পাল্টে যাচ্ছে মানুষের স্মৃতির ভবিষ্যৎ
সফটওয়ার জায়ান্ট মাইক্রোসফট এবার ঘোষণা দিলো যে, তারা এমন এক ডিভাইস তৈরি করছে যার মাধ্যমে মানুষের স্মৃতি ডিজিটাল পদ্ধতিতে ধরে রাখা সম্ভব হবে। মাইক্রোসফটের গবেষক গর্ডন বেল গত এক দশক ধরে তার যাবতীয় অভিজ্ঞতা কম্পিউটারে নিয়মিত জমা করে রাখছেন। তিনি মনে করেন, তথ্য ধরে রাখার জন্য এটিই হচ্ছে সবচে নিরাপদ উপায়। খবর সিএনএন অনলাইন এর।
বার্তা সংস্থটির বরাতে জানা গেছে, মাইক্রোসফট ‘সেন্সক্যাম’ নামের স্মৃতিধারণযোগ্য একটি ক্যামেরা তৈরির বিষয়ে কাজ করছে। এই ক্যামেরাটি একজন মানুষের ঘাড়ে সার্বক্ষণিক ভাবে ঝুলে থাকবে এবং জীবনের প্রতিটা বিষয় ছবির মাধ্যমে ধরে রাখবে।
প্রত্যেকেই বিভিন্ন পারিবারিক অনুষ্ঠান অথবা নানান কাজে প্রতিদিন প্রচুর ডিজিটাল ছবি তোলেন এবং যথারীতি তা সেভও করে রাখেন। কিন্তু ৭৫ বছর বয়স্ক বেল তার বিভিন্ন আলাপচারিতা, মন্তব্য, ভ্রমণ এবং নানা রকম অভিজ্ঞতা সার্বক্ষণিক তার সাথে থাকা ভিডিও ইক্যুইপমেন্ট, ক্যামেরা এবং অডিও রেকর্ডারের মাধ্যমে ধারণ করে রাখেন।
বেল-এর বরাতে বার্তা সংস্থাটি জানিয়েছে, তিনি তার জীবনের অতি ব্যাপারগুলোও যেমনঃ রেস্টুরেন্টের খরচ, ইলেকট্রিক সহ যাবতীয় অন্যান্য বিল এবং মেডিকেল রেকর্ডগুলো পর্যন্ত ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করেন। এমনকি তিনি যে সব ওয়েব পেজগুলো ভিজিট করেন তারও পিডিএফ ফাইল করে জমা রাখেন।
তিনি আরো জানিয়েছেন, অডিও ভিডিও সব মিলে পাহাড়সম তথ্যগুলো তিনি জমা করেছেন মোট ৩৫০ গিগাবাইট জায়গাজুড়ে। তিনি এটিকে বলছেন ‘রেপ্লিকা অফ বেল’স বায়োলজিক্যাল মেমোরি’ নামে। তিনি বলেন, ‘এই পদ্ধতিতে স্মৃতি ধরে রাখা খুবই নিরাপদ, কারণ মাথায় থাকা স্মৃতি অনেক সময় নানা কারণে ভুলে বসতে পারেন। কিন’ এই ‘ই-মেমোরি’র মতো স্মৃতিধারণযোগ্য চিপ বিশ্বস্ত সঙ্গীর মতোই সব তথ্য ধারণ করে রাখে এবং কখনও ভুলে যায় না।
তিনি বলেন, এটা আপনার জীবনের মাল্টিমিডিয়া ট্রান্সস্ক্রিপ্টের মতো হয়ে থাকবে।’ তিনি আরো যোগ করেন, ‘২০২০ সালের মধ্যে আমাদের সারা জীবনের ঘটনাগুলো অনলাইনে থাকবে এবং তা হবে সার্চেবল। শুধু তাই নয়, স্মার্ট ফোন এবং স্বল্প মূল্যের ডিজিটাল মেমোরি কার্ডের কল্যাণে একজন মানুষের সারা জীবনের তথ্যই ইন্টারনেটে থাকবে।’
সিএনএন জানিয়েছে, তার মতে, আর কোনও মানুষকে তথ্য ধারণ করার জন্য মস্তিস্কে চাপ প্রয়োগ করতে হবে না। এর ফলে মাথা থাকবে সম্পূর্ণ ঝামেলামুক্ত। আর এই উল্লেখযোগ্য বিবর্তনের ফলে মানুষের জীবন হবে সম্পূর্ণ অন্যরকম।
উল্লেখ্য জিম গেমিলে’র ফেলো রিসার্চার বেল ‘টোটাল রিকল’ নামে একটি বই লিখেছেন যেখানে তিনি ডিজিটাল স্মৃতিধারণ বিষয়ে বিশদ আলোচনা করেছেন।
হাতের নাগালে এলো স্মৃতি তৈরির জ্ঞান!
মস্তিষ্ক থেকে যেভাবে স্মৃতি তৈরি হয় তার অন্তত একটি প্রক্রিয়া তারা জানতে পেরেছেন বলেই সম্প্রতি মার্কিন বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন। খবর বিবিসি অনলাইনের।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, আগে মনে করা হতো, যেখানে মস্তিষ্কের কোষগুলো একটির সাথে আরেকটি যুক্ত সেখানে তথ্য আনা নেয়া আর সংরক্ষণের কাজ করে সিনাপস। কিন্তু জানা গেছে, গবেষকরা এখন বলছেন, অণুগুলো কিভাবে সিনাপসে ঢুকে স্মৃতির সাথে জোট বাঁধে সেটা তারা ধরতে পেরেছেন। এই গবেষণার ফল আলঝেইমার রোগীদের জন্য ওষুধ তৈরিতে সাহায্য করবে বলে অনুমান করছেন গবেষকরা।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, স্মৃতি গঠনে শক্তিশালী সিনাপসের প্রয়োজন হয়। আর এই প্রক্রিয়ায় নতুন প্রোটিন তৈরির বিষয়টি জড়িত। কিন্তু কীভাবে শরীর এই প্রক্রিয়াটি নিয়ন্ত্রণ করে সেটি এখনও জানতে পারেনি বলেই জানিয়েছেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা।
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া সান্তা বারবারার গবেষকরা ইঁদুর নিয়ে তাদের গবেষণায় দেখিয়েছেন, স্মৃতি তৈরিতে যে প্রোটিন উৎপাদন প্রয়োজন তা শুধু আরএনএ (বা রাইবো নিউকিয়িক অ্যাসিড)-এর মাধ্যমে ঘটে। যখন একত্রিত সব অণুগুলো জেনেটিক বার্তা নিয়ে অন্যান্য কোষে পৌঁছে দেয় তখন প্রোটিন উৎপাদন শুরু হয়।
জানা গেছে, যতক্ষণ এই বিষয়টি না ঘটে প্রোটিনযুক্ত আরএনএ কেবলমাত্র নীরব অণুর ভূমিকাই পালন করে এবং অকার্যকর থাকে। কোনো মজাদার ঘটনা বা অভিজ্ঞতার কোনো সংকেত যখন বাইরে থেকে যায় তখন এই নীরব অণু সচল হয়ে আরএনএ-কে মুক্ত করে।
সংবাদমাধ্যমটির বরাতে জানা গেছে, মার্কিন বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, এখন ধাঁধাঁর সমাধান হয়েছে। দেখানো গেছে কিভাবে প্রোটিন পতন আর সংশ্লেষ সঙ্গে সঙ্গে ঘটে। প্রোটিন চিহ্নিত করতে মস্তিস্কের প্রয়োজন পড়ে স্মৃতি জোড়া লাগানোর। এই বিষয়টিই রোগীদেরকে সাহায্য করতে পারবে বলে মনে করছেন তারা।
লোভ সামলাতে পারে তরুণ মস্তিষ্ক
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা জানিয়েছেন, তরুণ-তরুণীরা সহজেই লোভ সংবরণ করতে পারে। তাদের মস্তিষ্কের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে তারা বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ সহজেই নিয়ন্ত্রণ করতে শেখে। খবর টেলিগ্রাফ অনলাইন-এর।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, তরুণ-তরুণীদের মস্তিষ্কে এমআরআই স্ক্যান করে এই ফল পেয়েছেন ইউনিভার্সিটি অফ অরিগন এর গবেষকরা।
গবেষকরা জানিয়েছেন, দেখা গেছে, মস্তিষ্কের কর্টেক্স অঞ্চলের সামনের দিক থেকেই নির্ধারিত হয় ঝুঁকি গ্রহণ করার বিষয়টি। আর এই তরুণ বয়সেই মস্তিষ্কের কারণেই কোনো বিষয়ের চাপটি তাদের বোধগম্য হয়ে যায়। তাদের মধ্যে তৈরি হওয়া সন্দেহপ্রবণতা তাদের লোভ সংবরণে উদ্বুদ্ধ করে।
গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে নিউরন সাময়িকীতে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, এই গবেষণার ফল তরুণ-তরুণীর অভিভাবকদের মধ্যে দুশ্চিন্তা দূর করতে পারবে।
মস্তিষ্কের সঙ্গে আধ্যাত্মিকতার যোগ
আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় আচরণের সঙ্গে মস্তিষ্কের কোনো নির্দিষ্ট অংশের সম্পর্ক আছে বলেই মনে করছেন গবেষকরা। ইতালির গবেষকরা দেখেছেন, মস্তিষ্কের কোনো অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে মানুষের আধ্যাত্মিকতা বেড়ে যায়। গবেষণার এ বিষয়টি সম্প্রতি জানিয়েছে ‘নিউরন’ সাময়িকী।
সংবাদমাধ্যমটির বরাতে জানা গেছে, মস্তিষ্কের ক্ষতি হয়েছে এমন লোক নিজেকে সেরা মানুষ ভাবতে শুরু করে। আর এটিই তার কাছে আসে অস্পষ্ট আধ্যাত্মিক অনূভূতির আকারে। এমনকি তার আচরণ ও চিন্তার মধ্যেও এই ধরনের অনুভূতি কাজ করে।
গবেষকদের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, নিজেকে সর্বশ্রেষ্ঠ মনে করা ব্যক্তি নিজের অনূভূতির ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে, আর এর ফলে নিজেকে এই পৃথিবীর একজন বলেও তার আর মনে হয় না।
ইউনিভার্সিটি অব ইউডিন এর গবেষক ড. কসিমো আরগেসি জানিয়েছেন, মস্তিষ্কের সার্জারি করে টিউমার অপসারণের পর অনেক রোগীরই এই রোগের উপসর্গ দেখা গেছে।
নিয়মিত পরীক্ষায় স্মৃতিশক্তি বাড়ে
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা জানিয়েছেন, নিয়মিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বেড়ে যায়। নিয়মিত পরীক্ষা দেবার ফলে শেখার ক্ষমতা বাড়ার পাশাপাশি বেড়ে যায় স্মৃতিশক্তিও। খবর টেলিগ্রাফ অনলাইনের।
সংবাদমাধ্যমটির বরাতে জানা গেছে, পরীক্ষার উপযোগিতা বিষয়ে গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ মস্তিষ্কের জন্য সুফল বয়ে আনে এবং মস্তিষ্কের দক্ষতা বাড়ায়।
গবেষকরা জানিয়েছেন, পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিলে স্মৃতিশক্তি বেড়ে গিয়ে মস্তিষ্কের দক্ষতা বেড়ে যায় যা পুরোনো স্মৃতি স্মরণ করতে এবং নতুনভাবে সংরক্ষণ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
গবেষকরা আরো জানিয়েছেন, নিয়মিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ফলে মানসিক শক্তি বা ‘মেডিয়েটরস’ বেড়ে যায় । এই মেডিয়েটরস বা মানসিক শক্তি কেবল পড়াশোনার মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব নয়। আর তাই নিয়মিত পরীক্ষা দিলে স্মৃতিশক্তি দীর্ঘ সময়ের জন্য মস্তিষ্কে গাঁথা হয়ে যায়।
কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির মনোবিদ ড. ক্যাথরিন রওসন জানিয়েছেন, পরীক্ষার অনুশীলনের ফলে স্মৃতি হাতড়ে কোনো কিছু খুঁজে বের করার মানসিকতা তৈরি হয় যা পরবর্তীতে আবারো মনে করা সম্ভব হয়।
গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে ‘সায়েন্স’ সাময়িকীতে
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, গবেষণার এই ফল মস্তিষ্কের রোগ চিকিৎসায় কাজে লাগতে পারে।
স্মৃতি বুঝতে মস্তিষ্কে স্ক্যান
গবেষকরা জানিয়েছেন, স্মৃতি রোমন্থনরত অবস্থায় মস্তিষ্ক স্ক্যান করে বলে দেয়া যাবে কি ছিল সেই স্মৃতি। আর এই গবেষণা কাজে লাগবে স্মৃতিভ্রম রোগীদের চিকিৎসায়। খবর বিবিসি অনলাইনের।
সংবাদমাধ্যমটির বরাতে জানা গেছে, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের গবেষকরা স্মৃতি রোমন্থনকারীর মস্তিষ্ক স্ক্যান করে বের করতে পেরেছেন তার ভাবনার বিষয়টি কি ছিলো।
গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে ‘কারেন্ট বায়োলজি’ সাময়িকীতে।
গবেষকদের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, স্মৃতি রোমন্থন প্রক্রিয়াটি অনেক জটিল। এই গবেষকদলটির আগের করা গবেষণার বিষয় ছিলো মস্তিষ্কের স্ক্যান করে সাধারণ চিন্তা প্রক্রিয়া, রঙ, বস্তু বা স্থানের পার্থক্য বের করা সম্ভব। আর বর্তমান গবেষণাটি আগের গবেষণার ফলাফলকে ভিত্তি করেই শুরু হয়েছে।
গবেষকদের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, মস্তিষ্কের স্ক্যানের ফলে একজন ব্যক্তি কোন ভার্চুয়াল বাস্তবতার জগতে অবস্থান করছে তাও বলা সম্ভব।
হরেক রকম স্বপ্নে স্মৃতিশক্তি বাড়ে
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা জানিয়েছেন, নানান রকমের স্বপ্ন আমাদের স্মরণশক্তি বাড়ায় এবং সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। স্বপ্নমাখা একটি ঘুমই জেগে ওঠার পর হারানো তথ্য মনে করিয়ে দেয় এবং স্মৃতিশক্তি বাড়ায়। খবর টেলিগ্রাফ অনলাইনের।
অল্প ঘুমে বিভিন্ন রকম স্বপ্ন দেখার অবকাশ থাকে না বলেই এই রকম ঘুমে স্মৃতিশক্তিও বাড়ে না। মানুষ যখন গভীর ঘুমে থাকে তখনই মানুষ স্বপ্ন দেখে আর এ পর্যায়ে গুমের মধ্যেই চোখের পাতা নড়ে ওঠে। একে বলা হয় র্যাপিড আই মুভমেন্ট বা আরইএম।
গবেষকরা জানিয়েছেন, এক রাতে গড়ে ৪ থেকে ৫ বার আরইএম-এর ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু শেষ রাতের দিকে এটি বেশ দীর্ঘ হতে পারে। এর ফলে যারা রাতে সাত-আট ঘন্টার কম ঘুমান তাদের আরইএম কম ঘটে। ফলে তাদের স্মৃতি ধরে রাখার মতো মানসিক শক্তিও কমে যায় বলেই গবেষকদের ধারণা।
গবেষকরা জানিয়েছেন, আরইএম দীর্ঘ ঘুমের সঙ্গে সম্পর্কহীন। কেবল মস্তিষ্ক যখন গভীর ঘুমের স্তরটি পার করতে পারে তখনই আরইএম স্লিপের পর্যায়টি ঘটে।
ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষক ড. সারা মেডনিক জানিয়েছেন, মস্তিষ্কে অসংলগ্ন হয়ে জমে থাকা স্মৃতি আরইএম-এর মাধ্যমে একত্রিত হয়। আর এ থেকে বিভিন্ন সমস্যা উত্তরণের পথও মেলে। কারণ আরইএম পর্যায়ে বিভিন্ন নিউরোলজিক্যাল পরিবর্তন ঘটে।
তিনি আরো জানিয়েছেন, প্রতিদিন যে তথ্যগুলো অসলগ্নভাবে আমাদের মস্তিষ্কে জমা হয় সেগুলো একত্রিত করে স্মৃতি গঠন করতে আরইএম স্লিপের প্রয়োজন পড়ে। আর এ পর্যায়ে গঠিত স্মৃতিই পরবর্তী সময়ে আমরা ব্যবহার করি।
অতিরিক্ত জেট ল্যাগে মস্তিষ্ক বিকৃতি!
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা জানিয়েছেন, যারা নিয়মিত প্লেনে ভ্রমণ করেন বা প্লেনে বিভিন্ন শিফটে কাজ করেন তারা জেট ল্যাগ সমস্যার কারণে মস্তিষ্কের সমস্যায় পড়তে পারেন। খবর গিজম্যাগের।
ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকরা জানিয়েছেন, শরীরের ২৪ ঘন্টার জৈব রাসায়নিক চক্র সারকেডিয়ান রিদমসে ব্যাঘাত ঘটলে স্মৃতিশক্তিতে এবং কোনো কিছুর শেখার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। জেট ল্যাগের ক্ষেত্রেও এই সমস্যা তৈরি হয়। জেট ল্যাগের কারণে মস্তিষ্কে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়ে যা স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দেয়।
গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে ‘প্লস ওয়ান’ সাময়িকীতে।
গবেষকরা আরো জানিয়েছেন, জেট ল্যাগের কারণে স্মৃতিশক্তি তৈরিতে মস্তিষ্কের সমস্যা হয়। এমনকি নতুন বিষয় শেখার ক্ষেত্রেও মস্তিষ্কের কগনিটিভ অংশে অসঙ্গতি দেখা দেয় যা দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা তৈরি করতে পারে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, আমাদের ২৪ ঘন্টার সারকেডিয়ান রিদম নামের দেহঘড়ি প্রতিদিন অল্প পরিমাণে নতুন করে শুরু হয়। যখন কম সময়েই বিভিন্ন টাইম জোন এর মধ্যে ভ্রমণ করা হয় তখন দেহঘড়ি ঠিকমতো মানিয়ে নিতে পারে না। ফলে জেট ল্যাগের সৃষ্টি হতে পারে। জেট ল্যাগের ফলে মস্তিষ্কের অসামঞ্জস্যের পাশাপাশি গ্যাস্ট্রোইনটেনশনাল সমস্যা, ডায়াবেটিক সমস্যা বৃদ্ধি, হার্টের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, ক্যান্সার এমনকি সন্তান জন্মদান ক্ষমতাও কমে যেতে পারে।
গবেষকরা জেট ল্যাগ সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য ১ দিনের সম্পূর্ণ বিশ্রাম নেবার পরামর্শ দিয়েছেন। আর যারা রাতের শিফটে কাজ করেন এবং স্বাভাবিক দিনরাতের সিডিউল মেনে চলতে পারেন না তারা আলো বা শব্দ প্রবেশ করতে না পারে এমন ঘরে ঘুমিয়ে জেট ল্যাগ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
Filed under: তথ্য | Tagged: অতিরিক্ত জেট ল্যাগে মস্তিষ্ক বিকৃতি, পাল্টে যাচ্ছে মানুষের স্মৃতির ভবিষ্যৎ, মস্তিষ্কের সঙ্গে আধ্যাত্মিকতার যোগ, লোভ সামলাতে পারে তরুণ মস্তিষ্ক, স্মৃতি বুঝতে মস্তিষ্কে স্ক্যান, হাতের নাগালে এলো স্মৃতি তৈরির জ্ঞান | Leave a comment »