পাব।

-ব্যবস্থাপনা সম্পাদক, মাসিক বিক্রমপুর (০১-১০-২০১৩ইং) ঈদ সংখ্যায় প্রকাশিত

Dream বা স্বপ্ন

আমি স্বপ্ন দেখতে ভীষণ পছন্দ করি। আর আমার সাথে কেউ তার স্বপ্ন শেয়ার করলে পুলকিত হই। স্বপ্ন দেখতে পারে আমাদের মাঝে এমন লোক কমই আছে, আর স্বপ্ন দেখাতে পারে তার সংখ্যা আরও কম। স্বপ্ন দেখা আমাদের জন্মগত অধিকার, ভাগ্যের ব্যাপার নয়। স্বপ্ন এমনভাবে দেখতে হবে যাতে আমাদের ঘুম কেড়ে নেয়। স্বপ্ন দেখলেই চুরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই আমরা স্বপ্ন কাউকে চুরি করতে দিব না বা কোন ভাবেই চুরি হতে দিবনা।

যারা স্বপ্ন চোর:-
পরিবার (স্ত্রী, মা-বাবা, ভাই-বোন)
বন্ধু-বান্ধব
কাজিন
পাড়া-প্রতিবেশী
রুমমেট-ক্লাশমেট
কলিগ

যেভাবে স্বপ্ন চুরি হয়:-
যখনই আমরা কোন চিন্তা করি বা স্বপ্ন দেখি তখনই তারা বলতে শুরু করে পাগল হইয়া গেছে। এই সমস্ত পাগলামি বাদ দাও। অবিশ্বাস্য ব্যাপার। অসম্ভব এটি তোমার দ্বারা হবে না। জীবনে কি কম দেখেছি নাকি তুমি এটা পারবে। অনেকে হাসতে থাকে, টিজ করে আর বলে অভিজ্ঞতায় আমার চুল পেকে গেছে, কত দেখলাম তোমার মত। বলে রাখা ভাল, তার মত পাকা চুল ভেড়ার গায়েও আছে তাহলে কি ভেড়া অভিজ্ঞ নয়! স্বপ্ন দেখাটা পাগলামী নয়, না দেখাটাই পাগলামী। যারা স্বপ্ন দেখতে ভুলে গেছে তারাই পাগল।

স্বপ্ন না দেখার পরিণতি:-
কোন জাতি বা দেখের উন্নতি ঘটে না।
হতাশা ও বিপর্যয়/দুর্দশা নেমে আসে।
কর্মপ্রেরণা হারিয়ে ফেলে মানুষ।
মানুষ দরিদ্র হয়ে যায়।
কোন কাজেই সফলতা আসে না।

স্বপ্ন দেখার ফল:-
এন পবিত্র থাকে।
বেচে থাকার একটি কারণ তৈরি হয়।
কাজে নামার উপায় তৈরি হয়।
কাজে ক্লান্তি আসে না অর্থাৎ দীর্ঘদিন কাজ করার অনুপ্রেরণা আসে।
আমাদের ভিশন ক্লিয়ার হয়।
সফলতার ক্ষেত্রে বাধাগুলি দূর হয়।
এনটি-বডি তৈরি হয়।
সফলতা আসে আত্মবিশ্বাস থেকে, আত্মবিশ্বাস আসে অভিজ্ঞতা থেকে, অভিজ্ঞতা আসে অধ্যাবসায় থেকে, অধ্যাবসায় আসে লক্ষ্য থেকে আর লক্ষ্য আসে স্বপ্ন থেকে। বুঝা গেল স্বপ্নই সফলতার কুড়েঘর।

বপ্ন বড় করার জন্য যা করা দরকার:-
ইমাজিনেশন করতে হবে।
মেডিটেশন করতে হবে।
মটিভেশনাল বই পড়তে হবে।
মটিভেশনাল ভিসিডি দেখতে হবে।
অভিজ্ঞ, জ্ঞানী এবং উচু ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষের সাথে মিশতে হবে।
যারা বড় বড় স্বপ্ন দেখে তাদের সাথে মিশতে হবে।
যারা গোছালো, লক্ষ্য-উদ্দেশ্য আছে, পজিটিভ, ক্রিয়েটিভ, ও প্রো-একটিভ তাদের সাথে মিশতে হবে।
বড় ও প্রশস্ত রাস্তায় যেতে হবে।
সমুদ্রে যেতে হবে।
পাহার পর্বতে যেতে হবে।
বড় সমাবেশ, মিছিল, মেরাথন ট্রেনিং ও বড় হাট-বাজারে যেতে হবে।
সেলিব্রেশন প্রোগ্রামে যেতে হবে।
ইনটারনেট সার্স করতে হবে।

Dream বা স্বপ্ন কি?
Dreams are not a matter of chance but a matter of choice- David Copperfield
D=Determination
R=Responsibility
E=Enthusiasm
A=Attainable
M=Measurable

স্বপ্নের প্রকারভেদ:-
স্বপ্ন ২ প্রকার। যথা-
ব্যক্তিগত স্বপ্ন
পেশাগত স্বপ্ন

ব্যক্তিগত স্বপ্ন:-
ঋণ পরিশোধ।
পরিবারের সাথে বেশি সময় দেয়া।
ব্যক্তি স্বাধীনতা।
সময়ের স্বাধিনতা।
আর্থিক স্বাধিনতা।
দেশ-বিদেশে ভ্রমণ।
মৃত্যুর পূর্বে এক লক্ষ বন্ধু তৈরি করা।
ব্যক্তিত্বের বিকাশ।
নেতৃত্ব, প্রভাব অর্থাৎ ক্ষমতা।
সম্মান।
অপরকে সহযোগিতা।
গাড়ি, বাড়ি ও নারী।
সুখ-শান্তি।
ট্রেইনার, মটিভেটর ও নেটওয়ার্কার হওয়া।

পেশাগত স্বপ্ন:-
ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ও লয়ার হওয়া।
সাংবাদিক ও সাহিত্যিক হওয়া।
পুলিশ, র‌্যাব, বিডিয়ার, আর্মি ও গোয়েন্দা অফিসার হওয়া।
শিক্ষক ও প্রফেসর হওয়া।

স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার পদ্ধতি:-
আত্মবিশ্বাসের সহিত নিজের স্বপ্ন নিয়ে কথা বলা।
স্বপ্ন লিখে রাখতে হবে (ডাইরিতে, দেয়ালে, আয়নার সামনে, পড়ার টেবিলে ও বেডরুমে)।
লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ঠিক করতে হবে।
ত্যাগী হতে হবে (অজুহাত, আলস্য, রাগ, ইগু, হীনমন্যতা, গল্প-গুজব, খেলা-ধুলা, মুভি দেখা ও বেশি ঘুম পরিত্যাগ করা)।
প্রতিশ্রুতি, কাজ ও অর্জন করতে হবে।
বিলাসবহুল গাড়ি, মনোরম বাড়ি দেখার পর বলতে হবে ক’দিন পর এরকম আমারও থাকবে।
ভাল লাগার বিষয় ও কেন সফল হব তাও আমাদের লিখে রাখতে হবে।
আমাদের ইচ্ছাগুলি নিয়ন্ত্রণ ও সময় অপচয় রোধ করতে হবে।
গর্বপরি আমাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য, জীবন গড়ার জন্য, সফলতা অর্জনের জন্য একটি অঙ্গিকার থাকতেই হবে। যে জীবনের প্রতি, নিজের কাজের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ, তাকে আমরা বলি প্রতিশ্রুতিশীল। একজন প্রতিশ্রুতিশীল যুবকই পারে সাফল্যের স্বপ্ন দেখতে। কোনও কাজ নিষ্পত্তি করার দৃঢ় অঙ্গীকার নির্মাণ করতে হয় দু’টি স্তম্ভের উপর। সে দুটি হলো সততা ও বিজ্ঞতা। যদি আমাদের ক্ষতিও হয় তবু অঙ্গীকারে দৃঢ় থাকার নামই সততা। আর বিজ্ঞতা হচ্ছে, যেখানে ক্ষতি হবে সেই রকম বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ না হওয়া।
কোথায় ছিলাম বা কোথায় আছি সেটা বড় কথা নয়- কোথায় যেতে চাই সেটাই মূখ্য বিষয়।
তাহলে দেখব, আমরা সত্যি সত্যিই কিছু একটা কওে ফেলেছি। কি করেছি তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে কি হয়েছি! একজন সফলকাম লোকই স্বপ্ন ও লক্ষ্য নিধারণ করে।

মরহুম মাওলানা আব্দুল খালেক (র.)

মরহুম মাওলানা আবদুল খালেক

মরহুম মাওলানা আবদুল খালেক

এক অনন্য চরিত্রের অধিকারী মহামনীষী, যার অসাধারণ চারিত্রীক গুণাবলী সকলকেই সমভাবে কাছে টানতো, সকলে একই রকম ভালবাসা অনুভব করত তার কাছ থেকে। তার সেই চারিত্রীক চুম্বকীয় আবেশে ধর্ম-বর্ণ, উচু-নীচু, ছোট-বড়, ধনী-দরিদ্র, জ্ঞানী-অজ্ঞানী সকলকেই অকৃত্রিমভাবে আবেশিত করে তুলত। মানুষের কাছে তার চরিত্রের এই দিকটিই সবচেয়ে বড় আশ্চর্যের, যেই তার সংস্পর্শে এসেছে সেই ভাবত পৃথিবীতে তাঁর সাথেই হয়ত মাওলানা সাহেবের সবচেয়ে বেশি ঘনিষ্ঠতা, তিনি তাকেই সবচেয়ে বেশি ভালবাসেন। তাই মৃত্যুর এত বছর পর এসেও মানুষেরা তাঁর সেই ভালবাসা অনুভব করে একইভাবে, আর সেই ভালবাসার মানুষের অনুপস্থিতি তাদের মর্মে আঘাত হেনে অশ্রু নদীর বাঁধ ভেঙ্গে দেয়, স্রোতধারার মতো দুগন্ড বেয়ে ঝড়ে পরে বুক ফাটা বোবা কান্নার নোনা জল। আজও তাঁর গুণগ্রাহীরা যেকোনো সমস্যায় আক্রান্ত হলে তার সুষ্ঠ সমাধানের দিনগুলির কথা স্বরণ করে দুঃখের মাতম করে। তাঁর স্মরণে এই সমস্ত হাজার হাজার ভক্ত অণুরাগীরা প্রতি বছর তার ইছালে ছওয়াব মাহফিলে জমায়েত হয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পরে। তাঁর এলাকা বাসী প্রতি বছর তার স্মরণে ইছালে ছওয়াব মাহফিল করে থাকে। এই মহা মনীষীর নাম মাওলানা মোহাম্মদ আবদুলল খালেক (র.)। তিনি ২২ পৌষ ১৩৪৭ বাংলা সাল মোতাবেক ৫ জানুয়ারী ১৯৪১ ইংরেজী সালে মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান থানার অন্তর্গত লতব্দী ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামে ঐতিজ্যবাহী সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আব্দুল হাই বেপারী, মাতার নাম তছিরুন নেছা। চার ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিঁনি দ্বিতীয়। তাঁর পূর্ব পুরুষরা এই এলাকার আদি বাসিন্দা, তাঁর বংশ ইতিহাস থেকে জানা যায় মাওলানা সাহেবের দাদার নাম রৌশন আলী বেপারী, তার পিতার নাম মোহাম্মদ হানিফ বেপারী, তার পিতা মদন মুন্সি, তার পিতা মোহাম্মদ মানু বেপারী, তার পিতা পাচু বেপারী। পূর্ব পুরুষদের মধ্য থেকে মদন মুন্সি একই উপজেলার তাজপুর গ্রাম থেকে সর্ব প্রথম এই এলাকায় এসে নিবাস গড়েন, সেই থেকে আজো তারা বংশ পরম্পরায় এখানেই আছেন। এই মহা মনীষী পারিবারিকভাবে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন, তারপর মধ্যপাড়া ইউনিয়নের পুরাতন মোস্তফাগঞ্জ মাদ্রাসায় কিছু কাল অধ্যায়ন করেন। সেখান থেকে পরবর্তীতে ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ থানার সোনাহাজরা মাদরাসায় অধ্যায়ন শুরু করেন, এবং এই মাদরাসা থেকেই ১৯৫৯ সালে দাখিল ও ১৯৬৩ সালে কৃতিত্বের সাথে আলিম পাস করেন। তারপর বাংলাদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ মাদরাসা-ই-আলিয়া ঢাকা থেকে ১৯৬৫ সালে ফাজিল পরীক্ষায় বোর্ড স্ট্যান্ডে উত্তীর্ণ হন, একই মাদরাসা থেকে ১৯৬৭ সালে কামিল পরীক্ষায় তিন নাম্বর বোর্ড স্ট্যান্ড করেন। এতবড় জ্ঞানের অধিকারী হওয়ার পরও সব সময় নিজেকে লুকিয়ে রাখতে পছন্দ করতেন। ছাত্র অবস্থাতেই তার জ্ঞানের কথা ছাত্র শিক্ষকদের গন্ডি পেরিয়ে অনেকদূর ছড়িয়ে পরে, আর তাই তাঁর কামিল পরীক্ষার রেজাল্টের পর ইরানী দূতাবাসের মাধ্যমে তৎকালীন ইরান সরকার তার দেশের এক বিদ্যাপিঠে শিক্ষকতা করার জন্য আহ্বান করেন, তিঁনি তার সেই প্রস্তাবনার কথা মাকে জানালে তাঁর মা বলেছিল তোকে এত বড় আলেম বানালাম এলাকায় থাকবি এলাকায় থেকে এলাকার মানুষদের ভালমন্দ দেখবি বলে, বিদেশ চলে গেলে এদের দেখবে কে? তিনি মায়ের কথা রক্ষা করার জন্য এলাবাসীর ভালবাসার টানে এত বড় লোভনীয় প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে পাশবর্তী টঙ্গিবাড়ী থানার বেতকা গ্রামে এক অখ্যাত মাদরাসার প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্ম জীবন শুরু করেন। এই মাদরাসায় চাকুরীর সময় একই থানার নিতিরা গ্রামের পীর মরহুম মৌলভী আব্দুল মজিদ খন্দকারের ছোট মেয়ে হাসিনা বেগমের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। সেই মাদরাসায় বেশ কয়েক বছর চাকুরী করার পর মায়ের আরো পাশাপাশি থাকার জন্য পাশবর্তী গ্রাম নিমতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে চলে আসেন। এখানে দুই বছর চাকুরী করার পর মায়ের অনুমতি নিয়ে শ্রীনগর থানার গাদিঘাট মাদরাসার সুপার/প্রধান হিসেবে শিক্ষকতা শুরু করেন। সেখানেও তার বেশি দিন থাকা হয়নী মায়ের দাবি রক্ষার্থে, তিঁনি তার মা এবং এলাকার মানুষদেরকে এত বেশি ভালবাসতেন যে শেষ পর্যন্ত সেই ভালবাসার টানে মাদরাসা সুপারের চাকুরী ছেড়ে পূণরায় সেই নিমতলা প্রাইমারী স্কুলে চলে আসেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সেখানেই চাকুরীতে নিয়জিত থাকেন সেই সহকারী শিক্ষক হিসেবেই। মাঝে বহুবার বহু শিক্ষা অফিসার তাকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে প্রমোশন দিতে গেলে তিনি প্রতিবারই তাদের সেই কথাকে ফিরিয়ে দেন বিনয়ের সাথে। প্রধান শিক্ষকদেরকে প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখার জন্য অনেক সময় অনেক বিষয়কে বাড়িয়ে কমিয়ে উপ¯’াপন করতে হয় এই বিষটি তাকে প্রধান পদের প্রতি নিরুৎসাহিত করে। তিনি সত্যের সাথে কোনো কিছুর বিনিময়েই আপোষ করেননি কখনো, প্রাইমারী স্কুলের সহকারী শিক্ষক হিসেবে থাকলেও তার শিক্ষা থেকে দূরে সরে যাননি, আমলের এতটুকুও ঘাটতি পরেনি কখনো, বাড়িতে বসেই চালিয়ে গেছেন আধ্যাতিক জ্ঞান চর্চা। প্রাইমারী স্কুলে চাকুরী করলেও তার জ্ঞান চর্চায় কোনো ভাটা পরেনি, এখানে চাকুরী করার সময় তিঁনি ইসলামী শরীয়তের বিভিন্ন বিষয়ের সঠিক মাসয়ালার ফতওয়া দিতেন। তার দেয়া ফতওয়া খন্ডন করার দূঃসাহস সমসাময়ীক কোনো আলেমেরই ছিলনা। এই ধরনের ফতওয়া দিয়ে অনেক বার অনেক বড় বড় আলেমের সাথে তার বাহাস হয়েছিল আর প্রতিবারই বাহাসে তিঁনি বিজয়ী হয়েছেন। এমন এক বাহাসের কথা মানুষ এখনো ভুলতে পারেনি, সেই সময় শরীয়তের জটিল বিষয়ের যেকোনো সমাধান তিনি করলে সমস্ত আলেমগণ তা নির্দিধায় মেনে নিতেন যারা তার পান্ডিত্যের কথা জানত। তৎকালীন সময়ে মুন্সিগঞ্জ জেলার প্রধান মাদরাসা ইসলামপুর কামিল মাদরাসায় এক ভাইস প্রিন্সিপাল এসেছিলেন, তিনিও খুব বড় মাপের আলেম ছিলেন। একাধারে বেশ কয়েকটি ভাষায় জ্ঞান রাখতেন। তিঁনি মাওলানা সাহেবের জ্ঞানের পরিধি সম্বন্ধে তেমন একটা ওয়াকিব হাল ছিলেননা। তখন এক জটিল মাসয়ালা সম্বন্ধে মাওলানা সাহেব ফতওয়া দেন। যে ব্যক্তির বিষয় নিয়ে ফতওয়াটি দেয়া হয়েছিল ফতওয়াটি তার প্রতিকূলে গেলে তিঁনি সেটির জন্য আরো সহনশীল সমাধান চেয়ে সেই ভাইস প্রিন্সিপালের কাছে গেলে তিঁনি তার মাসয়ালায় আরেকটু সহনশীল ফতওয়া প্রদান করলে তা নিয়ে এলাকায় বিশালভাবে বিতর্ক তৈরী হয়। এই বিতর্কের অবসান ঘটানোর জন্য শেষ পর্যন্ত বাহাসের আয়োজন করা হয়। বাহাসটি নিয়ে সর্বস্তরে কৌতূহলের অন্ত ছিলনা। একেতো মাওলানা সাহেব, অপরদিকে এক মাদরাসার ভাইস প্রিন্সিপাল, তাই বাহাসে সাধারণ জনগণের পাশা-পাশি অনেক বড়-বড় আলেমগণ উপ¯ি’ত ছিলেন। নির্ধারিত সময়ে বাহাস শুরু হলে কোন ভাষায় বাহাস হবে সেই নিয়ে ভাইস প্রিন্সিপাল সাহেব প্রশ্ন তোললে মাওলানা সাহেব তাকে বিনয়ের সাথে বলেন বাংলা, উর্দু, ফার্সী, আরবী যেকোনো ভাষায় আপনার পছন্দ সেই ভাষাতেই হোক। শেষ পর্যন্ত বাহছ হয়েছিল উর্দু ভাষায়, বাহাস অনুষ্ঠানে ভাইস প্রিন্সিপাল সাহেব সেই ফতওয়া সমন্ধীয় অনেক কিতাব সাথে নিয়ে এসেছেন, আর মাওলানা সাহেব এসেছেন খালি হাতে। অনেক সময় ধরে বাহাস চলে, বাহাস চলাকালীন সময়ে তার শরীয়তি জ্ঞানের পান্ডিত্য দেখে উপ¯ি’ত আলেমগণ মুগ্ধ হয়ে পরেন। শেষ পর্যন্ত সেই বাহাসেও মাওলানা সাহেব বিজয়ী হয়েছেন আর বাহাসে হেরে ভাইস প্রিন্সিপাল সাহেব পূণরায় মাদরাসায় ঢুকেননী, সেখান থেকেই চলে যান চাকুরী ছেড়ে। তাঁর অসাধারণ জ্ঞানের কারণে তিঁনি ছিলেন এলাকার সমস্ত আলেমদের চোখের মনি, শ্রদ্ধার পাত্র। তিনি আলেমদের মাঝে কোনো ভেদাভেদ করেননি, কমওমীয়া-আলিয়া বলে তার কাছে কোনো ব্যবধান ছিলনা। আশেপাশে বিভিন্ন এলাকায় অসংখ্য মাদরাসা প্রতিষ্ঠায় তিনি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন, অনেক মাদরাসার কার্যকরী পরিষদের সভাপতি ও সেক্রেটারী ছিলেন। এই মহামনীষী জ্ঞানের দিক দিয়ে যেমন ছিলেন আধ্যাত্মিক দিকে ছিলেন আরো বেশি এগিয়ে। মানুষের সাভাবিক জীবনের বিভিন্ন জটিল বিষয়ের আধ্যাত্মিক সমাধান দিয়ে মানুষের সাথে একাকার হয়ে আছেন। প্রতিদিন সকাল বেলা তাঁর বাড়িতে লোকের ভীর লেগেই থাকত, মানুষের কত ধরনের সমস্যা এই সমস্ত লোকের ভীর থেকেই জানা যেত, কারো জ্বর, মাথা ব্যথা, আমাশয়, চোখে কম দেখে, চোখ উঠছে (উদাইছে), ভয় পায়, বিছানায় প্র¯্রাব করে, ছোট বা”চা কান্না করে, সাপে কাটছে, কোথাও কেটে গেছে, জ্বীনে আছর করছে, সন্তান হয়না, বিবাহ হয়না, স্বামী-স্ত্রীর মনো মালিন্য, সন্তান কথা শোনেনা, জন্ম বোবা, বুকের কড় বাড়ছে, হাপানি, বান মারছে, চুরি হইছে, গরুতে দুধ দেয়না, গরুতে লাথি মারে, ফসল নষ্ঠ হয়ে যাচ্ছে, ফলন কম হচ্ছে, কারো মুখ লাগছে ইত্যাদি ইত্যাদি। এগুলি ছাড়া পুরুষ ও মহিলাদের আরো নানাবিধ যত ধরনের জটিল সমস্যা আছে সে সবের আধ্যাত্মিক সমাধান দিতেন। এর জন্য তিঁনি কখনো বিরক্তি বোধ করতেননা এবং কোনো ধরনের টাকা পয়সা নিতেননা। তার আধ্যাত্মিক শক্তি এতই প্রখর ছিল যে সেগুলি অনেকের কাছে অলৌকিক বলেই মনে হতো। তাঁর এই ধরনের আধ্যাত্মিক বিষয়ের অনেক বাস্তব ঘটনা মানুষের মুখে মুখে এখনো প্রচলিত রয়েছে। মাওলানা সাহেব এক বার বাড়িতে ব্যবহারের জন্য মুলি বাঁশ আনতে গেছেন সেখানে মুলির কাজ করার সময় মুলির ধারালো প্রান্তের সাথে লেগে এক লোকের নাকের হাড় সহ কেটে গেলে আর রক্ত থামানো যাচ্ছিছলনা। এক ব্যক্তি খুব শক্ত করে ধরে রক্ত থামিয়ে রাখার চেষ্টা করছিল তবু রক্ত বেরুচ্ছিল; এসব দেখে মাওলানা সাহেব সামনে গিয়ে বললেন দেখি কি হয়েছে, তিঁনি লোকটিকে হাত সরিয়ে নিতে বললেন। লোকটি হাত সরিয়ে নিলে তিনি সেখানে তাঁর মুখের লালা দিয়ে নাকের বাশিটি সহ চামড়াটি লাগিয়ে দিলেন সাথে সাথে রক্ত থেমে গেল ও কাটা জায়গা জোড়া লেগে গেল। এই ঘটনা দেখে উপস্থিত সবাই তাজ্জব হয়ে গেল। একবার শুষ্ক মৌসুমে অনাবৃষ্টির কারণে জমি শুকিয়ে ফেটে চৌচির, ফসলাদি সব নষ্ঠ হয়ে যাচ্ছিল, তখন সেঁচের এত উপকরণ ছিলনা। সেঁচের বহুল প্রচলিত মাধ্যম ছিল দোন (আলকাতরার টিটের কৌটার এক প্রান্ত কেটে রশি বেঁধে তৈরী করা সেঁচের জন্য) সেটি দিয়ে এই মাটি ভেঁজানো সম্ভব ছিলনা। এলাকার লোকজন মাওলানা সাহেবের কাছে গেলে তিনি সকলকে মাঠে জড়ো করে দ্ইু রাকাত নামাজ পড়ে, নামাজ শেষে দাঁড়িয়ে দুহাত আকাশের দিকে তুলে দুয়া করলেন; দোয়া শেষে বৃষ্টি ঝরায় মাঠের কেউ সেই বৃষ্টিতে ভেঁজা ছাড়া বাড়ি পৌঁছতে পারেনি। তাঁর মাধ্যমে এই ধরনের ব্যাপার অনেক জায়গায় অনেক বারই ঘটছে। বাজারের দোকানদারা হিন্দু হোক মুসলিম হোক যারা ব্যাপারটি লক্ষ্য করছে তারা মাওলানা সাহেব তার দোকানে আসলেই খুশি হয়ে যেতেন, কারণ ছিল তিঁনি দোকান থেকে কোনো মাল কিনলে সেদিন তার কেনার পর থেকে দোকানের বিক্রি বেড়ে যেত। এমন অনেক বাস্তবতা আছে যা মানুষ ভুলতে পারেনি, লোক থেকে লোক হয়ে ছড়িয়ে আছে সর্বত্র। বাজারের এক ফলের ব্যবসায়ী পাঁকা আম নিয়ে অনেক বিড়ম্বনার মাঝে ছিল, আগের দিন যেভাবে সেল হওয়ার কথা ছিল সেভাবে সেল না হওয়াতে মজুদকৃত আমের অধিকাংশই রয়ে গেছে, যেগুলি বিক্রী হওয়ার সম্ভাবনা একেবারে ক্ষীণ। আর সেদিন বিক্রী না হলে পুরোটাই লোকসান, বিক্রেতা ভেবে অস্থির এবার নির্ঘাৎ মাথায় হাত। কিন্তু সকাল ভোরে এসে মাওলানা সাহেব তার প্রথম ক্রেতা হিসেবে পাঁচ কেজি আম কিনেছে, তিনি আম নিয়ে চলে যাবার পর অল্প সময়ের মধ্যেই তার সব আম বিক্রি হয়ে গেছে; যেখানে আগে লোকসান গুণার কথা ছিল সেখানে সাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ ব্যবসা হইছে। তার জীবনের এই ধরণের অনেক বাস্তবতা মানুষের মনে গেঁথে আছে যা তারা ভুলতে পারেনা এখনো সেই ধরনের পরিস্থিতি সামনে আসলে তার সেই কথাগুলি স্মরণ করে। তাঁর কাছে জাতি-ধর্ম কোনো ভেদাভেদ ছিলনা। তিঁনি মানুষ হিসেবে সকলকে সমানভাবে ভালবাসতেন, সেই ভালবাসা ভক্ত হৃদয়েও প্রবলভাবে দোলা দিত। মৃত্যুর পর তাকে শেষ বারের মতো দেখতে জনতার ঢেউ বয়ে গেছে চারি পাশে, এই জনতার মিছিলে সকল জাতের লোকেরই সমাগম ছিল যা মহা আশ্চর্যের। মৃত্যুর দিন আকাশ ছিল মেঘা”ছন্ন, কফিনের উপর সারক্ষণ মেঘের ছায়া পড়েছিল, কফিন কবরে রাখা পর্যন্ত সেই ছায়াটি তার সাথে সাথেই ছিল। আকাশের মাঝে পাখিদের করুন আহাজারি সকলের হৃদয় নাড়িয়ে দিছে, আকাশ জুড়েছিল পাখিদের ভীড় কত রকম পাখি তার ইয়াত্তা নেই। তার মৃত্যুর বহু আগেই এলাকা থেকে শকুন উধাও হয়ে গিয়েছে। অথচ মৃত্যুর দিন অসংখ্য শকুন চিলেরা সারা আকাশ জুড়ে উড়ে বেড়িছে আর তাদের ভাষায় নানাবিধ শব্দ করে শোকের মাতম করে গেছে সে দৃশ্য এখনো উপস্থিত জনতার চোখে ভাসে। এই মহামনীষী ৩ ফাল্গুন ১৪০৭ বাংলা সাল মোতাবেক ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০০১ ইংরেজী সালে রাত ০১ টায় সংসারে ছয় ছেলে ও তিন মেয়েকে রেখে ইহলোক ত্যাগ করেন। মৃত্যুর পূর্বে তিনি স্পষ্টভাবে সুরায়ে ইয়াছি পাঠ করেন, তার পর কালিমা পরতে পরতে এ জগৎ ছেড়ে চিরদিনের জন্য চলে যান না ফেরার দেশে।

আইএফসি বাংলাদেশ নদী ও পরিবেশ কমিটি ঢাবি শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন

ইকবাল হোছাইন ইকুঃ
অনাড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্যে অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রীর উপস্থিতিতে ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ে টিএসটির ক্যাফেটেরিয়ায় আইএফসি বাংলাদেশ নদী ও পরিবেশ কমিটি ঢাবি শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন সম্পন্ন হয়। নবগঠিত এ শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন সথাক্রমে ঢাবির ‘বিক্রমপুর’ বাস কমিটির সভাপতি, মুন্সিগঞ্জ-বিক্রমপুর ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ক্যাম্পাসে ভেজাল বিরোধী আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা মোঃ মুরাদ হোছাইন ও মোঃ জাহিদুল ইসলাম। অন্যান্য কর্মকর্তারা হচ্ছেন যথাক্রমে সিনিয়র সহ সভাপতি মোল্লা সিহাব উদ্দিন, সহ সভাপতি মামুনুর রশিদ, ইয়াসিন আরাফাত ও ফারহানা সুলতানা (সনি), সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাহিদুল ইসলাম, সিনিয়র সহ সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাহমুদুল ইসলাম, সহ সাধারণ সম্পাদক কানিজ ফাতেমা হীরা ও নয়ন ঢালী, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আরিফুল্লা খাঁন, সিনিয়র সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদুল ইসলাম, সহ সাধারণ সম্পাদক মোঃ মুহিব্বুল্লাহ, অর্থ সম্পাদক নাঈম আল আহাদ, সিনিয়র সহ অর্থ সম্পাদক মোঃ মিঠু, সহ সম্পাদক অমিত, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক তরিকুল ইসলাম সুমন, সিনিয়র সহ পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক রবিউল ইসলাম, সহ পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ ইব্রাহীম, মোঃ রাশেদুল ইসলাম, মোঃ আল আমিন, মোঃ নুরুল ইসলাম, মোঃ নাজমুল হোসাইন সোহরাব, এস এম মুজাহিদ, শামীম মোরল, সোহেল ও আইয়ুব, বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আকিব বিন আনোয়ার, সিনিয়র সহ বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক গালিব, সহ বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক রাফিয়া সুলতানা, নদী বিষয়ক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, সিনিয়র সহ নদী বিষয়ক সম্পাদক শরীফ আলম, সহ নদী বিষয়ক সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম, তছলীম হোসাইন, ও শেখ রাসেল, পানি বিষয়ক সম্পাদক ওয়াহিদুর রহমান খালিদ, সিনিয়র সহ পানি বিষয়ক সম্পাদক মোঃ জসিম, সহ পানি বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আসিফ খান, আর্সেনিক বিষয়ক সম্পাদক মোঃ খলিলুর রহমান, সিনিয়র সহ আর্সেনিক বিষয়ক সম্পাদক মোঃ তাজুল ইসলাম বিপ্লব, সহ আর্সেনিক বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আশরাফুল, শিক্ষা ও সাংস্কৃতি সম্পাদক তানভীর আহমেদ, সিনিয়র সহ শিক্ষা ও সাংস্কৃতি সম্পাদক মোঃ আক্তার হোসাইন, সহ শিক্ষা ও সাংস্কৃতি সম্পাদক সেলিম, আব্দুল্লাহ আল মামুন, মোঃ ইকরাম হোসাইন মনি ও মোঃ মহিউদ্দিন আহমদ, দপ্তর ও পাঠাগার সম্পাদক এটিএম মোতাসিম হোসেন, সিনিয়র সহদপ্তর ও পাঠাগার সম্পাদক মোঃ সজিব মিয়া, সহ দপ্তর ও পাঠাগার সম্পাদক মোঃ তুষার, প্রচার ও যোগাযোগ সম্পাদক মোঃ শিহাব উদ্দীন, সিনিয়র সহ প্রচার ও যোগাযোগ সম্পাদক মোঃ আঃ রশিদ, সহ প্রচার ও যোগাযোগ সম্পাদক মোঃ আলমগীর, অমিন হাওলাদার ও সাগর তপদ্দার। এছাড়া কার্যকরী সদস্য ইকবাল হোছাইন ইকু, মোঃ শাহজাহান, শাহানা আক্তার সাম্মী, নূরুন নাজনীন, তাসমিনা খান (মালা), সাদিয়া আফরিন, সাংবাদিক মোঃ জসিম, মোঃ রুবেল মোল্লা, মোঃ আতিক, মোঃ রনিকুল ইসলাম, মোঃ কামরুল ইসলাম, মোঃ ইমরান, মোঃ ইব্রাহীম, মোঃ আশিক, মোঃ তফসীল, মোঃ বদরুদ্দিন শিশির, মোঃ মোস্তফা মানিক ও আব্দুল্লাহ আল মামুন।
আইএফসি বাংলাদেশ নদী ও পরিবেশ কমিটি ঢাবি শাখার কার্যকরী কমিটির সদস্য ইকবাল হোছাইন ইকুর পরিচালনায় ও সভাপতি মোঃ মুরাদ হোছাইনের সভাপতিত্বে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘের সাবেক পানি ও পরিবেশ বিষয়ক গবেষক ও আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি বাংলাদেশের সিনিয়র সহ সভাপতি ডঃ এস আই খান ও প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী ও ডেইলি নিউ নেশনের সম্পাদ মোস্তফা কামাল মজুমদার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইএফসি বাংলাদেশ নদী ও পরিবেশ কমিটি ঢাবি শাখার প্রধান উপদেষ্টা, ঢাবির রাষ্ট্র-বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ও বিএনসিসির বিটিএফও ডঃ শওকত আরা হোসেন।

http://www.facebook.com/ifcdu Image

সাংবাদিকতা-১


সাংবাদিকতা
জানার আগ্রহ মানুষের দুর্নিবার। আবার কোনো ঘটনা জেনে তা অন্যেকে জানানোর জন্য কৌতূহলী মানুষও কম নয়। তথ্য প্রযুক্তর এযুগে মানুষ চায় খুব দ্রুত তথ্য পেতে। প্রতিনিয়ত বদলে যাওয়া পরিবেশের গতি প্রকৃতি জানতে মানুষ তথ্য জানতে চায়। কিছু মনুষ আছেন যারা মানুষকে তথ্য জানানোর এ চ্যালেঞ্জিং কাজকে পেশা হিসেবে নিতে পছন্দ করেন। টেবিল চেয়ারে বন্দি নয়টা-পাঁচটার অফিস তাদের ভাল লাগেনা। তারা চান তাদের প্রতিটি দিন শুরু হোক নতুনভাবে। নতুনের সাথে পরিচয়ে। ব্যস্ততায় কাটুক প্রতিটি দিন। যাদের মধ্য আছে চ্যালেঞ্জ নেয়ার দুঃসাহস, যাদের আছে সৃষ্টিশীলতা তাদের জন্য দেশে তৈরি হয়েছে সাংবাদিকতার অনেক ক্ষেত্র। যেমন-রেডিও ও ব্রডকাস্ট জার্নালিজম সহ সকল প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রিক মিডিয়া।যাই হোক আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস সেইসব তরুণের জন্য যারা এখনও সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে নেয়নি। নানা কারণে হয়ত তারা সাংবাদিক হওয়ার স্বপ্ন দেখছে।
আমি একটি বিষয় অর্থাৎ ব্যক্তিত্ব বিকাশ লেখার পর আপনাদের ব্যপক সারা পেয়েছি তাই সময়ের চাহিদা অনুযায়ি সাংবাদিকতা বিষয়টি বেছে নিলাম। আপনাদের সারা পেলে এটিও চালিয়ে যাব।
গোড়ার কথাঃ- অনেকের মতে, প্রথম সংবাদপত্র পাওয়া যায় জুলিয়াস সিজারের আমলে খ্রিস্টপূর্ব ৫০ সালে। আর প্রথম বিলি করা সংবাদপত্রের খোঁজ পাওয়া যায় চীনে ৭৫ খ্রীস্টাব্দের দিকে। এছাড়া ঊনবিংশ শতাব্দীতে শিল্প বিপ্লবের ফলে মুদ্রণ পদ্ধতির যে বিবর্তন হয় তা সংবাদপত্রকে নিয়ে যায় অন্য এক উচ্চতায়।
প্রাচীনের প্রাজ্ঞতার সঙ্গে আধুনিকের দর্শন, বৈজ্ঞানিকের জ্ঞান, নিজের ও অন্যান্য সময়ের ইতিহান, অর্থনীতির মূল শর্ত, সামাজিক-রাজনৈতিক জীবন ও চিন্তাভাবনা ও উপলব্দী এব্ং চাহিদা উপস্থাপন করাই একজন সাংবাদিকের মূল কর্তব্য।
সংবাদ কিঃ-
সংবাদ বা খবর ইংরেজীতে News। অনেক বিজ্ঞজন বলেছেন প্রধান চারটি দিক North, East, West ও South এই শব্দমালার আদ্যাক্ষর সমন্বয়ে গঠিত। সব ঘটনা সংবাদ নয়। সংবাদ একটি ছোট শব্দ হলেও এর তাৎপর্য় অনেক ব্যাপক। অভিধানে সংবাদকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে এভাবে- ১.কোনো ঘটনা বা প্রস্তাব সম্পর্কিত বিবরণ।২.কোনো সাম্প্রতিক ঘটনা বা এ পর্যন্ত অজানা জিনিস সম্পর্কিত খবর বা তথ্য। ৩.চার্লস এ. ডানার ভাষায়- ইতোপূর্বে মনোযোগ আকৃষ্ট হয়নি অথচ সমাজের একটা বৃহৎ অংশকে কৌতুহলী করে তোলে এমন যে কোনো বিষয়ই সংবাদ।৪.Lord Northcliffe- If a dog bites a man, it is not news, but if a man bites a dog it is a news. এতক্ষণ বিভিন্ন সাংবাদিক ও লেখকদের দেয়া ‘সংবাদ’ এর সংজ্ঞা নিয়ে আলোচনা করেছি। তাঁদের প্রদত্ত সংজ্ঞায় চমৎকারিত্ব, অভিনবত্ব ও নতুনত্ব রয়েছে।
মোটকথা, যা কিছু মানুষের মনে আবেক, ভয়, কান্না, হাসি, দুঃখ ও আনন্দের অনুভূতি জাগায় তাই খবর।

কিছু বিষয় আগে যেনে রাখাই ভালঃ-এবারে আপনাদেরকে কিছু গুরুত্ব পুর্ন শব্দ মালার সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি যেগুলো আপনার সফল সাংবাদিকতার অন্যতম চাবিকাঠি হিসেবে কাজ করবে। যেমন, প্রত্যক্ষদর্শি, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, নির্ভরযোগ্য সুত্র, এলাকা বাসী, গোপন সুত্র, জানা যায়, পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অমুক সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ জানায়, সরেজমিনে দেখা যায়, অনেকেই মনে করেন, এলাকা বাসীর সাথে আলাপ কালে জানাযায়, প্রত্যক্ষদর্শী(রা) জানায়/সূত্রে জানা যায়, বিএনপি/ আওমিলিগের নেতারা জানান, বিএনপি/জামাত নেতারা বলেন, একাধিক প্রার্থীর সাথে সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আমারদেশ/নয়াদিগন্ত/বিডিরিপোর্ট—কে বলেন, নেতৃবৃন্দ বলেন, এলাকাবসী ও অমুক থানা সূত্রে জানা যায়, অমুক থানার ওসি মোঃ অমুক লালের কণ্ঠকে(যে কোনো পত্রিকা হতে পারে) জানান, অমুক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অমুক জানান, এব্যপারে অমুক থানার ওসি অমুক বলেন, অমুক গ্রামের বাসিন্দারা জানান, পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায় ইত্যাদি ইত্যাদি।
উপরোক্ত শব্দমালা গুলো আপনার চলার পথে যখন তখনই প্রয়োজন হবে তাই এগুলোর যথাযথ ব্যবহার রপ্ত করুন।
একটি কথা বলে রাখা দরকার, ভারতের বিখ্যাত সাংবাদিক ও কলাম লেখক ইয়াছিন দালাল কেবল সাংবাদিকতার উপর ৬৫ টি বই লিখে জায়গা করে নিয়েছেন ‘লিমকা বুক অব ওয়ার্লড রেকর্ডস’ এ। ১৯৭৩ সালে সৌরাস্ট্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংবাদিকতা বিভাগে যোগদানের পরই তিনি সাংবাদিকতার উপর নানা বই লিখতে শুরু করেন।

চলবে—

ক্ষুদ্রঋণ

ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি :-

সংক্ষিপ্ত ধারণাঃ- ১.প্রধান উদ্দেশ্য দারিদ্র দুর করা।

২.প্রদেয় ঋণের ৯৫% নারীদের (গ্রামীন ব্যাংক হতে ঋণ প্রাপ্তির শর্তাবলী-ক.দরিদ্র ভূমিহীন মহিলা হতে হবে। খ.বিবাহিতা হতে হবে। গ.স্থানীয় কেন্দ্রের নিকটবর্তী বাসিন্দা হতে হবে।) দেয়া হয়।

৩.কেউ ঋণ পেতে চাইলে অবশ্যই তাকে একটি গ্রুপে জয়েন করতে হবে।

৪.কোনো আইনী কাঠামোর আওতায় নয় বরং বিশ্বাসের ওপর ঋণ প্রদান করা হয়। ৫.প্রচলিত ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রতি এটি প্রচ্ছন্ন একটি চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশে ক্ষুদ্রঋণ পরিচালনাকারী সংস্থাসমূহের মধ্যে প্রধানতম দুটি হলো-ক)গ্রামীণ ব্যাংক ও খ)ব্র্যাক।
ক্ষুদঋণ কেনো দারিদ্র্য বিমোচনে সফল হয়নিঃ- প্রফেসর শাহ মুহাম্মদ হাবীবুর রহমান, অর্থনীত বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়-২০০৭। প্রশ্নের উত্তরটি তার মাঠগবেষণা হতে যেসব কারণ পাওয়া গেছে সংক্ষেপে সেগুলো বর্ণনা করা হলোঃ
১.সুদের হার বেশ চড়া।(৪৭% থেকেও বেশি)
২.ঋণ গ্রহণের প্রায় অব্যবহিত পর হতেই কিস্তি প্রদান। (সুদের হার ঋণ নেয়ার প্রথম দিন হতেই গণনা শুরু হয়।)
৩.গ্রুপের একজনই ঋণ পায়, সে শোধ না করা পর্যন্ত অন্যদের অপেক্ষা করতে হয়।
৪.সংসারের অভাবের তাড়নায় প্রাপ্ত ঋণ অনেক সময়ই খাদ্য ও চিকিৎসায় ব্যয় করতে হয়।
৫.উৎপাদনশীল কাজে পেশাগত প্রশিক্ষণের অভাব।
৬.ঋণের পরিমাণ পর্যাপ্ত না হওয়া।
৭.সুদ ও ঋণ পরিশোধের পর হাতে আর পূঁজি না থাকায় পুনরায় বেকার জীবন যাপন।
৮. স্বামীদের হাতে ঋণের অর্থ তুলে দিতে বাধ্য হওয়া।
৯.অনেক সময়েই কিস্তির টাকা সংগ্রহে ব্যর্থ হয়ে অন্যের নিকট হতে ঋণ নেয়া।
১০.একই সঙ্গে একাধিক উদ্দেশ্যে ঋণ না পাওয়া। (অবশ্য গ্রামীণ ব্যাংক এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম)
 ক্ষুদ্রঋণ গন্তব্য থেকে বহু দূরেঃ- সীমিত আকারের কিছু সফলতা বাদ দিলে ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি সত্যিকার অর্থেই তাদের গন্তব্য থেকে বহুদূরে অবস্থান করছে। যেমনি আলোচিত, তেমনি সমালোচিত ক্ষুদ্রঋণ কেনো তার লক্ষ্যে অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছে তার রয়েছে নানাবিধ কারণ।

১.ঋণ গ্রহণ পরবর্তী ব্যবসা পরিচালনার জন্য তাদের কোনো প্রশিক্ষণ দেয়া হয় না।

২.চরম দরিদ্র যারা ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচী তাদের পারতপক্ষে এড়িয়ে গেছে। ন্যূনতম যাদের ৫ একর জমি বা তার সমপরিমাণ অর্থ না থাকে তাকে ঋণ দেয়া হয় না।

৩.পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যারা একবার ঋণ নিয়েছে তারা স্থায়ীভাবে একটি ‘ঋণচক্রে’ জড়িয়ে পড়েছেন এবং এখন তাদের এই ঋণ ছাড়া চলে না। কিন্তু হবার কথা ছিল উল্টোটা । ৪.সামাজিক বৈষম্য বাড়ছে ক্ষুদ্রঋণের ফলে। একটি শ্রেণী যারা চরম, ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির বাইরে থাকার ফলে দরিদ্র এবং চরম দরিদ্রদের মধ্যে আয় বৈষম্য বাড়ছে।

৫.সবচে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি হল দরিদ্রদের সাথে ব্যবসা করে দারিদ্র্য দূর করা যাবে না। তাদেরকে সেবার মানসিকতা নিয়ে কর্মসূচি চালাতে হবে। একজন সচ্ছল ব্যক্তির চাইতেও বেশি সুদের হারে ঋণ নিয়ে কিভাবে এজন দরিদ্র ব্যক্তির জক্ষে দারিদ্র্তা জয় করা সম্ভ? -আহমেদ সাবিত-০৭

ক্ষুদ্রঋণের সমালোচনাঃ– গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে দারিদ্রকে জাদুঘরে পাঠানোর যে মহান পরিকল্পনা নিয়েছেন তাতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ক্ষুদ্রঋণ-তত্ত্ব দিয়ে দারিদ্র বিমোচনের অলীক স্বপ্ন ধোপে টেকে না। প্রথম আলোর গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেন- ক্ষুদ্রঋণ দারিদ্র্য বিমোচনের হাতিয়ার নয়। মোস্তফা কে মুজেরী বলেন,বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচন কৌশলে ক্ষুদ্রঋণকে বাইরে রাখছি। অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, ক্ষুদ্রঋণ দিয়েই শুধু দারিদ্র্য বিমোচন সম্ভব নয়। বানিজ্যিক ব্যাংকের সবচেয়ে বড় উদাহরণ তো গ্রামীণব্যাংক, ২৬-৪০% চড়াসুদে মুনাফা লোটার পরেও বলতে চান, ডঃ ইউনূস বানিজ্যিক নন ? যথার্থ শিক্ষার মাধ্যমে নারী স্বাবলম্বী হবে যা নারীর প্রকৃত ক্ষমতায়নের পথ সুগম করবে, অশিক্ষিত নারীকে ঋণ প্রদানের মাধ্যমে এবং অযাচিতভাবে ডিরেক্টর বানিয়ে নারীর প্রকৃত মুক্তি কখনোই আসবেনা। সাধারণ জনগণের অশিক্ষার সুযোগ নিয়ে আমাদের শিক্ষিত জ্ঞানপাপী বুদ্ধিজীবীরা আইন বহির্ভূত যা খুশী তাই বলে আর কতকাল এভাবে লোক ঠকাবেন ? ডঃ ইউনূস তার নেটওয়ার্কিং বুদ্ধির জোরে পশ্চিমা বিশ্বে একটি শক্ত অবস্থান গড়তে সক্ষম হয়েছেন, তার পলিটিক্যালি শক্তিশালী বন্ধুগুলোর ভূমিকাই তাকে নোবেল এনে দিয়েছে,এই যুগে কুষীদজীবীরা নোবেল পুরষ্কার পাচ্ছেন,পরবর্তী যুগে হয়ত আলু পটল ব্যবসায়ী কিংবা মুদি দোকানদারেরাও নোবেল শান্তি পুরষ্কার পাবেন,অবাক হওয়ার কিছু নেই,কারণ এই পুরষ্কারের পেছনে পশ্চিমা রাষ্ট্রের শক্তিশালী নেতাদের হাত থাকে তাই কোন মুদি দোকানদার যদি বিল ক্লিনটনদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে পারেন এবং বিদেশী স্বার্থ রক্ষা করে চলতে পারেন তাহলে তিনিও একদিন অমন পুরষ্কারের আশা করতে পারেন । এটা কি দেবদেবী শাসিত গ্রীক সাম্রাজ্য কিংবা যাজক শাসিত রোমান সাম্রাজ্য যে ইউনূস সাহেবের অসীম ক্ষমতা থাকবে ? বাংলাদেশের মত গনতন্ত্রকামী একটি দরিদ্র দেশে ইউনূস সাহেবের মত কিছু রক্তচোষা ভ্যাম্পায়াররা বছরের পর বছর বিপুল এক জনগোষ্ঠীকে ঋণের জালে জড়াবে এবং তাদের থেকে চড়া সুদ গ্রহণ করে বিশাল অঙ্কের মুনাফা লুটেই যাবে,এতবড় অন্যায় কখনোই মেনে নেওয়া যায়না। এম এম আকাশের মতে, “ক্ষুদ্রঋণ একটি লোভনীয় ব্যবসায় রূপ নিচ্ছে। কেউ যদি বলে,আমি ব্যবসা করে মুনাফা করব,তবে তাকে কর দিতে হবে”। সুদ সমেত আসল না পেলে আপনার ব্যাঙ্কের কর্মকর্তারা গরীব ঋণগ্রহীতার গরু-বাছুর আসবাবপত্র হাড়িপাতিল টিনের চালা এমনকি নাক-ফুল কিংবা গলায় পরার সাধারণ অলঙ্কারাদি খুলে নিয়ে যায়,এর পেছনে কি আপনার কোনই গুপ্ত নির্দেশনা নেই ? ১৯৭১ সালে বিদেশে ছিলেন তিনি,দেশের জনগণ যখন মহান মুক্তিযুদ্ধের মহাসংগ্রামে লিপ্ত,তখন উনি ব্যস্ত ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রী নিতে। জীবনে কোনোদিন অন্যায় অত্যাচার অবিচারের বিরুদ্ধে উনি সোচ্চার হয়ে সামনে দাঁড়িয়েছেন ? প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ – রাজনীতিবিদ ডঃ শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যাকাণ্ডের পরে ডঃ ইউনূসের ন্যক্কারজনক নীরবতা জনমানসে প্রশ্ন তোলে। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরে নীরব ছিলেন,স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সময় নীরব ছিলেন,কানসাট –মঙ্গা সহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সময় ইউনূস সাহেবের নীরব অবস্থান এটাই প্রমাণিত করে যে,উনি নিজের ব্যক্তিগত লাভ কিংবা সাফল্য ব্যতীত জীবনে আর কোনকিছু দেখার প্রয়োজন বোধকরেননি।
এবার আসা যাক একটু ব্যক্তিগত প্রসঙ্গে

 ডঃ ইউনূস তনয়া দীনা ইউনূসের অতিবিলাসী এবং অসংযত জীবনযাত্রার কুরুচিপূর্ণ ছবি যারা সামাজিক যোগাযোগের সাইট ফেসবুকে দেখেছেন,তাদের মনে নিশ্চয়ই প্রশ্ন জেগেছে যে,বাবা হিশেবে ডঃ ইউনূস কতটুকু সার্থকভাবে তার দায়িত্ব পালন করেছেন ? বাংলাদেশের মত দরিদ্র দেশে যেখানে গরিবের দুবেলা দুমুঠো খাবার জোটেনা,সেখানে ইউনূস তনয়ারা লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে এদেশ ওদেশ ঘুরে বেড়ান,ব্যাংকক –সিঙ্গাপুর –ইউরোপ –আমেরিকায় শপিংয়ে যান ;যেই ব্যক্তি সারাদিন গ্রামীণ ফতুয়া পরে থাকেন,তারই কন্যার কেন বিদেশী কুরুচিপূর্ণ পোশাকের প্রতি এত ঝোঁক ? তার মানে কি গ্রামীণ চেক বন্দনা শুধুই ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য প্রণোদিত ? গ্রামীনব্যাংকের উচ্চ সুদের ঋণ,গ্রামীণ ফোনের উচ্চ কলরেট,গ্রামীণ চেকের উচ্চমূল্য সচেতন জনগণ আর বেশিদিন সহ্য করবেনা,অচিরেই তারা বিকল্প কোম্পানিগুলোর দিকে ঝুঁকবে এবং উচ্চমূল্যের গ্রামীনপণ্য বর্জন করা শুরু করবে।
Sat, 09/04/2011 – ডঃ মুশফিক dr_mushfique@yahoo.com
সাংবাদিক ও কথা সাহিত্যিক রাহাত খান, তিনি ‘ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা নন’ শীর্ষক কলামে বলেছেন- ‘দেশের প্রচলিত আইন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রবিধান ও তদারকির আওতায় একটি বিশেষায়িত ব্যাংক হিসেবে ড. ইউনূসকে প্রতিষ্ঠাতা বলা যায় না। তবে তাকে ম্যানেজিং ডাইরেক্টর পর্যন্ত বলা যেতে পারে। … … তার অবর্তমানে নেতৃত্ব তৈরির ক্ষেত্রে তার কার্পণ্য লক্ষণীয়। অনেকেই মনে করতেন, দীপাল বড়ুয়া অথবা খালেদ সামস্ তার পরে এমডি পদে অধিষ্ঠিত হবেন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে উভয়কে সরিয়ে দেয়া হয়। বহির্দেশীয় ব্যবসায়ীদের তার প্রতি আকর্ষণের মূলে রয়েছে ব্যবসায়িক স্বার্থ। যেমন- গ্রামীণ ব্যাংককে কো-লেটারাল বা ইক্যুইটি দিতে হয় না। ট্যাক্স দিতে হয় না। তিনি শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, কিন্তু উচ্চহারের সুদের বিনিময়ে ঋণ দিয়ে কীভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠা করলেন তা বিবেচনার দাবি রাখে।
এনজিও সমূহের বিরোধিতাঃ- বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নাস্তিক বুদ্ধিজীবী ডঃ হুমায়ুন আজাদের ইন্টারভিউ।
অরনি অনুপ শাদীঃ এনজিও সমূহ বা গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকাণ্ডকে আপনার কাছে কেমন লাগে ?
হুমায়ূন আজাদঃ- বাংলাদেশ এখন এনজিওতে ভরে গেছে। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গ গেলে,আমি গত বছর বেড়াতে গিয়েছিলাম, পথে প্রান্তে রাস্তার পাশে পুকুরের ওপর বাড়ির ওপর টিনের ঘরে চমৎকার দালানে গাছের উপরে সমস্ত এনজিওরা দিনরাত কর্মব্যস্ত। আমি অবশ্য কাজ দেখিনি কিন্তু তাদের ঘরবাড়ি সাইনবোর্ড দেখেছি এবং তারা পুরষ্কারের পর পুরষ্কার পাচ্ছে। তারা বাংলাদেশী রাষ্ট্রীয় পুরষ্কার পাচ্ছে, ম্যাগসেসাই পাচ্ছে, পুরষ্কারে ভরে গেছে। কিন্তু এতো এনজিও, এগুলো যদি কোন কাজ করতো,তবে বাংলাদেশে তো এখন সুখ এবং শিক্ষার প্লাবন বয়ে যেত। বছর দশেক আগে সম্ভবত একদল এনজিওর লোক আমার কাছে এসেছিল, তারা শিক্ষা নিয়ে কাজ করে, ……বোধ হয় তখন আড়াইশোর মত এনজিও শিক্ষা নিয়ে কাজ করছিল, তো আমি বলেছিলাম আপনারা কি করেন, বলেছিল আমরা শিক্ষা নিয়ে কাজ করছি। আড়াইশো এনজিও যদি শিক্ষা নিয়ে কাজ করে তাহলে বাংলাদেশে সবাই শিক্ষিত হয়ে যাওয়ার কথা। তারা কতগুলো বই ছেপেছে, সেই বইগুলো আমাকে দেখালো, অত্যন্ত নিম্নমানের বই, এবং আমি অনেক এনজিওর স্কুলেও গেছি, কোন ছাত্র নেই, কোন লেখাপড়া নেই। সবচেয়ে প্রধান এনজিও এবং সবচেয়ে যা হাস্যকর সেটি হচ্ছে গ্রামীণব্যাংক। ব্যাংক এমন কিছু মহাগৌরবের হতে পারেনা। যদি আমরা গ্রামীণব্যাংক প্রধানকে দিনরাত পুরষ্কার দিতে থাকি তাহলে অগ্রণী ব্যাংকের প্রধানকে, সোনালী ব্যাংকের প্রধানকে, কৃষি ব্যাংকের প্রধানকেও দিতে পারি। এটি এমন কি আহামরি যে এটিকে নিয়ে এতো মেতে থাকতে হবে ? আমি লক্ষ্য করেছি যে, এই ব্যাংকটি একব্যক্তিকেন্দ্রিক, তার মহিমা প্রচার করাই হচ্ছে এই ব্যাংকটির কাজ। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে তার পুরষ্কার পাওয়া, তার জীবনীর আত্মপ্রচার করা এবং যত রকম মহিমা তাকে এনে দিতে হবে – সে বোধ হয় মহিমালুব্ধ মানুষ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং আমি ইতোমধ্যে অনেকগুলো গ্রামীণ ব্যাংক কর্মকর্তা কর্মচারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, তারা আমাকে বলেছে স্যার আমরা তো পাগল হয়ে গেলাম। একজনের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে, কারণ ঐ লোকটি সকালবেলা হোন্ডা করে গিয়ে শুধু হানা দেয় টাকা তোলার জন্য যাদেরকে ঋণ দেওয়া হয়েছে তাদের কাছ থেকে, বলেছে এমনভাবে, যাচ্ছি এবং যাচ্ছি এবং যাচ্ছি যে আমার পাগল হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। আরেকজন ভদ্রমহিলা তার স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গেছে কারণ তার স্বামী ছুটতে ছুটতে ছুটতে ছুটতে উন্মাদ হয়ে গেছে, ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে এখন বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গেছে, এটি উত্তরবঙ্গের ঘটনা। এবং যেভাবে গ্রামীণ টাকা আদায় করে তাতে আমার মনে হয়, এই ব্যাংকের যিনি প্রধান তিনি একজন কাবুলিওয়ালায় পরিণত হয়েছেন, যে ডঃ ইউনূস এখন ইউনূস কাবুলিওয়ালায় পরিণত হয়েছেন । এই পুরষ্কার থামাতে হবে। এতো পুরষ্কার এতো ইংরেজি এবং জার্মান ভাষায় আত্মজীবনী একটা ব্যাংকের প্রধানের কাছে আমরা চাইনা। এবং আসলে যে- কাজগুলো হচ্ছে তা দালালি হচ্ছে। মনে করা যাক, গ্রামীণব্যাংক জনগণের কল্যাণই যদি করতে চায়, ওর মোবাইল ফোনের ব্যবসার কি প্রয়োজন ? মোবাইল ফোনের ব্যবসা করার জন্য আরো অনেক মানুষ রয়েছে। সমাজকল্যাণের জন্য যে সংস্থাটি কাজ করছে তার মোবাইল ফোনের ব্যবসা করা চলেনা। এমনকি আমি অত্যন্ত বেদনাদায়ক একটি বিজ্ঞাপন দেখেছি, বিজ্ঞাপনে বলছে, আপনারা ডেঙ্গুজ্বরের খবরটি গ্রামীণ মোবাইলে জানান । মানুষ অসুস্থ হচ্ছে ডেঙ্গুজ্বরে, তারা বিজ্ঞাপন দিচ্ছে গ্রামীণ মোবাইলে ডেঙ্গুজ্বরের খবরটি জানান, আমি অবশ্য অবিকল বলতে পারলাম না, তবে আমি এরকম দেখেছি। ফলে এটি একটি কাবুলিওয়ালার প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে এবং এর প্রধান কাবুলিওয়ালা শুধু পুরষ্কার পাচ্ছে। ……গ্রামীণব্যাংক মহিলাদের নামে টাকা দেয় এবং মহিলাদের চুল ধরে টেনে তাকা আদায় করে আনে। আমরা কাবুলিওয়ালার কথা জানতাম, আঙুর পেস্তা বাদাম বিক্রি করতো এবং টাকা সুদে ধার দিতো, তাদের মতই ডঃ ইউনূস এখন ইউনূস কাবুলিওয়ালা হয়ে গেছেন।…এতো পুরষ্কার, আমার ঘেন্না ধরে গেছে। এবং আমি তার দু একটি লেখা পড়ে দেখেছি, এগুলো অত্যন্ত তুচ্ছ লেখা।
ভোরের শিশিরঃ মার্চ ২০০৪ (একুশ আমাদের অঘোষিত স্বাধীনতা দিবস পৃষ্ঠা-১৪৪-১৪৫)

ব্যক্তিত্ব

ব্যক্তিত্বের পূর্ব কথা:-
আমরা জানি মানুষ বলতে মানবতা নয়; কিন্তু মানবতা বলতেই মানুষ। মনবীয় গুণে গুণান্বিত ব্যক্তিই মানবতার ধারক ও বাহক। ব্যক্তি বলতে ব্যক্তিত্ব নয়; কিন্তু ব্যক্তিত্ব বলতেই ব্যক্তি। আর তাই ব্যক্তি বলতে কোনো সাধারণ একজন মানুষকে বুঝায়।
এানুষ যেখানে ব্যক্তিত্ব ও মানবতা সেখানে। কিন্তু মানুষ যেখানে নেই; ব্যক্তিত্ব ও মানবতা সেখানে নেই। মানব জীবনের সবকটি গুণাবলীর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হল ব্যক্তিত্ব ও মানবতা। আর ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘাটানোর জন্য ব্যক্তি স্বধীনতা প্রয়োজন। কারণ সুপ্ত মেধা, সুপ্ত ক্ষমতা, সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটানোর নামই ব্যক্তিত্ব বিকাশ।
জীবন ধারণের পক্ষে যেমন খদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান ইত্যাদি অপরিহার্য তেমনি জীবন যাপনের জন্যও ব্যক্তিত্ব অপরিহার্য। ব্যক্তিত্ব বলতে আমরা সাধারণত বুঝি আমাদের নিজস্ব সত্তার যে সমস্ত গুণ আছে সেগুলোকে সুষ্ঠ বিকাশের সঠিক পথে চালানো। অর্থাৎ এক কথায় নিজস্ব গুণাবলীর প্রকৃত প্রতিফলন ঘটানো। মানব জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপেই এর প্রয়োজন রয়েছে। আবার ব্যক্তিত্ব বলতে কিন্তু উচু কণ্ঠস্বর, ভাবভঙ্গি, দৃষ্টি, চেহারা ও অস্বাভাবিক উচ্চতাকে/শরীরকে বুঝায়না।

ব্যক্তিত্ব যা

ব্যক্তিত্ব হল এমনই কোনো সীলমোহর যার ছাপ আমরা মানুষের উপর রেখে যাই। ব্যক্তিত্ব হল কার্যকরী সম্পদ।-হারর্বার্ড ক্যাশন
ব্যক্তি জীবনের ব্যক্তিত্বের সীমারেখা নির্ধারিত হয় কথাবার্তায়, আচার-আচরণে, চালচলনে, ধ্যান-ধারণায় ও মন-মানসিকতায়।
সাফল্যের চাবীকাঠি
চৌম্বক শক্তি
অগ্রণী শক্তি বা এগিয়ে নেয়ার শক্তি
মানুষের চালনা শক্তি
একটি আদর্শ, একটি দর্শন
চারিত্রিক গুণাবলী

ব্যক্তিত্ব হীনতা যা ঘটায়

ব্যক্তিত্বহীনদের আত্ম-নিয়ন্ত্রণ থাকেনা
আত্ম-নির্ভরশীল হতে পারেনা/পরনির্ভরশীল হয়ে পরে
আত্ম-জ্ঞান, আত্ম-শিক্ষা, আত্ম-উপলব্দি থাকেনা
আত্ম-বিশ্লেষণ, আত্ম-সমালোচনা, আত্ম-জিজ্ঞাসা ও আত্ম-শুদ্ধি করতে পারেনা
আত্ম-ত্যাগের মন-মানসিকতা হারিয়ে ফেলে
আত্ম-সম্মান করেনা
মানবতা লোপ পায়
ইচ্ছা, স্বপ্ন, লক্ষ্য হারায়
ভয় পায়
হীনমন্যতায় ভোগে
কর্মদক্ষতা হারায়
গর্বোপরি ব্যর্থ হয়

ব্যক্তিত্ব অর্জনের ফলে যা হয়

সমস্ত বাধা, ভয়, হীনমন্যতা, দুশ্চিন্তা, সন্দেহ, ঘৃণা, ঈর্ষা, হতাশা, ক্ষতি, ব্যর্থতা, কদর্যতা, তিক্ততা, কষ্ট, অশান্তি ইত্যাদি দূর/জয় করা যায়
প্রয়োজনের সময় কর্তৃত্বের অবস্থা দান করবে। ব্যক্তিত্বের শক্তি আপনার ধারণার বাইরে আপনাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
গ্রহণযোগ্যতা লাভ করা যায়
প্রতিষ্ঠিত হওয়া যায়
প্রভাব বিস্তার করা যায়
নেতৃত্ব দেয়া যায়
জনপ্রিয় হওয়া যায়/ খ্যতি লাভ হয়
সাফল্য পাওয়া যায়
শ্রদ্ধা পাওয়া যায়
ক্ষমতা দখল করা যায়
বন্ধু লাভে সহায়ক হয়
বেচে থাকার আনন্দ পাওয়া যায়
নিজেকে জানা/ আবিষ্কার করা যায়
অন্ধভাবে ভুল করার হাত থেকে রক্ষা করবে

ব্যক্তিত্ব

আভিধানিক অর্থ-ব্যক্তি বিশেষের বৈশিষ্ট, স্বপ্রধান্য, আত্মকেন্দ্রিকতা, ব্যক্তিগত অবস্থা, বিশেষভাবে খ্যাতিমান, কোনো ব্যক্তির শারীরিক বৈশিষ্ট, স্পষ্টতা, পার্থক্য ইত্যাদি। personality, individualism, distinctness
ব্যক্তিত্ব গঠন
প্রখর বাস্তব বুদ্ধি, চতুরতা ও সহিষ্ণুতা থাকলে পুঁথিগত শিক্ষা না থাকা সত্তেও ব্যক্তিত্ব পূরণে বাধা হবে না। কারণ ব্যক্তিত্ব ধীরে ধীরে গড়ে উঠে। তার জন্য অনেক পরিশ্রম করতে হয়।
আমাদেও সহজাত ক্ষমতাকে নমনীয় করে তুলতে হবে। নমনীয় করতে হবে তার ইচ্ছা, বাসনা, আবেগ আর কল্পনাকেও। আর এই পথধরেই ব্যক্তিত্বকে গঠন করতে হয়।

এছাড়া যা করতে হবেঃ-
তর্ক করা যাবে না (যুক্তিপূর্ণ তর্ক হতে হবে)
কথার সাথে কাজের মিল রাখা
করুনার পাত্র হওয়া যাবেনা
শুদ্ধ ভাষায় কথা বলতে হবে
নিরপেক্ষভাবে কথা বলা
একান্ত গোপন বিষয় কাউকেই বলা যাবেনা
নিজের ব্যক্তিগত বিষয়ে কাউকে নাক গলাতে দেয়া যাবেনা
অনধিকারচর্চা করা যাবে না
অন্যের মতকে শ্রদ্ধা করতে হবে
জীবনের ভারসাম্য রক্ষা করা
স্মার্ট হতে হবে-(স্মার্ট বলতে আমরা যা বুঝি)
-পরিচ্ছন্ন
-দক্ষ
-চটপটে
-বুদ্ধিমান
-উপস্থিত বুদ্ধিও অধিকারী
দায়িত্ব ও কর্তব্য ঠিক মত পালন করা
-মাতাপিতার প্রতি
-দেশের প্রতি

ব্যক্তিত্বের অনুভুতি/ যাদু :-

কার সাথে কথা বলছেন তিনি ভাবতে চাননা, তার কথা শুনে যান
তার চমৎকার ধৈর্য্য আছে
মানুষের সাথে মেলমেশা করতে তার কোনোরকম অসুবিধা হয়না
যেখানেই যান সেখানেই তিনি বেশ মানিয়ে চলতে পারেন
তিনি কখনই স্বার্থপর মানুষ নন
যে লোকই তার সংস্পর্শে আসে তাকেই বলতে শোনা যায় “কেমন চমৎকার মানুষ, আহা ওর মতো যদি হতে পারতাম”। এর ভিতরে অনেক কিছু আছে, জিনিয়াস ইত্যাদি ইত্যাদি।
মনোরঞ্জন করার ওই যাদু যদি আমার থাকত।

ডেল কার্নেগীর ব্যক্তিত্বের পরীক্ষা:-

একজন মানুষের সঠিক ব্যক্তিত্ব প্রকাশের চাবিকাঠি চারটি। এই চারটি বিষয় নির্ভর করেই গড়ে ওঠে যেকোনো মানুষের ব্যক্তিত্ব। যথাঃ-
১.আমরা কি করি?
২.আমাদের বাহ্যিক আকৃতি কী?
৩.আমরা কীভাবে কী কথা বলি?
৪.আমাদের সেই বলার পদ্ধতি কী রকম?

ব্যক্তিত্বের বিকাশ:-

মানুষের জ্ঞান, বিশ্বাস, আচার-আচরণ, রুচী, অভ্যাস ইত্যাদি মিলিয়ে তার ব্যক্তিত্ব। যাদেও মধ্যে মানবিক গুণের চেয়ে পাশবিক গুণ বেশি অর্থাৎ যারা চরিত্রহীন তাদেরকে ব্যক্তিত্বহীন বলা যায়। এ্যাড লারের মতে- ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব পরিবেশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। ব্যক্তির প্রধান উপাদান হচ্ছে তার চরিত্র। কুপরিশেকে জয় করে যদি চরিত্রকে অক্ষত রাখা যায়, সেখানে ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব সুন্দর হয়ে ফুটে উঠে।
চরিত্র বলতে বুঝায় মানবীয় ও নৈতিক গুণাবলী সমৃদ্ধ আচার ব্যবহার চাল-চলন। ব্যক্তির মূল উৎস হচ্ছে মানসিকতা। বুদ্ধি ও আবেক দ্বারাই মানসিকতা গড়ে উঠে। মানসিকতা আবার নিয়ন্ত্রিত হয় জ্ঞান দ্বারা। জ্ঞান হচ্ছে ব্যক্তিত্বের ১ম/ মূল উপাদান। যার মধ্যে জ্ঞান আছে তার মধ্যে ব্যক্তিত্ব অবশ্যই থাকবে। একারণে ব্যক্তিত্বকে সুন্দর করতে হলে জ্ঞানের সাধনা করা প্রয়োজন। ব্যক্তিত্বের ২য় অনুভূতি। যাদের অনুভূতি কম তারা সাধারণত ব্যক্তিত্বহীন হতে পারে। জ্ঞানীরা অনুভূতি সম্পন্ন বলেই মান সম্মানবোধ তাদের প্রখর। ব্যক্তিত্বকে ছোট করতে পারে এমন কাজ থেকে তারা সদা-সর্বদা বিরত থাকে।

আমরা এখন ব্যক্তিত্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সম্পর্কে জানব। যেমন:- জ্ঞান, পেশাদারিত্ব,

জ্ঞান:-

১.জ্ঞান হচ্ছে অনুধাবনের ফল বা তথ্য ( তথ্যঃ- উপাত্ত (ডাটা) প্রক্রিয়াকরণের পর নির্দিষ্ট চাহিদার প্রেক্ষিতে যে সুশৃঙ্খল ফলাফল পাওয়া যায় তাকে তথ্য বলে)
২.জ্ঞান হচ্ছে নিয়মতান্ত্রিক ও বস্তুভিত্তিক বিশ্লেষণপদ্ধতি
৩.জ্ঞান হচ্ছে যুক্তিভিত্তিকভাবে আহরিত তথ্য ও তার ভিত্তিতে যুক্তিভিত্তিক সিদ্ধান্তগ্রহণের পদ্ধতি।

জ্ঞান অর্জন করার পদ্ধতিঃ

দোয়া ও প্রার্থনা করে
অনুভব ও অনুমানের মাধ্যমে জ্ঞানার্জন করা যায়
চিন্তাশক্তি প্রয়োগ করে
অভিজ্ঞতা থেকে
অতিত থেকে
জ্ঞানীদের সাথে মিশে
মূর্ত জগতকে দেখে
মূর্ত এবং বিমূর্ত জগত সম্পর্কে চিন্তা গবেষণা করে
শুনে ও ভ্রমণ করে
বই পড়ে
জীবনী (হাসান আল-বান্না, ইমাম শামায়েল, আনোয়ার পাশা, ওসামা বিন লাদেন, হিটলার)
ধর্মীয় (কুরআনা, হাদীস, বাইবেল, মহাভারত)
বিখ্যাত লেখকদের লেখা (ডঃ ইউসূফ আল কার্যাভি, সাইয়েদ কুতুব, ডাঃ জাকির নায়েক)
সাধারণ জ্ঞান সম্পর্কিত বই
বিজ্ঞান ও শিক্ষামূলক সিরিজ (সাইমুম, ক্রুসেড, রিসালায়ে নূর)
টিভি দেখে (ডিসকভারি, পিস টিভি, দিগন্ত টিভি)
রেডিও শুনে (টুডে, ফুর্তি)
পত্রিকা পড়ে
-দৈনিক (আমার দেশ, নয়াদিগন্ত, ইত্তেফাক)
-সাপ্তাহিক (
-মাসিক (কিশোর কণ্ঠ, আলোর দ্বীপ, পৃথিবী, মদীনা)
নেট সার্স করে
1.http://en.wikipedia.org/wiki/Yusuf_al-Qaradawi
2.http://en.wikipedia.org/wiki/Hassan_al_Banna
3.www.irf.net
4.www.quotationspage.com
5.www.mindstools.com
6.www.telesalesprompt.co.uk
7.www.achievement.org
প্রশিক্ষণ নিয়ে
সমস্ত পেশার লোকদের সাথে মিশে

আমরা নাইটিঙ্গলের নাম জানি তিনি নার্স পেশায় বিখ্যাত হয়েছিলেন। ওসামা বিন লাদেন জঙ্গি পেশায় বিখ্যাত হয়েছিলেন। তেমনি আমি কিছু পদ্ধতি পেয়েছি সেটিই আপনাদের কাছে শেয়ার করলাম। আশাকরি আপনাদের কাজে লাগবে।

পেশাদারিত্বঃ-

নিজের স্বপ্ন লেখা ও লক্ষ নির্ধারণ করা
যে সেক্টরে কাজ করেন সেখানের দায়িত্বশীল/ লিডারদের সাথে সময় দেয়া নিজের পেশাকে বুঝার জন্য
ডিসিপ্লিন/ সিস্টেম মানা
ট্রেনিং করা বা তথ্য সংগ্রহ করা
পেশার যে কোনো মিটিংয়ে উপস্থিত থাকা
নিয়মিত অফিসে আসা
উদ্যেগী হওয়া
পেশাটাকে ভালবাসা
অফিসিয়াল টুলস সাথে রাখা (পেড, কলম, ব্যাগ, লিগ্যাল পেপার, ব্রুশিয়ার, কেটালগ ইত্যাদি)
প্রপার ড্রেসকোড
ধৈর্য ধরা ও লেগে থাকা
প্রো-একটিভ, ক্রিয়েটিভ ও লিডার হওয়া
প্ল্যান করে কাজে নেমে পড়া
অভিজ্ঞতা অর্জন করা (কিভাবে অভিজ্ঞতা অর্জন করা যায়)
-দীর্ঘদিন লেগে থেকে
-পরিবেশ থেকে
-প্রশিক্ষণ নিয়ে
-অপরের ভুল বা বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে
-নিজের ভুল থেকে
-সব ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে
-স্ট্যামিনা/ কঠোর পরিশ্রম করে

মানসিকতাঃ-

ইমাজিনেশন করতে হবে
মেডিটেশন করতে হবে (না জানলে যে বইগুলির সহায়তা নিবেন)
১.The power of positive thinking and attitude-Remez Sasson
২.সাফল্যের চাবিকাঠি কোয়ান্টাম মেথড- মহাজাতক সহিদ আল বোখারি
৩.আত্ম উন্নয়ন-বিদ্যুৎ মিত্র
৪.নিজেকে জানো- বিদ্যুৎ মিত্র
৫.সুখ-সমৃদ্ধি- বিদ্যুৎ মিত্র
৬.আত্মসম্মোহন- বিদ্যুৎ মিত্র
৭.নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারবেননা-ডাঃ ড্যানিয়েল জি আমেন
৮.চেতনা অতিচেতনা নিরাময় ও প্রশান্তি-মহাজাতক সহিদ আল বোখারি
মটিভেশনাল বই পড়তে হবে
১.বিগব্যাঙ থেকে মানুষ-রুশো তাহের
২.ব্যক্তিত্ব বিকাশ ও সাফল্যের সহজ উপায়-ডেল কার্নেগী
৩.আপনি প্রতিষ্ঠিত যদি হতে চান-ডেল কার্নেগী
৪.ধনী হতে কদিন লাগে-হারবার্ট ক্যাশন
৫.মানুষকে বাগ মানানোর কলাকৌশল-লেসলি টি গিবলিন
৬.মোরা বড় জতে চাই-আহসান হাবিব ইমরোজ
৭.সবার আগে নিজেকে গড়ো-আব্দুস্ শহীদ নাসিম
৮.ডা: লুৎফর রহমান শ্রেষ্ঠ রচনাসমগ্র
৯.বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ১০০ মনিষি-মাইকেল এইচ হার্ট
১০.দৃষ্টিভঙ্গি বদলান জীবন বদলে যাবে-গোলাম হাফিজ
১১.সফলতার রহস্য-মো: আয়াজ করিম
12.Freedom is not free-Shiv Khera
13.Living with honour-Shiv Khera
14.The 7 habits of highly effective people-Stephen R Covey
15.The magic of thinking big-David J.Schwartz Phd
16.Business school-Robert T Kiyosaki
17.Rich dad poor dad-Robert T Kiyosaki
18.Questions are the answer-Allan Pease
19.The greatest opportunity in the history of the world-John Kalench
20.Success and creativity within seven days-Garath Luis
অভিজ্ঞ, জ্ঞানী এবং উচু ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষের সাথে মিশতে হবে
যারা বড় বড় স্বপ্ন দেখে তাদের সাথে মিশতে হবে
যারা গোছালো, লক্ষ্য-উদ্দেশ্য আছে, পজিটিভ, ক্রিয়েটিভ, ও প্রো-একটিভ তাদের সাথে মিশতে হবে
বড় ও প্রশস্ত রাস্তায় যেতে হবে
সমুদ্রে যেতে হবে
বড় সমাবেশ, মিছিল, মেরাথন ট্রেনিং ও বড় হাট-বাজারে যেতে হবে
মটিভেশনাল সিডি, ভিসিডি, ডিভিডি দেখতে হবে
সেলিব্রেশন প্রোগ্রামে যেতে হবে
ইনটারনেট সার্স করতে হবে
পাহার পর্বতে যেতে হবে

চলবে-

ইংরেজী নিয়ে মজা

ইংরেজী নিয়ে মজা

১.আমরা অনেকেই ইংরেজী খুবে একটা জানিনা। তারপরও কিছু একটা জানলে তার কাছেধারে কেউ ঘেষতে পারিনা। যাইহোক আজ মজাদার কিছু ইংরেজী কিছু শব্দ নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হলাম।
Higgledy-piggleddy-হ-য-ব-র-ল
Tit-bit-খোশ-খবর
Rag-tag-নীচু শ্রেণী
Riff-raff- সমাজের নিস্মস্থ শ্রেণী
Nitty-gritty-সার কথা
Nit-wit-জড়ধী
Flip-flaf-পটকা
Shillyshally-দ্বিধা ভাব
Hubble-bubble-গড়গড়া
Dilly-dally-সময় অপচয় করা
Hoity-toity-দেমাগী
Hodge-podge-হাবদা গোবদা
Hocus-pocus-প্রতারণা
Hob-nob-গল্প গুজব করা
Hanky-panky-হাতের কারসাজি

২.Reviver- এটি ইংরেজীতে সবচেয়ে বড় শব্দ। যা ডান থেকে বাঁয়ে বা বাম থেকে ডানে পড়লে একই উচ্চারণ Refer I Level-এদুটিও আগেরটির মত।

৩.Quick brown fox jumps over the lazy dog- এ বাক্যটিতে ইংরেজী বর্ণমালার ২৬টি অক্ষরই আছে।

৪.কিছু অদ্ভুত ইংরেজী শব্দ।

Ooze-কাদা
Eel-বাইন মাছ
Err-ভুল
Baa-মেষের ডাক
Odd-অদ্ভুত
Off-দূরে
Zoo-পশুশালা
Woo-প্রেম করা
Coo-ঘুগুর মত শব্দ করা
Too-আরও
Fee-বিষয়
Lee-সুরক্ষিত দিক
Pee-প্রসার করা
Bee-মৌমাছি
See-দেখা

৫.এগুলি হচ্ছে দুটি বর্ণ নিয়ে প্রত্যেকটি দুটি করে চারটি। আমার কাছে অদ্ভুত লাগল।
Kook-ক্ষেপা
Otto-আতর
Noon-মধ্যাহ্ন
Deed-কার্য
Peep-উঁকি মারা
Poop-জাহাজের পশ্চাদ্ভাগস্থিত সর্বোচ্চ পাটাটন।

হরতাল

হরতাল

ইকবাল হোছাইন ইকু

হরতাল নিয়ে চলছে খেলা

রাজনীতিটার ময়দানে।

কোন দলেরা মাতাল হয়

ব্যস্ত নিজের জয়গানে।

হয়না তাদের নেতাগণে

হরতাল ছাড়া চাঙ্গা।

তাই বলেকি সারা দেশে

ছড়িয়ে দিবে দাঙ্গা।

যেখানে পাও সেখানে শুধু

করো ওদের বর্জন।

ভেঙে যাবে তবেই তাদের

সব ক্ষমতা অর্জন।