ক্ষুদ্রঋণ

ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি :-

সংক্ষিপ্ত ধারণাঃ- ১.প্রধান উদ্দেশ্য দারিদ্র দুর করা।

২.প্রদেয় ঋণের ৯৫% নারীদের (গ্রামীন ব্যাংক হতে ঋণ প্রাপ্তির শর্তাবলী-ক.দরিদ্র ভূমিহীন মহিলা হতে হবে। খ.বিবাহিতা হতে হবে। গ.স্থানীয় কেন্দ্রের নিকটবর্তী বাসিন্দা হতে হবে।) দেয়া হয়।

৩.কেউ ঋণ পেতে চাইলে অবশ্যই তাকে একটি গ্রুপে জয়েন করতে হবে।

৪.কোনো আইনী কাঠামোর আওতায় নয় বরং বিশ্বাসের ওপর ঋণ প্রদান করা হয়। ৫.প্রচলিত ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রতি এটি প্রচ্ছন্ন একটি চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশে ক্ষুদ্রঋণ পরিচালনাকারী সংস্থাসমূহের মধ্যে প্রধানতম দুটি হলো-ক)গ্রামীণ ব্যাংক ও খ)ব্র্যাক।
ক্ষুদঋণ কেনো দারিদ্র্য বিমোচনে সফল হয়নিঃ- প্রফেসর শাহ মুহাম্মদ হাবীবুর রহমান, অর্থনীত বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়-২০০৭। প্রশ্নের উত্তরটি তার মাঠগবেষণা হতে যেসব কারণ পাওয়া গেছে সংক্ষেপে সেগুলো বর্ণনা করা হলোঃ
১.সুদের হার বেশ চড়া।(৪৭% থেকেও বেশি)
২.ঋণ গ্রহণের প্রায় অব্যবহিত পর হতেই কিস্তি প্রদান। (সুদের হার ঋণ নেয়ার প্রথম দিন হতেই গণনা শুরু হয়।)
৩.গ্রুপের একজনই ঋণ পায়, সে শোধ না করা পর্যন্ত অন্যদের অপেক্ষা করতে হয়।
৪.সংসারের অভাবের তাড়নায় প্রাপ্ত ঋণ অনেক সময়ই খাদ্য ও চিকিৎসায় ব্যয় করতে হয়।
৫.উৎপাদনশীল কাজে পেশাগত প্রশিক্ষণের অভাব।
৬.ঋণের পরিমাণ পর্যাপ্ত না হওয়া।
৭.সুদ ও ঋণ পরিশোধের পর হাতে আর পূঁজি না থাকায় পুনরায় বেকার জীবন যাপন।
৮. স্বামীদের হাতে ঋণের অর্থ তুলে দিতে বাধ্য হওয়া।
৯.অনেক সময়েই কিস্তির টাকা সংগ্রহে ব্যর্থ হয়ে অন্যের নিকট হতে ঋণ নেয়া।
১০.একই সঙ্গে একাধিক উদ্দেশ্যে ঋণ না পাওয়া। (অবশ্য গ্রামীণ ব্যাংক এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম)
 ক্ষুদ্রঋণ গন্তব্য থেকে বহু দূরেঃ- সীমিত আকারের কিছু সফলতা বাদ দিলে ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি সত্যিকার অর্থেই তাদের গন্তব্য থেকে বহুদূরে অবস্থান করছে। যেমনি আলোচিত, তেমনি সমালোচিত ক্ষুদ্রঋণ কেনো তার লক্ষ্যে অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছে তার রয়েছে নানাবিধ কারণ।

১.ঋণ গ্রহণ পরবর্তী ব্যবসা পরিচালনার জন্য তাদের কোনো প্রশিক্ষণ দেয়া হয় না।

২.চরম দরিদ্র যারা ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচী তাদের পারতপক্ষে এড়িয়ে গেছে। ন্যূনতম যাদের ৫ একর জমি বা তার সমপরিমাণ অর্থ না থাকে তাকে ঋণ দেয়া হয় না।

৩.পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যারা একবার ঋণ নিয়েছে তারা স্থায়ীভাবে একটি ‘ঋণচক্রে’ জড়িয়ে পড়েছেন এবং এখন তাদের এই ঋণ ছাড়া চলে না। কিন্তু হবার কথা ছিল উল্টোটা । ৪.সামাজিক বৈষম্য বাড়ছে ক্ষুদ্রঋণের ফলে। একটি শ্রেণী যারা চরম, ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির বাইরে থাকার ফলে দরিদ্র এবং চরম দরিদ্রদের মধ্যে আয় বৈষম্য বাড়ছে।

৫.সবচে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি হল দরিদ্রদের সাথে ব্যবসা করে দারিদ্র্য দূর করা যাবে না। তাদেরকে সেবার মানসিকতা নিয়ে কর্মসূচি চালাতে হবে। একজন সচ্ছল ব্যক্তির চাইতেও বেশি সুদের হারে ঋণ নিয়ে কিভাবে এজন দরিদ্র ব্যক্তির জক্ষে দারিদ্র্তা জয় করা সম্ভ? -আহমেদ সাবিত-০৭

ক্ষুদ্রঋণের সমালোচনাঃ– গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে দারিদ্রকে জাদুঘরে পাঠানোর যে মহান পরিকল্পনা নিয়েছেন তাতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ক্ষুদ্রঋণ-তত্ত্ব দিয়ে দারিদ্র বিমোচনের অলীক স্বপ্ন ধোপে টেকে না। প্রথম আলোর গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেন- ক্ষুদ্রঋণ দারিদ্র্য বিমোচনের হাতিয়ার নয়। মোস্তফা কে মুজেরী বলেন,বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচন কৌশলে ক্ষুদ্রঋণকে বাইরে রাখছি। অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, ক্ষুদ্রঋণ দিয়েই শুধু দারিদ্র্য বিমোচন সম্ভব নয়। বানিজ্যিক ব্যাংকের সবচেয়ে বড় উদাহরণ তো গ্রামীণব্যাংক, ২৬-৪০% চড়াসুদে মুনাফা লোটার পরেও বলতে চান, ডঃ ইউনূস বানিজ্যিক নন ? যথার্থ শিক্ষার মাধ্যমে নারী স্বাবলম্বী হবে যা নারীর প্রকৃত ক্ষমতায়নের পথ সুগম করবে, অশিক্ষিত নারীকে ঋণ প্রদানের মাধ্যমে এবং অযাচিতভাবে ডিরেক্টর বানিয়ে নারীর প্রকৃত মুক্তি কখনোই আসবেনা। সাধারণ জনগণের অশিক্ষার সুযোগ নিয়ে আমাদের শিক্ষিত জ্ঞানপাপী বুদ্ধিজীবীরা আইন বহির্ভূত যা খুশী তাই বলে আর কতকাল এভাবে লোক ঠকাবেন ? ডঃ ইউনূস তার নেটওয়ার্কিং বুদ্ধির জোরে পশ্চিমা বিশ্বে একটি শক্ত অবস্থান গড়তে সক্ষম হয়েছেন, তার পলিটিক্যালি শক্তিশালী বন্ধুগুলোর ভূমিকাই তাকে নোবেল এনে দিয়েছে,এই যুগে কুষীদজীবীরা নোবেল পুরষ্কার পাচ্ছেন,পরবর্তী যুগে হয়ত আলু পটল ব্যবসায়ী কিংবা মুদি দোকানদারেরাও নোবেল শান্তি পুরষ্কার পাবেন,অবাক হওয়ার কিছু নেই,কারণ এই পুরষ্কারের পেছনে পশ্চিমা রাষ্ট্রের শক্তিশালী নেতাদের হাত থাকে তাই কোন মুদি দোকানদার যদি বিল ক্লিনটনদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে পারেন এবং বিদেশী স্বার্থ রক্ষা করে চলতে পারেন তাহলে তিনিও একদিন অমন পুরষ্কারের আশা করতে পারেন । এটা কি দেবদেবী শাসিত গ্রীক সাম্রাজ্য কিংবা যাজক শাসিত রোমান সাম্রাজ্য যে ইউনূস সাহেবের অসীম ক্ষমতা থাকবে ? বাংলাদেশের মত গনতন্ত্রকামী একটি দরিদ্র দেশে ইউনূস সাহেবের মত কিছু রক্তচোষা ভ্যাম্পায়াররা বছরের পর বছর বিপুল এক জনগোষ্ঠীকে ঋণের জালে জড়াবে এবং তাদের থেকে চড়া সুদ গ্রহণ করে বিশাল অঙ্কের মুনাফা লুটেই যাবে,এতবড় অন্যায় কখনোই মেনে নেওয়া যায়না। এম এম আকাশের মতে, “ক্ষুদ্রঋণ একটি লোভনীয় ব্যবসায় রূপ নিচ্ছে। কেউ যদি বলে,আমি ব্যবসা করে মুনাফা করব,তবে তাকে কর দিতে হবে”। সুদ সমেত আসল না পেলে আপনার ব্যাঙ্কের কর্মকর্তারা গরীব ঋণগ্রহীতার গরু-বাছুর আসবাবপত্র হাড়িপাতিল টিনের চালা এমনকি নাক-ফুল কিংবা গলায় পরার সাধারণ অলঙ্কারাদি খুলে নিয়ে যায়,এর পেছনে কি আপনার কোনই গুপ্ত নির্দেশনা নেই ? ১৯৭১ সালে বিদেশে ছিলেন তিনি,দেশের জনগণ যখন মহান মুক্তিযুদ্ধের মহাসংগ্রামে লিপ্ত,তখন উনি ব্যস্ত ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রী নিতে। জীবনে কোনোদিন অন্যায় অত্যাচার অবিচারের বিরুদ্ধে উনি সোচ্চার হয়ে সামনে দাঁড়িয়েছেন ? প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ – রাজনীতিবিদ ডঃ শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যাকাণ্ডের পরে ডঃ ইউনূসের ন্যক্কারজনক নীরবতা জনমানসে প্রশ্ন তোলে। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরে নীরব ছিলেন,স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সময় নীরব ছিলেন,কানসাট –মঙ্গা সহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সময় ইউনূস সাহেবের নীরব অবস্থান এটাই প্রমাণিত করে যে,উনি নিজের ব্যক্তিগত লাভ কিংবা সাফল্য ব্যতীত জীবনে আর কোনকিছু দেখার প্রয়োজন বোধকরেননি।
এবার আসা যাক একটু ব্যক্তিগত প্রসঙ্গে

 ডঃ ইউনূস তনয়া দীনা ইউনূসের অতিবিলাসী এবং অসংযত জীবনযাত্রার কুরুচিপূর্ণ ছবি যারা সামাজিক যোগাযোগের সাইট ফেসবুকে দেখেছেন,তাদের মনে নিশ্চয়ই প্রশ্ন জেগেছে যে,বাবা হিশেবে ডঃ ইউনূস কতটুকু সার্থকভাবে তার দায়িত্ব পালন করেছেন ? বাংলাদেশের মত দরিদ্র দেশে যেখানে গরিবের দুবেলা দুমুঠো খাবার জোটেনা,সেখানে ইউনূস তনয়ারা লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে এদেশ ওদেশ ঘুরে বেড়ান,ব্যাংকক –সিঙ্গাপুর –ইউরোপ –আমেরিকায় শপিংয়ে যান ;যেই ব্যক্তি সারাদিন গ্রামীণ ফতুয়া পরে থাকেন,তারই কন্যার কেন বিদেশী কুরুচিপূর্ণ পোশাকের প্রতি এত ঝোঁক ? তার মানে কি গ্রামীণ চেক বন্দনা শুধুই ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য প্রণোদিত ? গ্রামীনব্যাংকের উচ্চ সুদের ঋণ,গ্রামীণ ফোনের উচ্চ কলরেট,গ্রামীণ চেকের উচ্চমূল্য সচেতন জনগণ আর বেশিদিন সহ্য করবেনা,অচিরেই তারা বিকল্প কোম্পানিগুলোর দিকে ঝুঁকবে এবং উচ্চমূল্যের গ্রামীনপণ্য বর্জন করা শুরু করবে।
Sat, 09/04/2011 – ডঃ মুশফিক dr_mushfique@yahoo.com
সাংবাদিক ও কথা সাহিত্যিক রাহাত খান, তিনি ‘ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা নন’ শীর্ষক কলামে বলেছেন- ‘দেশের প্রচলিত আইন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রবিধান ও তদারকির আওতায় একটি বিশেষায়িত ব্যাংক হিসেবে ড. ইউনূসকে প্রতিষ্ঠাতা বলা যায় না। তবে তাকে ম্যানেজিং ডাইরেক্টর পর্যন্ত বলা যেতে পারে। … … তার অবর্তমানে নেতৃত্ব তৈরির ক্ষেত্রে তার কার্পণ্য লক্ষণীয়। অনেকেই মনে করতেন, দীপাল বড়ুয়া অথবা খালেদ সামস্ তার পরে এমডি পদে অধিষ্ঠিত হবেন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে উভয়কে সরিয়ে দেয়া হয়। বহির্দেশীয় ব্যবসায়ীদের তার প্রতি আকর্ষণের মূলে রয়েছে ব্যবসায়িক স্বার্থ। যেমন- গ্রামীণ ব্যাংককে কো-লেটারাল বা ইক্যুইটি দিতে হয় না। ট্যাক্স দিতে হয় না। তিনি শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, কিন্তু উচ্চহারের সুদের বিনিময়ে ঋণ দিয়ে কীভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠা করলেন তা বিবেচনার দাবি রাখে।
এনজিও সমূহের বিরোধিতাঃ- বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নাস্তিক বুদ্ধিজীবী ডঃ হুমায়ুন আজাদের ইন্টারভিউ।
অরনি অনুপ শাদীঃ এনজিও সমূহ বা গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকাণ্ডকে আপনার কাছে কেমন লাগে ?
হুমায়ূন আজাদঃ- বাংলাদেশ এখন এনজিওতে ভরে গেছে। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গ গেলে,আমি গত বছর বেড়াতে গিয়েছিলাম, পথে প্রান্তে রাস্তার পাশে পুকুরের ওপর বাড়ির ওপর টিনের ঘরে চমৎকার দালানে গাছের উপরে সমস্ত এনজিওরা দিনরাত কর্মব্যস্ত। আমি অবশ্য কাজ দেখিনি কিন্তু তাদের ঘরবাড়ি সাইনবোর্ড দেখেছি এবং তারা পুরষ্কারের পর পুরষ্কার পাচ্ছে। তারা বাংলাদেশী রাষ্ট্রীয় পুরষ্কার পাচ্ছে, ম্যাগসেসাই পাচ্ছে, পুরষ্কারে ভরে গেছে। কিন্তু এতো এনজিও, এগুলো যদি কোন কাজ করতো,তবে বাংলাদেশে তো এখন সুখ এবং শিক্ষার প্লাবন বয়ে যেত। বছর দশেক আগে সম্ভবত একদল এনজিওর লোক আমার কাছে এসেছিল, তারা শিক্ষা নিয়ে কাজ করে, ……বোধ হয় তখন আড়াইশোর মত এনজিও শিক্ষা নিয়ে কাজ করছিল, তো আমি বলেছিলাম আপনারা কি করেন, বলেছিল আমরা শিক্ষা নিয়ে কাজ করছি। আড়াইশো এনজিও যদি শিক্ষা নিয়ে কাজ করে তাহলে বাংলাদেশে সবাই শিক্ষিত হয়ে যাওয়ার কথা। তারা কতগুলো বই ছেপেছে, সেই বইগুলো আমাকে দেখালো, অত্যন্ত নিম্নমানের বই, এবং আমি অনেক এনজিওর স্কুলেও গেছি, কোন ছাত্র নেই, কোন লেখাপড়া নেই। সবচেয়ে প্রধান এনজিও এবং সবচেয়ে যা হাস্যকর সেটি হচ্ছে গ্রামীণব্যাংক। ব্যাংক এমন কিছু মহাগৌরবের হতে পারেনা। যদি আমরা গ্রামীণব্যাংক প্রধানকে দিনরাত পুরষ্কার দিতে থাকি তাহলে অগ্রণী ব্যাংকের প্রধানকে, সোনালী ব্যাংকের প্রধানকে, কৃষি ব্যাংকের প্রধানকেও দিতে পারি। এটি এমন কি আহামরি যে এটিকে নিয়ে এতো মেতে থাকতে হবে ? আমি লক্ষ্য করেছি যে, এই ব্যাংকটি একব্যক্তিকেন্দ্রিক, তার মহিমা প্রচার করাই হচ্ছে এই ব্যাংকটির কাজ। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে তার পুরষ্কার পাওয়া, তার জীবনীর আত্মপ্রচার করা এবং যত রকম মহিমা তাকে এনে দিতে হবে – সে বোধ হয় মহিমালুব্ধ মানুষ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং আমি ইতোমধ্যে অনেকগুলো গ্রামীণ ব্যাংক কর্মকর্তা কর্মচারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, তারা আমাকে বলেছে স্যার আমরা তো পাগল হয়ে গেলাম। একজনের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে, কারণ ঐ লোকটি সকালবেলা হোন্ডা করে গিয়ে শুধু হানা দেয় টাকা তোলার জন্য যাদেরকে ঋণ দেওয়া হয়েছে তাদের কাছ থেকে, বলেছে এমনভাবে, যাচ্ছি এবং যাচ্ছি এবং যাচ্ছি যে আমার পাগল হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। আরেকজন ভদ্রমহিলা তার স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গেছে কারণ তার স্বামী ছুটতে ছুটতে ছুটতে ছুটতে উন্মাদ হয়ে গেছে, ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে এখন বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গেছে, এটি উত্তরবঙ্গের ঘটনা। এবং যেভাবে গ্রামীণ টাকা আদায় করে তাতে আমার মনে হয়, এই ব্যাংকের যিনি প্রধান তিনি একজন কাবুলিওয়ালায় পরিণত হয়েছেন, যে ডঃ ইউনূস এখন ইউনূস কাবুলিওয়ালায় পরিণত হয়েছেন । এই পুরষ্কার থামাতে হবে। এতো পুরষ্কার এতো ইংরেজি এবং জার্মান ভাষায় আত্মজীবনী একটা ব্যাংকের প্রধানের কাছে আমরা চাইনা। এবং আসলে যে- কাজগুলো হচ্ছে তা দালালি হচ্ছে। মনে করা যাক, গ্রামীণব্যাংক জনগণের কল্যাণই যদি করতে চায়, ওর মোবাইল ফোনের ব্যবসার কি প্রয়োজন ? মোবাইল ফোনের ব্যবসা করার জন্য আরো অনেক মানুষ রয়েছে। সমাজকল্যাণের জন্য যে সংস্থাটি কাজ করছে তার মোবাইল ফোনের ব্যবসা করা চলেনা। এমনকি আমি অত্যন্ত বেদনাদায়ক একটি বিজ্ঞাপন দেখেছি, বিজ্ঞাপনে বলছে, আপনারা ডেঙ্গুজ্বরের খবরটি গ্রামীণ মোবাইলে জানান । মানুষ অসুস্থ হচ্ছে ডেঙ্গুজ্বরে, তারা বিজ্ঞাপন দিচ্ছে গ্রামীণ মোবাইলে ডেঙ্গুজ্বরের খবরটি জানান, আমি অবশ্য অবিকল বলতে পারলাম না, তবে আমি এরকম দেখেছি। ফলে এটি একটি কাবুলিওয়ালার প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে এবং এর প্রধান কাবুলিওয়ালা শুধু পুরষ্কার পাচ্ছে। ……গ্রামীণব্যাংক মহিলাদের নামে টাকা দেয় এবং মহিলাদের চুল ধরে টেনে তাকা আদায় করে আনে। আমরা কাবুলিওয়ালার কথা জানতাম, আঙুর পেস্তা বাদাম বিক্রি করতো এবং টাকা সুদে ধার দিতো, তাদের মতই ডঃ ইউনূস এখন ইউনূস কাবুলিওয়ালা হয়ে গেছেন।…এতো পুরষ্কার, আমার ঘেন্না ধরে গেছে। এবং আমি তার দু একটি লেখা পড়ে দেখেছি, এগুলো অত্যন্ত তুচ্ছ লেখা।
ভোরের শিশিরঃ মার্চ ২০০৪ (একুশ আমাদের অঘোষিত স্বাধীনতা দিবস পৃষ্ঠা-১৪৪-১৪৫)

মন্তব্য করুন

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  পরিবর্তন )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  পরিবর্তন )

Connecting to %s

%d bloggers like this: